
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ২০ ড্রাম চোরাই সয়াবিন তেল জব্দ ও কৃষকদলের সাবেক ২ নেতাসহ ৪ জনকে আটক করে পুলিশের উপ-পরিদর্শক সানোয়ার। বুধবার (৯ এপ্রিল) দিবাগত রাত ১২ টার দিকে আটি ওয়াপদা কলোনি কাঁচপুর ল্যাণ্ডিং স্টেশন সংলগ্ন শীতলক্ষ্যা নদীর পাড় থেকে তাদের আটক করা হয়।
পরে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে রাত ৩ টার দিকে তাদের ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। পরে স্থানীয়দের তোপের মুখে ৭ ড্রাম জব্দ ও ১ জন লেবারকে আটক দেখান তিনি।
জানা গেছে, আটি ছাপাখানা এলাকার নূরা মিয়ার ছেলে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা কৃষকদলের সাবেক নেতা সেণ্টু মিয়া, তার ভাই বাদশা মিয়া, ইদা মিয়ার ছেলে থানা কৃষকদলের সাবেক সদস্য জাকির ও আটি ফকিরবাড়ী এলাকার দাইমুদ্দিন গাজীর ছেলে মামুন গাজী ট্রলার দিয়ে শীতলক্ষ্যা নদী দিয়ে ২০ ড্রাম চোরাই সয়াবিন তেল আনে ওয়াপদা কলোনি ল্যাণ্ডিং স্টেশন এলাকায়।
ট্রলার থেকে ড্রাম নামানোর সময় স্থানীয় বিএনপি নেতা হারুন দেখতে পেয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আব্দুল কাদির জি¦লানিকে জানান।
সাবেক ছাত্রদল নেতা জি¦লানি বলেন, বিষয়টি জানার পর আমি থানায় টিউটি অফিসারকে ফোন করি। তার কথা মত টহলরত থানার উপ-পরিদর্শক সানোয়ারকে ফোনে জানাই। পুলিশ আসার পর আমিও ছুটে এসে দেখি ৭ টি ড্রাম জব্দ করা হয়েছে। কাউকে আটক করা হয়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় একজন বাসিন্দা জানান, পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে তেলের ড্রাম জব্দ ও সেণ্টু, জাকির, বাদশা মিয়া ও মামুন গাজীকে আটক করে। পরে তাদের মধ্যে চলে দেনদরবার।
একপর্যায় আটক ৪ জনকে পুলিশ ছেড়ে দেয়। ছাড়া পাওয়ার পর তারা তেলের ড্রাম সরাতে থাকে। এসময় ছাত্রদলের কয়েকজন নেতা ও গণমাধ্যমকর্মীরা চলে আসেন। এতে ৭ টি ড্রাম সরাতে পারেনি।
ছাত্রদল নেতাকর্মীদের অভিযোগ, রাত ১২ টার দিকে তাদের আটক করে অর্থের বিনিময়ে ৩ টার দিকে তেলসহ চোরদের ছেড়ে দেয় পুলিশ। এসময় আমরা ঘটনাস্থল গিয়ে এসআই সানোয়ারকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, পরিত্যক্ত অবস্থায় ৭টি তেলের ড্রাম জব্দ করা হয়েছে।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত নারায়ণগঞ্জ তুলারাম কলেজ ছাত্রদলের সাবেক যুগ্নসম্পাদক সানি আলম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমি এসে চোরাই তেলের সঙ্গে জড়িত ৫-৬ জনকে দেখেছি। পুলিশের সামনে তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ড হয়েছে। তারা তেলের ড্রাম নিয়ে গেছে আর পুলিশ দর্শকের মত দেখছে।
আসল চোরদের ছেড়ে দিয়ে ১ জন লেবারকে আকট করা চরম বৈষম্য করা হয়েছে। অন্যরা ছাড়া পাবে ১ জন শাস্তি পাবে এটা হতে পারেনা।
আটককৃত মামুন গাজী বলেন, তেল কারা কোথায় থেকে এনেছে আমি জানিনা। আমাকে তেলের ড্রাম গুলো রিসিভ করার কথা বলা হয়েছিল। কে বলেছিল জানতে চাইলে তিনি জড়িতদের নাম না বলে শিমরাইল এলাকার দেলু নামে একজনের নাম বলেন।
কে এই দেলু জানতে চাইলে তিনি তাকে চিনেননা বলে জানান। সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক সানোয়ার অর্থ লেনদেনের অভিযোগ অস্বীকার করে প্রথমে কাউকে আটক করা হয়নি দাবি করেন। পরে ১ জনকে আকট করা কথা স্বীকার করে।
আটক ১ জন কোথায় জানতে চাইলে তিনি উত্তেজিত হয়ে বলেন, এভাবে আমাকে প্রশ্ন করতে পারেন না। পরে প্রায় আধা ঘন্টা পর মামুন গাজীকে আটক দেখিয়ে পুলিশের গাড়িতে উঠানো হয়।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ শাহিনূর আলম বলেন, ৭ ড্রাম তেলসহ ১ জনকে আটক করা হয়েছে। তার বেশি কিছু আমার জানা নেই। যদি অর্থ লেনদেনের মাধ্যমে কিছু আড়াল করা হয়ে তাকে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।