নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের পূর্বাচলে পুলিশের তল্লাশী চৌকিতে প্রাইভেটকারের ধাক্কায় বুয়েট শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় গ্রেফতার তিনজনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় আসামিদের আদালতে তুলে পাঁচ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়। পরে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শাফিয়া শারমিন তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। সেইসঙ্গে রোববার (২২ ডিসেম্বর) তাদের রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) রাতে পূর্বাচল ৩০০ ফিট নীলা মার্কেট (কুড়িল-কাঞ্চন সড়ক) এলাকায় পুলিশ চেকপোস্টে দাঁড়িয়ে থাকা মোটরসাইকেলকে দ্রুতগতির প্রাইভেটকার ধাক্কা দেয়। এতে বুয়েটের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল (সিএসই) বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মোহতাসিম ঘটনাস্থলেই মারা যান। গুরুতর আহত হন অমিত সাহা ও মেহেদী হাসান নামের দুজন।
নিহত মোহতাসিম ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গার মাসুদ মিয়ার ছেলে। আহত অমিত ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার তপন কুমার সাহার ছেলে এবং মেহেদী কুমিল্লা সদরের মফিজুর রহমান খানের ছেলে।
ঘটনার পর প্রাইভেটকারটি তল্লাশি করে এক ক্যান বিয়ার ও একটি খালি মদের বোতল পাওয়া গেছে বলেও মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত মুবিন আল মামুন এবং তার দুই বন্ধু মিরাজুল করিম ও আসিফ চৌধুরীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গ্রেফতার মুবিন আল মামুন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুল্লাহ আল মামুনের ছেলে এবং তিনিই প্রাইভেটকারটি চালাচ্ছিলেন। প্রাইভেটকারটির রেজিস্ট্রেশনও সাবেক ওই সেনা কর্মকর্তার নামে রয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।
নারায়ণগঞ্জ জেলার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (গ-সার্কেল) মেহেদী ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় সড়ক পরিবহন আইনে রূপগঞ্জ থানায় একটি মামলা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের ডোপ টেস্টের জন্য পাঠানো হয়েছে।
সিভিল সার্জন ডা. এ এফ এম মুশিউর রহমান বলেন, ডোপ টেস্টে দুজনের পজিটিভ পাওয়া গেছে। তারা অ্যালকোহল নিয়েছিলেন। তারা হলেন, মুবিন আল মামুন এবং তারবন্ধু মিরাজুল করিম ।
বাদীপক্ষের আইনজীবী রেজাউল করিম খান রেজা বলেন, পুলিশ চেকপোস্টে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় একটি মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয় বেপরোয়া গতির প্রাইভেটকার। তারা মাদক সেবন করে বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালাচ্ছিলেন। এসময় ঘটনাস্থলেই একজন মারা যান। সেইসঙ্গে পুলিশসহ আরও কয়েকজন আহত হন। মাদক সেবন করে বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালাচ্ছিলেন প্রাইভেটকারচালক।
তবে আসামিপক্ষের আইনজীবী আনোয়ার প্রধান বলেন, অসতর্ক অবস্থায় প্রাইভেট চালানোর সময়ে একটি মোটরসাইকেলে ধাক্কা লাগে। এসময় একজন মারা যান। এ ঘটনায় প্রাইভেটকার চালকের দোষ থাকতে পারে। কিন্তু বাকি দুজন কোনো অপরাধ করেননি। তাদেরকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। আমরা এ বিষয়ে আদালতে শুনানি করবো। এখানে কেউ মাদক সেবনরত অবস্থায় ছিলেন না।