নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

মঙ্গলবার,

২৮ জানুয়ারি ২০২৫

নারায়ণগঞ্জে জনসম্পৃক্ত কর্মসূচীতে অধ্যাপক মামুন মাহমুদ

নারায়ণগঞ্জ টাইমস:

প্রকাশিত:১৬:৫৪, ১৬ নভেম্বর ২০২৪

নারায়ণগঞ্জে জনসম্পৃক্ত কর্মসূচীতে অধ্যাপক মামুন মাহমুদ

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় জনসম্পৃক্ত কর্মসূচী নিয়ে কাজ করছেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির সাবেক সাধারন সম্পাদক অধ্যাপক মামুন মাহমুদের নেতৃত্বে বিএনপির নেতা-কর্মীরা। ছাত্র-জনতার জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে ৫ আগষ্ট দেশ থেকে ফ্যাসিবাদ উৎখাতের পর বিএনপির নেতা-কর্মীরা যেন বিতর্কিত কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়তে না পারেন সেজন্য নেতা-কর্মীদের সম্পৃক্ত করে তিনি নানা কর্মসূচী নিয়ে কাজ করছেন। অভ্যুত্থানের পরপরই মামুন মাহমুদ নেতা-কর্মীদের জনশৃঙ্খলা রক্ষার কাজে লাগান। মব জাস্টিজের মত ঘটনা এড়াতে নেতা-কর্মীদের স্ব-স্ব এলাকায় সতর্ক রাখেন। পরবর্তীতে জুলাই বিপ্লবে নিহত এবং আহতদের পরিবারের পাশে তাঁর সীমিত সাধ্যঅনুযায়ী দাঁড়ান। 


দুর্গপূজা উপলক্ষে হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতাদের সাথে সাক্ষাত করে পুজায় নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য নেতা-কর্মীদের সেখানে নিয়োজিত করেন। পূজা উপলক্ষে তাদের মাঝে আর্থিক সহায়তা ও উপহার দেন। এরপর ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতা সৃষ্টি, মশার ঔষধ ছিটানো, দরিদ্র পরিবারের মধ্যে মশারী বিতরণ, বৃক্ষরোপন ও পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। বিভিন্ন সভা-সমাবেশ কর্মসূচী পালনের মধ্যদিয়ে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মুক্তিযুদ্ধে অবদান, স্বনির্ভর বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন এবং বহুদলীয় গণতন্ত্রে উত্তরণের ঘটনাবলী সম্পর্কে মানুষের মাঝে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। 


স্বৈরাচার এরশাদ ও মাফিয়া শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদের কবল থেকে দেশকে মুক্ত করে গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় ফিরিয়ে আনার জন্য বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার অসীম ত্যাগ এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন ও পরিকল্পনাগুলো তুলে ধরছেন। এতে দলের হাজারো নেতা-কর্মী সম্পৃক্ত হয়েছেন। এরফলে বিএনপির আগামী দিনের কল্যানমুখী কর্মকান্ড নিয়ে জনমনে ইতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। ২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনে অধ্যাপক মামুন মাহমুদ নারায়ণগঞ্জ-৪ (সিদ্ধিরগঞ্জ-ফতুল্লা) সংসদীয় আসনে দলের প্রাথমিক মনোনয়ন পেয়েছিলেন। 


সিদ্ধিরগঞ্জের ৩নং ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি আফজাল হোসেন বলেন, অধ্যাপক মামুন মাহমুদের নেতৃত্বে গত ২৬ অক্টোবর ৩নং ওয়ার্ড থেকে ডেঙ্গু প্রতিরোধে আমাদের মাসব্যাপী কর্মসূচী শুরু হয়। এরপর এই পর্যন্ত সিদ্ধিরগঞ্জের ৫টি ওয়ার্ডে এবং ফতুল্লার একটি ওয়ার্ডে মশার ঔষধ দেওয়া হয়েছে। জনগনকে সচেতন করার জন্য লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে। পাঁচ শতাধিক দরিদ্র পরিবারকে মশারী দেওয়া হয়েছে।


৬নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি অকিল উদ্দিন ভুঁইয়া বলেন, ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে শহীদ জিয়ার উপর আমরা একটি প্রামান্যচিত্র প্রদর্শন এবং আলোচনা সভা করি। এটি দেখতে হাজারো মানুষ সেদিন এসেছিল। বিশেষ করে তরুন প্রজন্ম প্রামান্য চিত্র দেখে জিয়াউর রহমান সম্পর্কে কিছুটা জানতে পেরেছে। কারন ফ্যাসিস্ট হাসিনা তার দু:শাসনের গত ১৫ বছরে জিয়াউর রহমানকে ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার চেষ্টা করেছে।


১নং ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি গাজী মনির হোসেন বলেন, ডেঙ্গুর বিস্তারটা এখন ব্যাপক। তাই ডেঙ্গু প্রতিরোধে আমরা বিএনপির নেতা-কর্মীরা দায়িত্ববোধ থেকে মামুন মাহমুদের নেতৃত্বে সাধ্য অনুযায়ী চেষ্টা করছি। পরিবেশ বাঁচাতে বৃক্ষরোপন করছি। সড়কের পাশে নালা পরিষ্কার করছি।

   
অধ্যাপক মামুন মাহমুদ বলেন, ৫ আগষ্ট ফ্যাসিস্ট শাসনের পর বিএনপির নামে কেউ যেন জনশৃঙ্খলার বিঘ্ন ঘটাতে না পারে সেজন্য দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে সাধ্য অনুযায়ী চেষ্টা করেছি। মহান মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের অবদান মুছে ফেলার অপচেষ্টা করেছে ফ্যাসিস্ট হাসিনা ও তার মাফিয়া সরকার। গত পনের বছর ধরে যেসব শিশু পড়াশুনায় যুক্ত হয়েছে তাদেরকে মুক্তিযুদ্ধে জিয়াউর রহমানের অবদানের ইতিহাস পড়তে দেওয়া হয়নি। তাদেরকে বাংলাদেশ সৃষ্টি এবং গড়ার জন্য শহীদ জিয়ার অবদান সম্পর্কে জানানোর জন্য সভা-সমাবেশ করে যাচ্ছি।


তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্ট সরকার আদালতকে ব্যবহার করে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কথা প্রচার বন্ধ রেখেছিল। মানুষের বাকস্বাধীনতা এবং সংবাদপত্রের কন্ঠরোধ করার জন্য ইতিহাসের সবচেয়ে জঘণ্যতম কালো আইন করেছিল ওই অবধৈ সরকার। তাই আগামীর বাংলাদেশ ও জনগণ নিয়ে তারেক রহমানের ভাবনা প্রচার করা যায়নি। ফ্যাসিবাদ বিরোধী লড়াইয়ে বিএনপির নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হয়ে গত ১৫ বছর যে লড়াই-সংগ্রাম চলেছে তার সফল পরিনতি এসেছে ছাত্র-জনতার নেতৃত্বে জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে। বিএনপি রাষ্ট্র সংস্কারে ৩১ দফা কর্মসূচী দিয়েছে। এসবের সার সংক্ষেপ হচ্ছে জনগণের কল্যান। একটি মানবিক নতুন বাংলাদেশ গড়ে তোলা। যেখানে মানুষের বাকস্বাধীনতা, নিরাপত্তা পাওয়ার অধিকার, কাজের অধিকার, চিকিৎসার অধিকার, শিক্ষার অধিকার, ভোটের অধিকার, খাদ্য নিরাপত্তা, কৃষক-শ্রমিকের অধিকার, মানবাধিকার এবং রাষ্ট্রের সমৃদ্ধির নিশ্চয়তা থাকবে। তারেক রহমানের এই ভাবনা জনগণের হৃদয়ে শক্ত গাঁথুনি দেওয়ার দায়িত্ব এখন আমাদের। এসবকিছুই আমাদের কাজের মাধ্যমেই প্রমান করতে হবে। এ লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্যই আমরা জনসম্পৃক্ত নানা কর্মসূচী হাতে নিয়েছি। 


মামুন মাহমুদ বলেন, ৫ আগষ্ট জনগণের প্রাথমিক বিজয় এসেছে। চুড়ান্ত বিজয়ের জন্য একটি অবাধ এবং সুষ্ঠ নির্বাচনের মাধ্যমে একটি নির্বাচিত গণতান্ত্রিক সরকার লাগবে। এটা না হওয়া পর্যন্ত আমাদের সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে। আমাদের লক্ষ্য হলো সমাজে যেন আর কোন খুনি, চাঁদাবাজ, লুটেরা, মাফিয়া, গডফাদারের সৃষ্টি না হতে পারে তারজন্য আমাদেরকে জনগণের পাশেই থাকতে হবে। সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা নেতা-কর্মীদের নিয়ে কাজ করছি। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে আগামীর বাংলাদেশ একটি সমৃদ্ধ, গণতান্ত্রিক নতুন বাংলাদেশ দেখার জন্য দেশের মানুষ উন্মুখ হয়ে আছে। কারন জনগণ জানে জাতীয়তাবাদী শক্তির নেতৃত্ব দেওয়া বিএনপির হাতে বাংলাদেশ নিরাপদ থাকে। দেশের মানুষের এই প্রত্যাশা পূরনেই আমরা কাজ করছি।

 
 

সম্পর্কিত বিষয়: