সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল মোড়ে ফুটপাত চাঁদাবাজ ওমর ফারুকের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করে বিপাকে পড়েছেন বেল্লাল জোমাদ্দার নামে একজন ফল ব্যবসায়ী।
অভিযোগ তদন্তকারী কর্মকর্তা সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক ইমরান খান চাঁদাবাজের পক্ষ নিয়ে ওই ব্যবসায়ীকে ৩ দিনের মধ্যে দোকান ছেড়ে দেবার নির্দেশ দিয়েছেন বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন অভিযোগকারী বেল্লাল জোমাদ্দার।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, শিমরাইল মোড় হাজী আহসান উল্লাহ সুপার মার্কেটের সামনে সরকারি জায়গায় দীর্ঘদিন ধরে ফুটপাতের দোকানে ফলের ব্যবসা করে আসছেন বেল্লাল জোমাদ্দার। এখানে ব্যবসা করতে হলে ওমর ফারুক দৈনিক ২৫০ টাকা চাঁদা দাবি করেন।
তাকে চাঁদা না দিলে ব্যবসা করতে দিবে না বলে হুমকি দেন। ফলে চাঁদাবাজের কবল থেকে রক্ষা পেতে ওই ব্যবসায়ী ২৬ নভেম্বর সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগটির তদন্তকারী কর্মকর্তা নিযুক্ত হন থানার উপ-পরিদর্শক ইমরান খান।
অভিযোগকারী বেল্লাল জোমাদ্দার বলেন, অভিযোগ তদন্তকারী কর্মকর্তা ২৭ নভেম্বর রাত ৯ টা দিকে আমাকে হীরাঝিল এলাকায় ডেকে নেন। আমি গিয়ে দেখি সেখানে অভিযুক্ত ওমর ফারুক উপস্থিত রয়েছেন। তখন আমাদের নিয়ে একটি দোকানে বৈঠকে বসেন ওই পুলিশ অফিসার।
আমাদের উভয়ের কথা শোনে এসআই ইমরান খান অভিযুক্ত ফারুকের পক্ষ নিয়ে আমাদে দৈনিক ২৫০ টাকা করে দিতে বলেন। তানাহলে ৩ দিনের মধ্যে দোকান ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন।
অভিযুক্ত ওমর ফারুক নিজেকে একজন নারী পুলিশ সদস্যের স্বামী পরিচয় দিয়ে চাঁদা দাবির অভিযোগ সঠিক নয় দাবি করে বলেন, দোকানের পজিশনটি আমার। বেল্লাল জোমাদ্দার আমার কাছ থেকে দোকানটি ভাড়া নিয়ে ব্যবসা করে আসছে।
আমাকে দৈনিক ২৫০ টাকা করে ভাড়া দিতেন। গত ৫ আগস্টের পর থেকে তিনি আর ভাড়া দিচ্ছেন না। আমি আমাকে ভাড়া না দিলে দোকান ছেড়ে দিতে বলায় আমার বিরুদ্ধে চাঁদা দাবির অভিযোগ করেছে। জায়গা সরকারি আপনাকে ভাড়া দিতে হবে কেন জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।
খোঁজনিয়ে জানা গেছে, শিমরাইল মোড় হাজী আহসান উল্লাহ মার্কেটের সমনে থেকে রেণ্ট-এ কার স্ট্যাণ্ড পর্যন্ত সরকারি জায়গা দখল করে অন্তত ৩ শতাধিক ফুটপাত দোকান গড়ে উঠেছে। তার মধ্যে নারী পুলিশ সদস্যের স্বামী ওমর ফারুকের ৩ টি দোকান রয়েছে। পুলিশ সদস্য স্ত্রীর দাপট দেখিয়ে ফারুক সরকারি জায়গায় দোকান দিয়ে ভাড়াবাণিজ্য করছে। গত ৫ আগস্টের আগে নাসিক ১ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর আনোয়ার ইসলামের লোকজন এসব ফুটপাত দোকান থেকে দৈনিক ২৫০ টাকা করে চাঁদা নিতেন। গণঅভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে সকল ফুটপাত দোকানের চাঁদা বা ভাড়া বন্ধ হয়ে পড়ে। কোন দোকান থেকে এখন পর্যন্ত কেউ চাঁদা নিচ্ছে না বলে জানায় দোকানদাররা। কিন্তু ওমর ফারুক তার দোকানের চাঁদা নিতে উঠেপড়ে লেগেছে।
এসব বিষয়ে মোবাইল ফোনে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক ইমরান খানের কাছে জানতে চাইলে তিনি একটি মিটিংয়ে আছেন বলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। তার পর একাধিকবার ফোন করলেও তিনি মোবাইল রিসিভ করেন নি।