![বেড়েছে আলু ও পেঁয়াজের দাম, মরিচের দামও বাড়তি : দিশেহারা ক্রেতা বেড়েছে আলু ও পেঁয়াজের দাম, মরিচের দামও বাড়তি : দিশেহারা ক্রেতা](https://www.narayanganjtimes.com/media/imgAll/2021May/bazar-2407052235.jpg)
নারায়ণগঞ্জের বাজারগুলোতে মৌসুম শেষ ও সরবরাহের ঘাটতিসহ নানা অজুহাতে নিত্যপণ্যের দাম বেড়েই চলেছে। মসলা কিংবা সবজি সবকিছুরই দাম ঊর্ধ্বমুখী।
পেঁয়াজ ও আলুর দাম বেড়েছে ৫ থেকে ১০ টাকা। মরিচের দামও বাড়তি রয়েছে। এতে বাজারে আসা ক্রেতারা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। আবার অনেকে দাম বেড়ে যাওয়ায় অনেক ক্রেতাদের মধ্যে ক্ষোভও দেখা গেছে।
শুক্রবার (৫ জুলাই) নারায়ণগঞ্জ শহরের প্রধান পাইকারি বাজার কাঁচাবাজার দিগুবাবুর বাজারসহ বিভিন্ন বাজারে ঘুরে এমন দৃশ্য দেখা গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, সপ্তাহ ব্যবধানে ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে বেশ কয়েকটি সবজির দাম। প্রতি কেজি গাজর গত সপ্তাহে বিক্রি হলেও ৮০ টাকায় বিক্রি হলেও চলতি সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়, টমেটো ১৪০ টাকায় যা এখন ২০০ টাকা, পটোল বিক্রি হয়েছে ৫০ টাকায় যা এখন ৮০ টাকায়। এছাড়া প্রতি পিস লাউয়ের জন্য গুনতে হচ্ছে ৬০ এখন ৮০ টাকা।
সাবিনা আক্তার নামে চল্লিশোর্ধ্ব এক নারী পুরো বাজার ঘুরেও পছন্দসই দামে লাউ না কিনতে পেরে এক দোকানির সাথে কথাকাটাকাটি শুরু করে দিয়েছেন। এক পর্যায়ে দোকানি তাকে এই বাজারে আসতে নিষেধ করেন।
ক্ষোভ প্রকাশ করে সাবিনা আক্তার বলেন, লাউয়ের দাম চাইছে ৮০ টাকা। এত দাম থাকে লাউয়ের। বাজারে কোনো কিছুরই দাম ঠিক নাই। বাজারে শসা বিক্রি হচ্ছে ১৫০টাকায়। গত সপ্তাহে শসার দাম ৪০ থেকে ৫০ টাকা বাড়িয়ে বিক্রি হয়েছে। এই সপ্তাহেও কমেনি।
এদিকে ব্যবসায়ীদের মতে, এখন মৌসুম না থাকায় কয়েক পণ্যের দাম বেড়েছে । ফলে সরবরাহেও ঘাটতি রয়েছে।
বিক্রেতা মো.বাদল বলেন, বর্তমানে টমেটো, শসা, গাজর এমন কয়েকটার সিজন নাই। তাই আমদানি কম। এজন্য মালের (পণ্য) দাম বাড়ছে।
বাজারে আলুর দামও বেড়েছে । প্রতি কেজি আলু গত সপ্তাহে ৬০ টাকা বিক্রি হলেও চলতি সপ্তাহে ৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকায়। চিচিঙ্গা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ৭০ টাকায় যা এখন ৮০ টাকায়, করলা ১০০ টাকায় গত সপ্তাহে বিক্রি হলেও বেড়ে এখন ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে , ঢ্যাঁড়স গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ৫০ টাকায় এখন ৬০ টাকায়। এছাড়াও মানভেদে প্রতি কেজি বেগুন, কাঁকরোল ও বরবটি ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে চলতি সপ্তাহেও।
বিক্রেতা মো.হৃদয় বলেন, আমাদেরও প্রশ্ন দাম কেন বাড়ে? আমরাও বেশি দামে কিনি। তাই বেশি দামে বিক্রি করতে হয়। আমাদের তো কিছুটা লাভ দরকার।
এদিকে, কাঁচা মরিচের দাম এখনও বাড়তির দিকে। গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ২০০ টাকায়। এখন কিছুটা বেড়ে ২৪০ থেকে ২৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ৯০ থেকে ১০০ টাকায় এখন ৯৫ থেকে ১১০ টাকায়।
দেশি রসুনের দামও অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। গত সপ্তাহে দেশি রসুনের দাম ছিল ২২০ টাকায় এখন ২৮০ টাকায়। তবে দেশি আদার দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এই সপ্তাহেও বিক্রি হচ্ছে ৩২০ টাকায়।
দিগুবাবুর বাজারের পেঁয়াজে ব্যবসায়ী কায়সার আহমেদ বলেন, পেঁয়াজের দাম একরকম থাকে না। হয় বাড়ে না হয় কমে। কম-বেশি কেন হয় জানি না। পাইকাররা যেমন দাম রাখে আমরাও তেমন বিক্রি করি।
বাজারে দাম এত বেশির কারণ খুঁজে না পেয়ে শিমু আক্তার বলেন, আগে ৫০০ টাকায় বাজার হইতো। এখন বাজার করতে লাগে ১ হাজার টাকা। সবগুলার ২০০/৩০০ টাকা বেশি রাখে। এত দাম কেরে কন তো। বাসা বাড়িতে খাইট্টা কেমনে খামু। মাছ ২৫০ টাকা কেজি। শাকের আঁটি ৪০ টাকা কইরা কিনছি। বাজারে তো গরিবের মরণ। কোনও কিছু উঠাইবার পারি না কম টাকায়।
একদিকে মুরগি দাম কিছুটা কমেছে। গত সপ্তাহে সরবরাহের ঘাটতি দেখিয়ে কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়েছিল। কিন্তু চলতি সপ্তাহে চাহিদা কিছুটা কমেছে। কোরবানির মাংসের কারণে মুরগি দাম কিছুটা কমে থাকতে পারে বলে ধারণা বিক্রেতাদের।
গত সপ্তাহে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম ছিল ২০০ টাকা যা এখন ১৮০ টাকা, দেশি মুরগি ৭২০ টাকা যা এখন ৬৬০ টাকা এবং প্রতি কেজি সোনালি বা কক মুরগি বিক্রি হয়েছে ৩৪০ টাকায় যা এখন ৩২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে ।
এদিকে গরুর মাংস চলতি সপ্তাহেও প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ থেকে ৮০০টাকায়।
দিগুবাবুর বাজারের মুরগি বিক্রেতা আফসার হোসেন বলেন, মুরগীর বেচা বিক্রি একটু কম। মানুষ এখন কোরবানি মাংস খাইতাছে। বাজারেও আসে কম। কেনে কম।