নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

বুধবার,

১৩ নভেম্বর ২০২৪

সিদ্ধিরগঞ্জে বেড়েই চলছে মাদক ব্যবসা, বাড়ছে নানা অপরাধ-কর্মকান্ড

নারায়ণগঞ্জ টাইমস

প্রকাশিত:০২:৫২, ১৩ অক্টোবর ২০২৪

সিদ্ধিরগঞ্জে বেড়েই চলছে মাদক ব্যবসা, বাড়ছে নানা অপরাধ-কর্মকান্ড

জুলাই-আগষ্ট মাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী সরকার পরিবর্তনের সাথে সাথে দেশের সব কিছুর পরিবর্তন হলেও বন্ধ হয়নি মাদক ব্যবসা। দিন দিন যেনো বেড়েই চলছে মাদক ব্যবসায়ীদের জমজমাট মাদক ব্যবসা। ফোন দিলেই পৌছে দেয় মাদক।

মাদক ব্যাবসায়ীদের কাছে ফোন দিলেই মিলছে ফেন্সি, ইয়াবা, গাঁজা ও হিরোইনসহ বিভিন্ন মাদক। ধ্বংসের মূখে পতিত হচ্ছে তরুণ যুবসমাজ সহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ। অবাধে মাদকের ছড়াছড়ির ফলে এলাকায় চুরি, ছিনতাই সহ নানা অপরাধ কর্মকান্ড বেড়েই চলছে।

আর এ মাদকের কারবার নিয়ন্ত্রন করছে স্থানীয় প্রভাবশালী একটি মহল। মাদক বেচাকেনায় গড়ে তুলেছে বিশাল একটি সিন্ডিকেট। এদের ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করারও সাহস পায়না। এরফলে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে এলাকাবাসীর দৈনন্দিন জীবনযাত্রা।

কারন এসব মাদক ব্যাবসায়ীরা সকল দলের মিটিং-মিছিলে অংশগ্রহন করে থাকে বলে জানিয়েছেন সচেতন মহল। আওয়ামী সরকারের আমলেও তারা করেছে মাদক ব্যাবসা ছাত্র জনতার আন্দোলনে ৫ আগস্টের পরে নতুন করে অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের আমলেও বুক ফুলিয়ে চলছে তাদের এ মাদক ব্যাবসা।

সিদ্ধিরগঞ্জের নাসিক ১নং ওয়ার্ডের মিজমিজি পাগলাবাড়ী এলাকার চিহ্নিত মাদকের ডিলার, মাদক মামলাসহ প্রায় ডজন মামলার আসামি আব্দুল হাই ছেলে মেহেদী ওরফে মাদকের ডিলার মেহেদী, মিজমিজি এলাকার একাধীক মামলার আসামি গনি মিয়ার ছেলে মিশু ওরফে ইয়াবা মিশু, মিজমিজি টিসি রোড এলাকার মতিনের বাড়ীর ভাড়াটিয়া মোঃ মোশারফের ছেলে মাসুদ রানা ওরফে মুরগি মাসুদ, একই এলাকার মাহাবুব ওরফে ইয়াবা মাহাবুব, মিজমিজি সিআই খোলা বালুর মাঠ এলাকার ইশবাল ওরফে ফেন্সি ইকবাল, ৫নং ওয়ার্ডের ফজলে রাব্বী ওরফে ফেন্সি রাব্বী, সাইলো রোড চেšরাবাড়ী এলাকার খোকন ওরফে বরিশাইল্লা খোকনসহ নামে বেনামে আরো অনেকেই রয়েছে ধোরা ছোয়ার বাইরে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়েই এসব এলাকাসহ বিভিন্ন স্পটে চিহ্নিত মাদক কারবারিরা দিনে দুপুরে অবাধে মাদক বিক্রি করছে। একাধিকবার প্রশাসনের হাতে গ্রেপ্তারের পরও মাদক বিক্রির দৌরাত্ম কোনো কিছুতেই কমছে না।

নাম না প্রকাশের শর্তে ওই এলাকার বাসিন্দা একটি বিদ্যালয়ের শিক্ষক জানান, এলাকায় মাদক ব্যবসায়ী ও সেবনকারীরা রয়েছে বহাল তবিয়তে। উঠতি বয়সি তরুণ-তরুণীরা ধ্বংস হচ্ছে। গড়ে উঠছে ছোট-বড় কিশোর গ্যাং। অভিভাবক মহল রয়েছে চরম বিপাকে। মাদকের টাকা জোগাড় করতে গিয়ে অনেকে চুরি-ছিনতাই করছে।

মিজমিজি পাগলাবাড়ী এলাকার এক শিক্ষক বলছেন, ঘরের জানালা খোলা রাখলেই ভিতরে রাখা মোবাইল, মানিব্যাগ, টাকাসহ দামি দামি জিনিষপত্র অভিনব কায়দায় চুরি করে নিয়ে যায়। মাদকসেবীর অত্যাচারে নিরাপদে রাস্তা দিয়ে একা চলাফেরাটাই ঝুঁকিপূর্ণ হয়েছে।

হাতে থাকা মোবাইল, ব্যাগ মুহুর্তেই ছোঁ মেরে টান দিয়েই দৌড়। আবার অনেক সময় ছুরিসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে পথরোধ করে সব কিছু কেড়ে নেয় ওরা। ডাক চিৎকার করলেও এদের প্রতিরোধ করতে কেউ এগিয়ে আসেনা।  

পুলিশের তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে জরুরি ভিত্তিতে কঠোর ব্যবস্থা না নিলে যুবসমাজ ধ্বংস হয়ে যাবে। মাদক সিন্ডিকেট শিকড় থেকে উপড়ে ফেলতে হবে। তা না হলে সমাজে এই মাদকের ভয়াল থাবা থেকে কেউই নিরাপদ নয়।

তথ্যসূত্রে জানাগেছে, গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের সাথে-সাথে পুলিশিং কার্যক্রম ভেঙ্গে পরার সুযোগে সিদ্ধিরগঞ্জে চিহ্নিত মাদক কারবারিরা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। তারা সকলেই বিগত সময়ে গেস্খপ্তার হয়ে জেল কেটে জামিনে বেরিয়ে ফের শুরু করে এই মাদক ব্যবসা।

স্থানীয়রা বলছেন, পুলিশিং কার্যক্রম শিথিল থাকার কারনে তাদের মাদকদ্রব্য বেঁচা-কেনা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা থাকলেও থেমে নেই তাদের মাদক ব্যবসা। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গনঅভ্যুত্থানের মধ্যদিয়ে হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে মাদক কারবারিদের প্রকাশ্যেই দেখা যাচ্ছে।

ওই চিহ্নিত মাদক কারবারিরা রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছে। পুলিশিং কার্যক্রম শিথিল থাকার কারনেই প্রতিটি মাদক স্পটে প্রকাশ্যে চলছে মাদক কেনাবেচা। অপরদিকে, মাদকের ভয়াবহতায় সামাজিক অবক্ষয় থেকে পরিত্রান পাওয়ার জন্য যৌথ বাহিনী জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন সচেতন মহল।