নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

মঙ্গলবার,

০৭ জানুয়ারি ২০২৫

জমে ওঠেনি বাণিজ্য মেলা, এখনো চলছে প্যাভিলিয়ন নির্মাণ

নারায়ণগঞ্জ টাইমস:

প্রকাশিত:১৯:৪১, ৫ জানুয়ারি ২০২৫

জমে ওঠেনি বাণিজ্য মেলা, এখনো চলছে প্যাভিলিয়ন নির্মাণ

ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা প্রাঙ্গণে ৫দিনেও লোক সমাগম ও বেচাবিক্রি তেমন একটা নেই। রূপগঞ্জের পূর্বাচলে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারের মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা গেছে এখনো স্টল তৈরি ও সাজসজ্জার কাজ চলছে। বিক্রেতারা বলছেন, আরও কয়েকদিন পর মেলা জমে উঠবে।

স্টলের বিক্রেতারা জানান, প্রতিদিন বেলা বাড়ার সাথে সাথে দর্শণার্থীর সংখ্যা কিছুটা বাড়লেও বেচাবিক্রি একেবারেই কম। এভাবে চলতে থাকলে সবাইকে লোকসান গুনতে হবে। মেলা ঘুরতে আসা অধিকাংশ দর্শণার্থীই ঘুরে ফিরে দেখছেন। কেউ তুলছেন ছবি।

সামান্য পরিমাণে নিত্যপণ্য বিক্রি হচ্ছে। দেশীয় ও বিদেশী স্টলগুলোতে নিত্যপ্রয়োজনীয় গৃহস্থালি পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসছেন দোকানীরা। শেরপুর থেকে আসা গৃহস্থালি স্টলের কর্ণধার শাহেদ হোসেন বলেন, মেলার শুরুতে খুব একটা কেনাবেচা হয় না। মেলায় লোক সমাগম কম থাকার মূল কারণ, আবহাওয়াটা ভালো না। 

মেলায় অংশ নেওয়া ক্রোকারিজ দোকান ‘নিক্কেই জাপান’ এর বিক্রয়কর্মী শরিফুল ইসলাম বলেন, কেনাকাটা এখনও তেমন একটা শুরু হয়নি। দর্শনার্থীরা এসে ঘুরেফিরে দেখছেন। আরও কয়েকদিন পর হয়তো বিক্রি বাড়বে।

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার নোয়াপাড়া এলাকা থেকে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মেলায় ঘুরতে এসেছিলেন আব্দুল মবিন। বেসরকারি এই চাকুরীজীবি বলেন, পরিবার নিয়ে এবার এই প্রথম বাণিজ্য মেলায় এসেছেন। কেনাকাটা করেননি। মূলত দেখতে এসেছেন। পুরোপুরি জমজমাট হয়ে ওঠেনি এখনও।

রাজধানীর তুরাগ থেকে মেলায় এসেছিলেন বেসরকারি চাকুরীজীবি মো. ওমর ফারুক বলেন, মেলায় ঘুরতে এলাম। ভালোই লাগছে। তবে, এখনও পুরোপুরি জমেনি। আবার আসব পরিবার নিয়ে।

দেশীয় পণ্যের প্রচার, প্রসার, বিপণন ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে ১৯৯৫ সাল থেকে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার আয়োজন করছে বাংলাদেশ। এরপর ২০২২ সালে মেলার ভেন্যু রাজধানীর আগারগাঁও থেকে নিয়ে যাওয়া হয় পূর্বাচলে। এ বছর বসেছে এই মেলার ২৯তম আসর।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবারের মেলার যৌথ আয়োজক। এবারের মেলার বর্ষপণ্য ‘আসবাব’। রীতি অনুযায়ী ইংরেজি নতুন বছরের প্রথম দিন মেলা শুরু হয়েছে। মেলার উদ্বোধন করেন অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।

পণ্য প্রদর্শনীর সবচেয়ে বড় এ মেলায় এবার ৩৬২টি স্টল ও প্যাভিলিয়ন রয়েছে। এর মধ্যে ৩৫১টিই দেশীয় প্রতিষ্ঠানের। বাকি ১১টি স্টল সাতটি দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের। মেলায় অংশ নেওয়া সাতটি দেশ হল- ভারত, পাকিস্তান, তুরস্ক, সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়া, হংকং ও মালয়েশিয়া।

মেলায় দেশীয় বস্ত্র, মেশিনারিজ, কার্পেট, কসমেটিক্স এ্যান্ড বিউটি এইডস, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক্সস, আসবাব, পাট ও পাটজাত পণ্য, গৃহসামগ্রী, চামড়া, কৃত্রিম চামড়ার জুতাসহ চামড়াজাত পণ্য, ক্রীড়াসামগ্রী, স্যানিটারিওয়্যার, খেলনা, মনিহারী পণ্য, ক্রোকারিজ, প্লাস্টিক, মেলামাইন পলিমার, হারবাল, টয়লেট্রিজ, ইমিটেশন জুয়েলারি, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, ফাস্টফুড, হস্তশিল্পজাত পণ্য, গৃহসজ্জার পণ্যসহ বিভিন্ন পণ্য মেলায় বিক্রির জন্য রাখা হয়েছে।

এখনও চলছে স্টল তৈরির কাজ: সাধারণত বাণিজ্য মেলার প্রথম কয়েকদিন ধরে স্টল তৈরি, সাজসজ্জা নিয়ে বিক্রেতাদের ব্যস্ততা থাকে বেশি। এবারও সেই চিত্র দেখা গেছে। মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা গেছে, স্টল তৈরি ঘিরে চলছে হাতুড়ি-বাটাল নিয়ে কাঠমিস্ত্রীদের ব্যস্ততা।

মেলায় স্টল নির্মাণের কাজ করছিলেন শ্রীকান্ত সূত্রধর। তিনি বলেন, আমার সঙ্গে আরও ছয়জন কাজ করছেন। স্টলের আকৃতি আর ডিজাইন ভেদে ৫০ হাজার থেকে তিন লাখ টাকা পর্যন্ত নিয়ে থাকি।

আরেক মিস্ত্রি জাকির হোসেন বলেন, আমরা এবার প্রায় ২০টির মতো স্টল তৈরি করেছি। চুক্তিতে আমরা এই কাজ করে থাকি। আমার সঙ্গে আরও পাঁচজন এই কাজে যুক্ত আছেন। মাসব্যাপী মেলাটি প্রতিদিন সকাল ১০টায় শুরু হয়ে চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত; আর সাপ্তাহিক ছুটির দিনে মেলা চলবে রাত ১০টা পর্যন্ত।