রূপগঞ্জ উপজেলার বাগবেড়, টিনর, কেয়ারিয়া ও জলসিঁড়ি এলাকার আতঙ্ক ছিল লায়লা গ্রুপের চেয়ারম্যান বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক এবং ছাত্র-জনতা আন্দোলনের হত্যা মামলার আসামি সিদ্দিকুর রহমান। এখন তারই সহযোগি রমজান মিয়ার অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমল থেকে বাগবেড় এলাকায় লায়লা গ্রুপের পালিত সন্ত্রাসী রমজান এখন কোটিপতি বনে গেছেন। গত ৫ আগষ্টের পর থেকে লায়লা গ্রুপের চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান পলাতক থাকলেও সকল অবৈধ কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন সন্ত্রাসী মেহেদী হাসান ও রমজান মিয়া।
এলাকার শত শত মানুষের জমি না কিনেই বালু ভরাটসহ পাকা স্থাপনা নির্মাণ করছেন তারা। তাদের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ আদালতে ৪৯৬ ও ৭৫০ নম্বর মামলা ও ১৪৫ ধারায় জমিতে নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্বেও কাজ চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
জানা গেছে, ৫ আগস্টের পর থেকে ছাত্র-জনতা হত্যা মামলার আসামি সিদ্দিকুর রহমান পলাতক থাকলেও গত ২১ আগস্ট তার স্বাক্ষর জাল করে এলাকাবাসীর বিরুদ্ধে ভুমি প্রতিরোধ আইনে এবং এডিসি আদালতে পৃথক দুটি মিছ আপীল করে। মামলা দুটিতে পৃথক জাল স্বাক্ষর ব্যবহার করা হয়েছে। লায়লা গ্রুপের সকল অবৈধ কাজ করছেন বাগবেড় এলাকার রমজান মিয়া ও মেহেদী হাসান।
তাদের সঙ্গে সিদ্দিকুর রহমানের নিয়মিত যোগাযোগ থাকায় লায়লা গ্রুপের কাজ চলমান রয়েছে। রমজান ও মেহেদীকে আটক করে আইনের আওতায় আনা হলে সিদ্দিকুর রহমানের খোঁজ পাওয়া যাবে বলে এলাকাবাসী জানান। এ বাহিনীর দাপটের কারণে এলাকাবাসীর মধ্যে এখন চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।
বাগবেড় এলাকার রমজান মিয়া ৫ আগস্টের আগে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী দিয়ে লায়লা গ্রুপে বালু ভরাট ও বাউন্ডারী দেওয়াল নির্মাণের কাজ নিয়ন্ত্রণ করতেন। এখন আবার বিএনপির নাম ভাঙিয়ে সন্ত্রাসী রমজান মিয়া এলাকাবাসীর বিরুদ্ধে মামলা, হামলা ও হুমকি-ধামকি দিয়ে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালিয়ে লায়লা গ্রুপের সকল কাজকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। রমজান মিয়ার বিরুদ্ধে রূপগঞ্জ থানা ও নারায়ণগঞ্জ আদালতে বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে।
এদিকে সন্ত্রাসী রমজান মিয়া ও তার বাহিনী পূর্বাচলের বিভিন্ন প্লটের গেইট চুরি, জলসিঁড়ি আবাসন কোম্পানীর ১০০ ফিট সড়কে ছিনতাই, ডাকাতিসহ নানা অপরাধ কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। নীলাচল কোম্পানিতে ডাকাতি করে ফ্যান, টিভি, ফ্রিজ, এসি, আসবাবপত্র ও প্রয়োজনী কাগজপত্র লুটপাট করে সন্ত্রাসী রমজান ও তার সহযোগিরা নিয়ে গেছে।
অভিযুক্ত রমজান মিয়া জানান, ৫ আগস্টের পর সিদ্দিকুর রহমানের দেওয়ার মামলা পরিচালনার দায়িত্ব দেন মেহেদী হাসানকে। পরে মেহেদী হাসান বাদি হয়ে এলাকাবাসীর বিরুদ্ধে দুটি মামলা করেন। আমি লায়লা গ্রুপে চাকুরি করি। আমি কোনো অনিয়মের সাথে সম্পৃক্ত নই। প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই লায়লা গ্রুপের কাজ অব্যাহত আছে।
রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিয়াকত আলী জানান, লায়লা গ্রুপের চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা সিদ্দিকুর রহমান, মেহেদী হাসান ও রমজান মিয়াদের বিরুদ্ধে চীফ জুডিশিয়াল আমলী আদালতে মামলা হয়েছে। আদালতের নির্দেশনায় তদন্ত চলছে।