নারায়ণগঞ্জে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করেছে সিএনজি চালক ও মালিকরা। বিনা বাধায় চাঁদা ছাড়া মহাসড়কে সিএনজি চলাচলের দাবিতে রবিবার (২২ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১ টায় সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল মোড়, দুপূর ১২ টায় মৌচাক ও ১ টায় সোনারগাঁয়ের কাঁচপুর এলাকায় আন্দোলন করেন তারা।
এতে প্রায় ২ ঘন্টা মহাসড়কে যানচলাচল বন্ধ ছিল। ফলে কাঁচপুর থেকে সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল মোড় পর্যন্ত দীর্ঘ হয় যানজট।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকার আমলে যেভাবে চাঁদা দিয়ে মহাসড়কে সিএনজি চলাচল করতো সে অবস্থানে ফিরে আসতে চাঁদাবাজরা সিএনজি চালকদের চাপ দিচ্ছে বলে অভিযোগ চালকদের ।
আন্দোলনে অংশ নেওয়া সিএনজি চালকদের অভিযোগ, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে চাঁদাবাজি বন্ধ হয়ে যায়। কিছুদিন ধরে তৎপর হয়ে উঠেছে চাঁদাবাজরা। আগের মত চাঁদাবাজি করতে উঠেপড়ে লেগেছে তারা।
চাঁদা দিতে আপত্তি করায় কাইল্যা মিজান, শেখ ফরিদ, পান সোহেল, সিএনএন সাদ্দাম, খায়রুল, হাশমত, ড্রাম্পিং ইসমাঈল হুমকি দিচ্ছে চাঁদা ছাড়া মহাসড়কে সিএনজি চলাচল করতে দিবেনা। হাইওয়ে পুলিশকে দিয়ে সিএনজির বিরুদ্ধে মামলা করাবে।
ইতোমধ্যে তাদের হুমকির বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। মহাসড়কে সিএনজি উঠলেই হাইওয়ে পুলিশ মামলা দিচ্ছে। চাঁদাবাজদের ইন্দনে পুলিশ মামলা দিচ্ছে। তাই আন্দোলন করতে বাধ্য হয়েছি। চাঁদাবাজদের সঙ্গে পুলিশের আঁতাতের অবসান না হলে কঠোর অন্দোলনের হুশিয়ারী দেন চালক ও মালিকরা।
সিএনজি মালিক শেখ রিপন জানান, বিগত আওয়ামী লীগ সরকার আমলে মাসে দেড় হাজার টাকা চাঁদা দিয়ে মহাসড়কে সিএনজি চলতো। একেক চাঁদাজের অধিনে ২৫০ থেকে ৩০০ পর্যন্ত সিএনজি ছিল। ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে অন্তত দেড় হাজার সিএনজি চলতো মাসোহারা দিয়ে। স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা, ট্রাফিক ও হাইওয়ে পুলিশ এমনকি গণমাধ্যম কর্মীরাও পেতো চাঁদাবাজির ভাগ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে চলাচলরত সিএনজি থেকে মাসে কমপক্ষে ১৫ লক্ষাধিক টাকা চাঁদা আদায় হতো। তার অর্ধেক চলে যেত ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় নেতাদের পকেটে।
বাকী অংশ কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ওসি, শিমরাইল হাইওয়ে পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ, দায়িত্বরত সার্জেণ্ট, অর্ধশতাধিক গণমাধ্যমকর্মী ও চাঁদাবাজদের মধ্যে ভাগবণ্টন হতো। ৫ অগস্টের পর থেকে চাঁদা ছাড়া মহাসড়কে নির্বিগ্নে চলছে সিএনজি।
হাইওয়ে পুলিশকে ম্যানেজ করে আগের সিএনজি নিয়ন্ত্রণকারী আওয়ামী মোটর চালক লীগ নেতা মিঠুগং আবার পুরোনো নিয়মে চাঁদা নেওয়ার জন্য সিএনজি চালকদের চাপ দিচ্ছেন।
জানতে চাইলে অভিযুক্তরা বলেন, মহাসড়কে সিএনজির বিরুদ্ধে মামলা দিচ্ছে পুলিশ। এখানে আমাদের কি করার আছে। চাঁদা দাবির অভিযোগ সঠিক নয়।
হাইওয়ে পুলিশের শিমরাইল ক্যাম্পের ইনচার্জ আবু নাঈম সিদ্দিকী বলেন, আগে কি হত না হতো জানা নেই। আমি আসার পর থেকে চাঁদাবাজি বন্ধ। মহাসড়কে সিএনজি চলাচলে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তাই নিয়ম অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। চাঁদাবাজি চালু করার জন্য করো ইন্দনে মামলা দেওয়া হচ্ছে অভিযোগ সঠিক নয়।
কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ওসি কাজী ওয়াহিদ মোরশেদ বলেন, আন্দোলনরত শ্রমিকদের আশ্বাস দিয়েছি উর্ধ্বতন মহলের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহন না হওয়া পর্যন্ত সিএনজিকে আর মামলা দেওয়া হবে না। চাঁদাবাজি করার সুযোগ কাউকে দিবনা।