বন্দর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ঘোষণা ছাড়াই করোনার দ্বিতীয় ডোজ টিকা প্রদান বন্ধ রাখায় ভোগান্তিতে পড়েছেন টিকা দিতে আসা লোকজন।
শনিবার (২৬ ফেব্রুযারি) ঘোষনা ছাড়াই টিকা দেয়া বন্ধ রাখায় হাসপাতাল কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সাথে অনেককে বাক বিতন্ডায় জড়িয়ে পড়তে দেখা যায়। আবার অনেকেই ঝেড়েছেন ক্ষোভ ।
তবে প্রথম ডোজ টিকা নিতে আসা লোকজন কোনো ধরনের ঝামেলা ছাড়াই টিকা নিতে পেরেছেন। বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত মাঝারি আকারের লাইনে দাঁড়িয়ে টিকা নিতে হলেও ১২টার পর এই কেন্দ্রে টিকা গ্রহীতাদের কোনো লাইন চোখে পড়েনি।
এদিকে শনিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত অন্তত শতাধিক লোক দ্বিতীয় ডোজের টিকা না পেয়ে ফিরে গেছে। অপরদিকে বন্দর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আলাউল কবির বলেন, আমাদের ১৫টি দল প্রথম ডোজের লক্ষ্য পূরণে কাজ করছে। সব লোকবল সেখানে ব্যস্ত। কাল থেকে দ্বিতীয় ডোজ ও বুস্টার ডোজ চলবে।
দ্বিতীয় ডোজ টিকা দেওয়া হবে না এমন কোনো ঘোষণা দেওয়া হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এমন ঘোষণা দেওয়া হয়নি। আমাদের ব্যস্ততা কম থাকলে দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ারও পরিকল্পনা ছিল।
সরেজমিনে দেখা গেছে, শনিবার লাঙ্গলবন্দ থেকে বন্দর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনার দ্বিতীয় ডোজ টিকা দিতে এসেছেন দুই বোন ঝর্ণা আক্তার ও বন্যা আক্তার। সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে জানতে পারেন, আজ কেবল প্রথম ডোজ টিকা দেওয়া হচ্ছে। দ্বিতীয় ডোজ টিকা নিতে হলে তিন দিন পর আসতে হবে।
টিকা না দিতে পেরে হাসপাতালের দায়িত্বরত লোকজনের সঙ্গে তর্কে জড়ান এই দুই বোন। ঝর্ণা ও বন্যার সঙ্গে যোগ দেন দ্বিতীয় ডোজ টিকা নিতে আসা বৃদ্ধ সুবেদ আলী ও তাঁর স্ত্রী রেহানা বেগমও। তাঁরা এসেছেন বন্দরের মদনপুর থেকে। করোনার দ্বিতীয় ডোজ টিকা না দিতে পেরে তারাও ফিরে যান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বন্যা ও ঝর্ণা বলেন, গত বছরের অক্টোবরের শুরুতে তাঁরা প্রথম ডোজ টিকা নিয়েছেন। তারপর বন্দর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কেন্দ্রে অন্তত তিনবার গিয়েও টিকা দিতে পারেননি। গত তিন দিন আগে টিকা নিতে গেলে হাসপাতাল থেকে তাঁদের শনিবার আসতে বলেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঝর্ণা বলেন, তিন দিন আগে আসার পর বলেছে শনিবার আসতে। আজকে আসার পর এক ঘণ্টা দাঁড়িয়ে ছিলাম। এখন বলছে, সোমবার আসতে। ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের বাসায় রেখে বারবার এত দূর আসা যায় না।
সুবেদ আলী বলেন, দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হবে না সেটা মাইকিং করে জানিয়ে দেওয়া উচিত ছিল। অসুস্থ শরীর নিয়ে টাকা খরচ করে এত দূর এসে টিকা না পেলে কষ্ট লাগে।