সোনারগাঁয়ে একটি বেসরকারী ক্লিনিকের ভেতর জহিরুল ইসলাম (৩৭) নামের এক ফার্মেসী কমকর্তার রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে মোগরাপাড়া চৌরাস্তা এলাকায় সোনারগাঁ নতুন সেবা জেনারেল হাসপাতাল নামে একটি ক্লিনিকে এ ঘটনা ঘটে।
বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নিহতের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহতের পরিবারের দাবি, তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের স্বজনরা ক্লিনিকের সামনের বিক্ষোভ করেছেন। এ ঘটনায় ক্লিনিকে পরিচালকসহ ৫ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
নিহত জহিরুল ইসলাম নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের পিরোজপুর ইউনিয়নের কান্দারগাঁও এলাকার আবুল হোসেনের ছেলে। এঘটনায় নিহতের স্ত্রী তাহিরা শবনম জুবাইদা বাদি হয়ে সোনারগাঁ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
নিহতের ছোট ভাই মো. কামরুল ইসলামের দাবি, তার বড় ভাই জহিরুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে সোনারগাঁ নতুন সেবা জেনারেল হাসপাতালের ফার্মেসীর ইনচার্জ হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। প্রতিদিনের ন্যায় মঙ্গলবার রাত ১০ টার দিকে তিনি বাড়ি থেকে হাসপাতালে আসেন। পরবর্তীতে গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে হাসপাতাল থেকে মোবাইল ফোনে জানানো হয় তার ভাই মারা গেছেন।
(ভিডিও দেখতে এখানে ক্লিক করুন)
তিনি ও তার স্বজনরা হাসপাতালে এসে দেখেন জহিরুল ইসলামের লাশ শোবার ঘরে মেঝেতে পড়ে রয়েছে। তার হাত-পায়ে ইনজেকশন পুশ করার দাগসহ হালকা রক্তের ছাপ রয়েছে। তিনি হাসপাতালে আসার কিছুক্ষণ পরই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পালিয়ে যান। তার দাবি, তার ভাইকে হত্যা করে লাশ ফেলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পালিয়ে যায়।
রাতে ডিউটিতে ছিল সকলকে ডেকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে ক্লিনিকের পরিচালক মনিরুল ইসলাম ও ম্যানেজার মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও আক্তারুজ্জামান ও রাতের ডিউটি চিকিৎসক ডা. নাজমুল আলম হাসান ও ওয়ার্ডবয় মিন্টু মিয়াকে আটক করে।
সোনারগাঁ নতুন সেবা জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক মনিরুল ইসলাম বলেন, জহিরুল ইসলাম আমাদের ক্লিনিকের একজন কর্মকর্তা। তার মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে হাসপাতালে আসি। তার মৃত্যুর প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করা জরুরি। মৃত্যুর বিষয়ে আমার কিছুই জানা নেই।
সোনারগাঁ নতুন সেবা জেনারেল হাসপাতালের ম্যানেজার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, তিনিও রাতে ক্লিনিকে ডিউটিতে ছিলেন। এক সঙ্গে তারা টিভিতে খেলা দেখেছেন। রাত ১২ টার দিকে রোগীর চাপ কম থাকায় তিনি তার রুম এ ঘুমিয়ে পড়েছেন। সকাল ১০ টার দিকে তাকে ডেকে না পাওয়ায় ভেতরে গিয়ে দেখেন সে শুয়ে আছে। পরে পরীক্ষা করে জানা যায় সে মারা গেছে। পরবর্তীতে তার পরিবারকে জানানো হয়।
সোনারগাঁ থানার ওসি মাহাবুব আলম জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পুলিশ সুরতহাল রিপোর্ট করে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য লাশ নারায়ণগঞ্জ মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর এটি হত্যাকান্ড নাকি স্বাভাবিক মৃত্যু তা নিশ্চিত হওয়া যাবে।
তিনি আরো জানান, ক্লিনিকের সকল সিসি ক্যামেরার ফুটেজ জব্দ করা হয়েছে। পর্যালোচনা করে এ বিষয়ে স্পষ্ট হওয়া যাবে।