নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

বৃহস্পতিবার,

১৯ ডিসেম্বর ২০২৪

দফায় দফায় হামলা-লুটপাটে সোনারগাঁ রিসাইকেল ইন্ডাস্ট্রিজে ১৫ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি

নারায়ণগঞ্জ টাইমস:

প্রকাশিত:২১:৪৩, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪

দফায় দফায় হামলা-লুটপাটে সোনারগাঁ রিসাইকেল ইন্ডাস্ট্রিজে ১৫ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের টিপরদি কামারগাঁও এলাকায় সোনারগাঁ রিসাইকেল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড ফ্যাক্টরি, বাসভবন এবং ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও টান্সপোর্ট অফিসে কয়েক দফায় হামলায় প্রায় ১৫ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। গত ৫ই আগস্ট থেকে শুরু হয়ে গত ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই লুটপাট চলে।

সোনারগাঁ রিসাইকেল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের মালিক সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হাজী শাহ মো. সোহাগ রনি। বিভিন্ন মামলায় তিনি বর্তমানে এলাকাছাড়া রয়েছেন।

বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বর্তমানে কারখানাটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে।   এর আগে এইসব ঘটনায় গত ২৬ অক্টোবর সোহাগ রনির বাবা শাহ জামাল তোতা (৭৩) বাদী হয়ে সোনারগাঁ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়।

অভিযোগসূত্রে তিনি উল্লেখ করেন, গত এক মাস হয় দফায় দফায় বিবাদী অজ্ঞাত ২০-২৫ জন ডাকাত মিলে রাতের আধারে আমাদের সোনারগাঁ রিসাইকেল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ফ্যাক্টরীতে থাকা সাবস্টেশনের তালা ভেঙ্গে প্রায় ৫ লাখ টাকার তামার তার ও ইলেক্ট্রিক প্যানেল বোর্ড নিয়ে যায়। পরবর্তীতে সাবষ্টেশনে থাকা অবশিষ্ট ইলেক্ট্রিক প্যানেল বোর্ড বিক্রয় করে দিলে মালামালসহ পিকাপ গাড়ি ছিনতাই করার চেষ্টা করে। 

এছাড়াও ফ্যাক্টরিতে থাকা মেশিন এর ৪০ ঘোড়া ১০টি মোটর আমাদের কামারগাঁ সাইট অফিসের গুদামে রাখা হলে ডাকাতদল লোডশেডিংয়ের সময় অফিসের সিসিটিভি ক্যামেরা ভেঙ্গে ফেলে এবং পর্যায়ক্রমে দুইরাতে সাইট অফিসের মেইন গেইট ও দুটি গোডাউনের তালা গ্রেনিং মেশিন দিয়ে কেটে প্রায় ৭ লাখ টাকার মোটর, মেশিন লুটপাট করে জনসম্মুখে দেশীয় অস্ত্র ঠেকিয়ে ডাকাতি করে নিয়ে যায়। 

এছাড়াও আমাদের কামারগাঁ বাসার বৈদ্যুতিক লাইন কেটে দেয়। মালামাল লুটপাটের ভিডিও ফুটেজও রয়েছে। বর্তমানেও এই ডাকাত বাহিনী থামে নাই। প্রতি রাতে তারা লুটপাট ও পায়তারা করার চেষ্টায় আছে।  

এদিকে এ নিয়ে গত ১৮ ডিসেম্বর মুঠোফোনে শাহ মুহাম্মদ সোহাগ রনি বলেন, গত ৫ই আগস্ট থেকে শুরু হয়ে ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বর্বরোচিত হামলা, অগ্নিসংযোগ-লুটপাট করে ১৫ কোটি টাকার ভয়াবহ ক্ষতি সাধন করেছে। হামলায় ভস্মিভূত করে নৈরাজ্যকারী বিএনপি-জামায়াত সন্ত্রাসীরা। এরপর তথাকথিত মিথ্যা মামলা দিয়ে বাড়ি ছাড়া করে আমাকে। এইসব হামলা, লুটপাটের বিচার না হলে দেশে শান্তি ফিরবে না। 

আমার ফ্যাক্টরিতে ১০০ জন শ্রমিক কাজ করতেন। এর মধ্যে ৯০ শতাংশ কর্মচারি ছিলেন সোনারগাঁ উপজেলার বাসিন্দা। তারা সবাই বর্তমানে বেকার হয়ে গেছেন। এই ফ্যাক্টরির আয় দিয়ে আমার তিন ছেলে মাদ্রাসায় পড়তো। পাশাপাশি তার বাবা কিডনী রোগের চিকিৎসা চলতো। 

এছাড়া কারখানার আয় এতিমখানা, মাদ্রাসা, মসজিদ ও ওয়াজ মাহফিল, খেলাধুলা, গবির মানুষের মেয়ের বিয়ে, সাধারণ মানুষের চিকিৎসায় ব্যয় হতো। সোনারগাঁয়ের আর কোন রাজনৈতিক নেতারা আজ পর্যন্ত সোনারগাঁয়ের সাধারণ মানুষের জন্য কোনো কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে নাই। কিন্তু আমার কারখানার বিএনপির সন্ত্রাসীরা ২০০-৩০০ জন লোকের মিছিল নিয়ে গিয়ে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেললো। 

আমার যদি কোনো অপরাধ থাকে তাহলে আইন আমার বিচার করবে। কিন্তু আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ঘর-বাড়ি, অফিস, ফ্যাক্টরি, লুটপাট-ভাংচুর চালিয়ে অগ্নিসংযোগ করবেন এইটা কোনো ইসলামিক বা রাজনৈতিক বিচার হতে পারে না। কারা এই লুটপাট করছে আল্লাহ তাআলার রহমতে এই বিচার দুনিয়া ও আখেরাতে হবে।

তিনি আরও বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন সময় আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার সঙ্গে আমিসহ আওয়ামী লীগের কোনো নেতাকর্মীদের ঝামেলা কিংবা মারামারি হয় নি। তাহলে কি কারণে ৫ই আগস্ট বিকেলের পর আমার এই কারখানায় লুটপাট করা হলো? 
 

সম্পর্কিত বিষয়: