নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার গোলাকান্দাইল ও ভূলতা গাউছিয়ায় ঈদের আগেই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে অজ্ঞান পার্টিরা। অভিযোগ উঠেছে ভূলতা ফাঁড়ির পুলিশের তৎপরতা না থাকায় দিন দিন অজ্ঞান পার্টির হাত থেকে রেহাই পাচ্ছেন না ব্যবসায়ীরা। প্রতিদিনই এই এলাকায় অজ্ঞান পার্টির কবলে পড়ে সর্বস্ব হারাচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
বুধবার (১৬ মার্চ) বেলা ১১টার দিকে গোলাকান্দাইল চৌরাস্তা এলাকায় কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার আবুল হাসেমের ছেলে শফিকুল ইসলাম(৩৬) নামে এক ব্যক্তিকে অজ্ঞান পার্টিরা ফেলে চলে যায়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে এবং তার কাছে থাকা একটি মোবাইল নাম্বারে কল দিলে তার স্ত্রী ধরেন।
পরে তার স্ত্রীর সাথে যোগাযোগ করে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়। এই এলাকায় প্রতিদিনই ঘটছে এমন অপ্রীতিকর ঘটনা।
একটি সূত্রে জানা যায়, রূপগঞ্জ উপজেলার ভূলতা গাউছিয়া এলাকাটি শিল্পউন্নত জনবহুল একটি এলাকা। এখানে হাজারো মানুষের সমাগম থাকায় অজ্ঞান ও মলম পার্টির সদস্যরা অনেকটা বেপরোয়া। এই অজ্ঞান ও মলম পার্টির সদস্যরা বেশিরভাগই গণপরিবহন ও ভাসমান অবস্থায় অপরাধ করে থাকে। মাস্ক, বিস্কুট, চকলেট, খাবার ইত্যাদি বিক্রির আড়ালে কুপোকাত হয় যাত্রীরা।
শুধু টাকা-পয়সা বা মূল্যবান জিনিসপত্রই নয়। অজ্ঞানপার্টি চালকের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিচ্ছে গাড়িও। প্রাইভেট কার বা অটোরিকশায় যাত্রীবেশে চড়ে সুবিধামতো নির্জন স্থানে গিয়ে কাজ সারছে। নানা কৌশলে খাবারের নামে যাত্রা বিরতি দিয়ে খাওয়ানো হচ্ছে চেতনানাশক।
অথবা চেতনানাশক শুকিয়ে, খাবারের মাধ্যমে খাইয়ে বা চোখে-মুখে মলম লাগিয়ে দিয়ে অচেতন করছে। রাস্তার পাশে ফেলে দিয়ে গাড়ি নিয়ে হাওয়া হচ্ছে। অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অজ্ঞান পার্টির বেপরোয়া হওয়ার নেপথ্যে তিনটি কারণ রয়েছে। দেখা যায়, অজ্ঞান পার্টির প্রধান টার্গেট থাকে সাধারণ যাত্রীরা। তারা বিভিন্ন স্থানে ছদ্মবেশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকে।
এদের হাত থেকে বাঁচতে সচেতনতার বিকল্প নেই। তবে যারা অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে তারা ঝামেলা এড়াতে অনেকে মামলা করে না। আবার মামলা বা গ্রেফতার হলেও স্বল্প সাজা ও জামিনে বের হয়ে যায়। এসব প্রতারণায় আইন কঠোর হওয়া উচিত। তা হলে এ ধরনের অপরাধ অনেকটা কমে যেত।
আবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঝিমিয়ে যাওয়ায় অজ্ঞান পার্টির তৎপরতা বেড়ে গেছে। তাই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সজাগ থাকা দরকার।