আজ বুধবার নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমানের শুভ জন্মদিন। ৬২ বসন্ত পেরিয়ে ৬৩’তে পা রাখলেন তিনি।
বাংলাদেশের আওয়ামী রাজনীতিতে ঐতিহ্যবাহী ‘ওসমান পরিবার’ এর সন্তান ভাষা সৈনিক, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, বাংলাদেশের প্রথম সংসদের সদস্য এ কে এম সামসুজ্জোহা ও ভাষা সৈনিক বেগম নাগিনা জোহা দম্পতির কোল আলো করে ১৯৬১ সালের এই দিনে জন্মগ্রহণ করেন শামীম ওসমান।
তিন ভাই ও দুই বোনের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ শামীম ওসমান। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি এক ছেলে ও এক মেয়ের জনক। একমাত্র ছেলে অয়ন ওসমান বাবা হওয়ার মধ্য দিয়ে দাদাও হয়েছেন শামীম ওসমান।
শামীম ওসমানের বড় ভাই নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের ৪ বার নির্বাচিত সাংসদ প্রয়াত একেএম নাসিম ওসমান। তার মেঝো ভাই একেএম সেলিম ওসমান নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের বর্তমান সাংসদ ও বিকেএমইএ এর সভাপতি।
শামীম ওসমানের সহধর্মিনী সালমা ওসমান লিপি জাতীয় মহিলা পরিষদের নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির চেয়ারম্যান।
বর্তমানে শামীম ওসমান তার পরিবার নিয়ে ঢাকার গুলশানে বসবাস করছেন। তবে নির্বাচনী হলফনামা অনুযায়ী তার স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানা হচ্ছে ৯৯নং নবাব সলিমুল্লাহ রোড এলাকায়। শামীম ওসমান তার হলফনামায় শিক্ষাগতা যোগ্যতা উল্লেখ করেছেন বিএ,এলএলবি।
শামীম ওসমান প্রচন্ড মা ভক্ত একজন মানুষ। প্রতিদিন কোন কাজে যাওয়ার আগে তিনি তার মা নাগিনা জ্জোহার পা ধরে ছালাম করে দোয়া নিয়ে বের হতেন। তার মায়ের মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত তিনি তার সেবায় নিয়োজিত ছিলেন। রাজনৈতিক ও জনপ্রতিনিধির বাইরে শামীম ওসমান একজন সফল প্রেমিক ও একজন সফল বাবা।
তার সহধর্মিনী সালমা ওসমান লিপিকে তিনি ভালবেসে বিয়ে করতে সক্ষম হন। তার ছেলে ও মেয়েকে তিনি শিক্ষিত করে তুলেছেন। তার পুত্র একেএম অয়ন ওসমান বর্তমানে আইন পেশায় নিয়োজিত। নারায়ণগঞ্জ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মাঝে একজন জনপ্রিয় মুখ।
এছাড়া ব্যবাসায়ী হিসেবেও শামীম ওসমান প্রতিষ্ঠিত। দেশে বিদেশে তার রয়েছে নানা ব্যবসা। জীবন সংগ্রাম ও রাজনৈতিক সংগ্রামে অক্লান্ত পরিশ্রম করে তিনি বর্তমানে একজন সফল পুরুষ।
রাজপথের লড়াকু এই ছাত্রনেতা সাংগঠনিক দক্ষতায় নারায়ণগঞ্জে আওয়ামীলীগের রাজনৈতিক অঙ্গনে নিজের শক্ত অবস্থা গড়ে তুলেছেন। একজন যোগ্য রাজনৈতিক অভিভাবক হিসেবে নেতাকর্মীদের দীর্ঘ কাল আগলে রেখেছেন।
আওয়ামীলীগের আন্দোলন সংগ্রামে নেতাকর্মীদের সু-সংগঠিত করে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করেছেন তিনি। ছাত্র রাজনীতি থেকে শুরু করে আজ অবধি তার নেতৃত্বের রয়েছে ব্যাপক সফলতা।
তাইতো নারায়নগঞ্জ আওয়ামীলীগে তার রয়েছে এক বিশাল কর্মী বাহিনী। মুজিববাদে বিশ্বাসী শামীম ওসমান বাংলাদেশে একজন দক্ষ সংগঠক হিসেবে পরিচিত। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আদর্শ বুকে ধারন করে দলকে সুসংগঠিত করতে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছেন এই নেতা।
শক্তিশালী সাংগঠনিক ভিত্তির করণে কয়েক ঘন্টার নোটিশে হাজার হাজার নেতাকর্মীর সমাগত ঘটাতে কোন বেগ পেতে হয়না তাকে। যাকে বলে ‘হ্যমিলিয়নের বাঁশিওয়ালা’।
৯৬ সালে প্রথমবার এমপি নির্বাচিত হয়ে নারায়ণগঞ্জের ডিজিটাল টেলিফোন, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড নির্মাণ, ফতুল্লায় খান সাহেব ওসমান আলী জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়াম, সিদ্ধিরগঞ্জে বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা ও গ্যাস সমস্যার সমাধান, বক্তাবলীতে বিদ্যুৎ সংযোগ, তোলারাম কলেজে অনার্স মাস্টার্স কোর্স চালু, রাস্তা-াঘাটের ব্যাপক উন্নয়ন, নতুন আদালত ভবন, জেলা কারাগার নির্মাণ, শামীম ওসমানের বড় কাজগুলোর অন্যতম। সে সময় ২৬০০ কোটি টাকার উন্নয়ন করেছেন নিজ সংসদীয় আসনে।
এছাড়া তৎকালীন এমপি থাকাকালীন তিনি নারায়ণগঞ্জের বহুদিনের কলংক টানবাজারের পতিতা পল্লী উচ্ছেদ করে আলোচিত হন।
দ্বিতীয় দফায় ২০১৪ সালে এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর উন্নয়নের মাত্রা দ্বিগুন ছাড়িয়ে যায়। টানা দুইবার এমপি নির্বাচিত হয়ে ব্যাপক উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন। শামীম ওসমানের নিজ ভাষ্য মতে, দ্বিতীয়বার এমপি হয়ে তিনি প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ণ কাজ করেছেন। যার মধ্যে ৫৫৮ কোটি টাকার (চলমান) ডিএনডি প্রকল্প অন্যতম।
সর্বশেষ ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিতব্য একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে টানা চতুর্থবারের মতো সংসদে প্রতিনিধিত্ব করছেন একেএম শামীম ওসমান।
এদিকে শামীম ওসমানের জন্মদিন উপলক্ষে তার নির্বাচনী এলাকা ছাড়াও নগরীর বিভিন্ন এলাকায় কেক কাটা, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। দোয়ার মাধ্যমে তার দীর্ঘায়ু কামনা করবেন দলীয় নেতাকর্মী, সমর্থক, শুভাকাংখিরা।