নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

বৃহস্পতিবার,

২১ নভেম্বর ২০২৪

বান্দরবন বেড়াতে গিয়ে লাশ হলো সাঈদা শিউলীর দুই সন্তানসহ ৩জন

নারায়ণগঞ্জ টাইমস:

প্রকাশিত:২৩:৩৭, ২৫ ডিসেম্বর ২০২১

বান্দরবন বেড়াতে গিয়ে লাশ হলো সাঈদা শিউলীর দুই সন্তানসহ ৩জন

বেড়াতে গিয়ে মৃত্যুর আগে দুই ভাই-বোন

বান্দরবানে বেড়াতে গিয়ে লাশ হয়েছে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার উত্তর চাষাড়ার সাঈদা আক্তার শিউলীর দুই সন্তান ও তার বোনের মেয়ে। নিহতরা হলো-মারিয়া ইসলাম (১৯), আহনাফ আকিব (২২) ও আদনীন (১৬)। এরমধ্যে আহনাফ আকিব ও আদনীন ভাই-বোন এবং মায়িা ইসলাম তাদের মামাতো বোন।
বান্দরবানের তারাছার বাধরা ঝর্ণার পাশে সাঙ্গু নদীতে গোসল করতে নেমে মারিয়াম ঘটনাস্থলেই মারা যায়। এবং আকিব ও আদনীন স্রোতে ভেসে যায়। নিখোঁজের প্রায় ১৯ ঘণ্টা পর শনিবার (২৫ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় আদনিনের (১৬) লাশ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস। এর প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা পর ভাই আহনাফ আকিবের (২২) লাশটি উদ্ধার করেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।

বান্দরবান পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, বুধবার (২২ ডিসেম্বর) সকালে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থেকে পরিবারের ১০ জন বান্দরবানের হোটেল দ্যা প্যারাডাইসে ওঠেন। বান্দরবানের নীলাচল, মেঘলা, নীলগিরিসহ বিভিন্ন স্পট ঘুরে বেড়ান তারা। শুক্রবার রাতের বাসে তাদের নিজ বাড়িতে ফেরার কথা ছিল। শুক্রবার সকালে সাংগু নদীতে নৌকা ভ্রমণে বের হয়ে রোয়াংছড়ি উপজেলার তারাছা বাদুরের ঝর্ণা এলাকার সাংগু নদীতে মুছায়াত তানিম নদীতে গোসলে নামলে হঠাৎ নদীর মধ্যে আকিবের পা মাটি থেকে সরে যায়। তাকে উদ্ধারের জন্য বাকিরা নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়লে ঘটনাস্থলে নারায়ণগঞ্জের আমিনুল ইসলামের মেয়ে মারিয়া ইসলাম (১৯) ডুবে মারা যায়। নিখোঁজ হন নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার জহিরুল ইসলামের ছেলে মো. আহনাফ আকিব (২২) ও মেয়ে মারিয়াম আদনিন (১৭)।


সন্তানদের এমন নিখোঁজের খবরে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থেকে ছুটে যান মা সাইদা শিউলী ও মামা শামীম। উদ্ধার কাজ বন্ধ করে উদ্ধারকর্মীরা চলে গেলেও ঘটনাস্থল নদীর তীরে দাঁড়িয়ে ছিলেন মা-মামা।

বান্দরবান ফায়ার সার্ভিস সিনিয়র স্টেশন অফিসার নাজমুল আলম জানান, সাংগু নদীতে নিখোঁজ থাকা দ্বিতীয় পর্যটক আকিবের মরদেহ দুপুর দেড়টায় উদ্ধার করা হয়েছে। মরদেহটি বান্দরবান সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে রোয়াংছড়ির ওসি মো. মান্নান জানান, নিখোঁজ দুই ভাইবোনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে আইনি প্রক্রিয়ায় তাদের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

আহনাফ ও আদনিনের খালাতো ভাই ব্যবসায়ী আবদুল্লাহ জানান, বুধবার (২২ ডিসেম্বর) সকালে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থেকে খালাতো ও মামাতো ভাইবোনসহ তারা ১০ জন বান্দরবান আসেন। সেদিন সকালে তারা বান্দরবানের হোটেল দ্য প্যারাডাইসে ওঠেন। দুদিন ধরে নীলাচল, মেঘলা, নীলগিরিসহ বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্র চষে বেড়িয়েছেন। শুক্রবার রাতের বাসেই বাড়ি ফেরার কথা ছিল। তাই সকালে নৌকা ভ্রমণে বের হন।

হোটেল দ্য প্যারাডাইসের ম্যানেজার চম্পক চক্রবর্তী বলেন, ‘এ ১০ পর্যটক বুধবার সকালে হোটেলে অবস্থান নেয়। তারা দুদিন বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়িয়েছেন। শুক্রবার রাতের বাসে তাদের বাড়ি ফেরার কথা ছিল। এরই মধ্যে একটি দুর্ঘটনা ঘটে গেছে। বিষয়টি আসলেই মর্মান্তিক।

প্রসঙ্গত: নিহত আহনাফ আকিব ও আদনীনের মা সাঈদা আক্তার শিউলী নারায়ণগঞ্জ-মুন্সিগঞ্জ পেট্টোলপাম্প ওনার্স এসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান এবং বিজেএমই ও এফবিসিআইসির সদস্য।

সম্পর্কিত বিষয়: