নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির বহিস্কৃত নেতা আতাউর রহমান মুকুলের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়নি। বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য (দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত) তারিক আনাম তানজিল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আর এতে করে গত কয়েকদিন যাবত নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন গণমাধ্যমে মুকুলের করা মিথ্যাচার ফাঁস হয়ে গেছে। নিজেকে রাজনৈতিক আলোচনায় রাখতে এটা মুকুলের একটা কৌশল বলে মনে করছেন রাজনীতিবিদরা।
তৃণমূলের খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ বিএনপির সবচেয়ে বিতর্কিত নেতা হচ্ছেন মহানগর বিএনপির সাবেক সহ সভাপতি ও বন্দর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মুকুল। বিএনপির এমন গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকেও তিনি বিগত ১৫ বছর স্বৈরাচারী সরকারের গডফাদার শামীম ওসমান এবং সেলিম ওসমানের তাবেদারি করেছেন।
২০১৮ সালের নির্বাচনে ধানের শীষের পুলিং এজেন্টদের মেরে কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়েছেন। ধানের শীষের নির্বাচনী সমাবেশে যোগ দিতে আসা বিএনপির মহাসচিব মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে এবং সন্ত্রাসী দিয়ে হামলা চালিয়ে বাঁধার সৃষ্টি করেছেন। যে মঞ্চে দাঁড়িয়ে আওয়ামী লীগ নেতারা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে কুকুর বলে গালি দিয়েছিলো সে মঞ্চে বসে মুচকি হেসেছিলেন আতাউর রহমান মুকুল।
বিগত সরকারের ১৫ বছরে বিএনপির নেতা কর্মীরা মামলা হামলায় নির্যাতিত হলেও আতাউর রহমান মুকুল সরকারি দলের সঙ্গী হয়ে কোটি কোটি টাকা কামিয়েছেন। দলীয় নির্দেশনা অমান্য করায় তাকে আজীবনের জন্য দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বন্দর বিএনপির মাঠপর্যায়ের নেতৃবৃন্দের সাথে কথা বললে তারা জানায়, আমরা স্বৈরাচারের দোসরদের আমাদের দলে স্থান দেবো না। ইতিপূর্বে আমরা চিহ্নিত করেছি কারা গত ১৫ বছর আওয়ামী লীগ আর জাতীয় পার্টির লেজুড়বৃত্তি করে এই বন্দরের বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে।
কারা বিভিন্ন নির্বাচনে আওয়ামীলীগ আর জাতীয় পার্টির এমপির পক্ষে কাজ করেছে আর আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হয়েছে। আজ তারাই ভোল পাল্টে বিএনপির সামনের সাড়িতে আসতে চায়।
আমাদের নেতা তারেক রহমান আমাদেরকে বলেছেন, স্কুলে ছাত্ররা পরীক্ষার খাতায় যেমন লিখবে তেমনি তার রেজাল্ট আসবে, একইভাবে আগামী দিনে বিএনপির রাজনীতি কিভাবে চলবে তার পরীক্ষা হয়ে গেছে। গত ৫ আগস্টের পূর্বে যারা রাজপথে ছিলো, মামলা হামলা খেয়েছে, বুকের রক্ত বিলিয়ে দিয়েছে তবুও স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে গেছে, তারাই বিএনপির নেতৃত্ব দেবে।
তারাই আগামী দিনে এমপি নির্বাচন করবে, মেয়র নির্বাচন করবে, উপজেলা নির্বাচন করবে, ইউনিয়ন পরিষদে যাবে। তারাই জনগণকে সাথে নিয়ে বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় কাজ করবে।
যারা গত ১৫ বছর আওয়ামী লীগ আর জাতীয় পার্টির দালালি করেছেন আর এখন স্বপ্ন দেখছেন, তাদের স্বপ্ন দুঃস্বপ্নে পরিণত হবে। নারায়ণগঞ্জ বিএনপি'র ত্যাগী নেতাকর্মীরা তা কোনদিনই হতে দেবে না।
ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে দীর্ঘ ১৫ বছর লড়াই সংগ্রাম চালিয়ে গেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে দেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে এই খুনি হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে জনমত গঠন করেন এবং তার দিকনির্দেশনায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারের পতন হয়েছে। হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে, তার সন্ত্রাসী বাহিনী পালিয়েছে, গডফাদাররা পালিয়েছে কিন্তু কি তাদের কিছু দালাল রয়ে গেছে।
গত ১৫ বছর এই বন্দরের মাটিতে আওয়ামী লীগ আর জাতীয় পার্টির দালালি করে কিছু কুলাঙ্গার বিএনপিকে কলঙ্কিত করেছে। যারা বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে এই বন্দর আত্মীয়-স্বজনদের প্রতিষ্ঠিত করেছেন আর আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির দালালি করে টাকা কামিয়েছেন তাই তাদের নামে কোন মামলা হামলাও ছিল না, তাদেরকে জেলও খাটতে হয়নি।
তারা আরাম আয়েশে ঘুরে বেরিয়েছেন। আর আমরা বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করেছি। তাই আমরা কোন দালালকে মেনে নেব না কোন দালালদের আধিপত্য বিস্তার করতে দেবো না।