নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

সোমবার,

২৫ নভেম্বর ২০২৪

চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন ব্যবসায়ী রানা : অসহায় স্ত্রী শিশু কন্যা

নারায়ণগঞ্জ টাইমস

প্রকাশিত:০২:০০, ৫ ডিসেম্বর ২০২১

চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন ব্যবসায়ী রানা : অসহায় স্ত্রী শিশু কন্যা

অবশেষে জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষনে থেকে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করলেন তরুন ব্যবসায়ী রানা (ইন্নালিল্লাহি ........ রাজেউন)।  ৩ ডিসেম্বর শুক্রবার দুপুরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে মারা যান তিনি।

 

শুক্রবার রাত ২টায় শহরের জামতলায় নিজ বাড়িতে এসে পৌঁছে রানার মরদেহবাহি এম্বুলেন্স। শনিবার যোহর নামাজের পর জামতলায় নামাজে যানাজা শেষে মাসদাইর কবরস্থানে কামরান হোসেন রানাকে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়। রানার মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।


প্রসঙ্গত, নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগার সংলগ্ন মতলব টাওয়ারে ফ্লাট দেখতে যেয়ে ভবনের পাশ দিয়ে যাওয়া ৩৩ কেভি বিদ্যুৎ লাইনে বিদুৎস্পর্শে মারাত্মকভাবে দগ্ধ হন ব্যবসায়ী কামরান হোসেন রানা। তাকে নেয়া হয় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে।


রানার পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে, গত ২৮ নভেম্বর রাত ৮টায় এক ব্যাংক দম্পত্তিকে সঙ্গে নিয়ে ব্যবসায়ী রানা মতলব ভবনে ফ্লাট দেখাতে যান। প্রথমে তিনি ভবনের নীচ তলায় এশার নামাজ আদায় করেন। পরে তিনি ব্যাংক দম্পত্তি ও ভবনের নিরাপত্তা প্রহরীকে নিয়ে ভবনের চারতলায় যান। ফ্লাটের প্রতিটি কক্ষ তিনি ব্যাংকার দম্পত্তিকে দেখান।


এক পর্যায়ে তিনি বারান্দা দেখাতে দরজা খুলে দেখাতে যান। দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গে রানা বিদ্যুৎতায়িত হয়ে যান। ঝলসে যায় তার পুরো দেহ। এসময় ব্যাংকার দম্পত্তি ও নিরাপত্তা কর্মী দৌড়ে ফ্লাট থেকে বের হয়ে যান। বিদুতায়িত হয়ে পড়ে থাকেন ব্যবসায়ী রানা। 


পরে এলাকাবাসী তাকে উদ্ধার করে। কিন্তু এসময়ের মধ্যে ব্যবসায়ী রানার গায়ের কাপড়ে আগুন জ¦লে সম্পূর্ণ পুড়ে যায়। গুরুতর আহতাবস্থায় তাকে উদ্ধার করে পাঠানো হয় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে। 


সেখানে প্রথমে তাকে রাখা হয় আইসিইউতে। অবস্থার অবনতি হলে মঙ্গলবার ৩০ নভেম্বর সন্ধ্যায় রানাকে লাইফ সার্পোটে স্থানান্তর করেন কর্তব্যরত চিকিৎকরা। অবশেষে শুক্রবার রানা মারা যান।


এদিকে রানা মারা যাবার পর রানার স্ত্রী ও সন্তানটিকে নিয়ে শুরু হয় জটিলতা। রানার বাড়ির লোকজন  স্ত্রী ও তার বাপের বাড়ীর লোকজনের সঙ্গে শুরু করেন অমানবিক আচরন। 


অভিযোগ উঠেছে, রানার স্ত্রীকে তার বাপের বাড়ি চলে যেতে বারে বারে চাপ দেয়া হচ্ছে। ফলে এ নিয়ে দেখা দিয়েছে জটিলতা। তবে বিষয়টি নিয়ে রানার পরিবারের সঙ্গে মহল্লার মুরুবীরা কথা বলবেন বলে আশ^াস দেয়া হয়েছে বলে একটি সুত্র জানিয়েছেন।


অভিযোগ উঠেছে রানার মৃত্যু সংবাদ পাবার পর শুক্রবার রানা স্ত্রীর কাছ থেকে জোর করে আলমারির চাবি নিয়ে যায়। পরে তারা রানার সকল কাগজপত্রসহ মালামাল রানার মা, বোন ও ভাইদের হেফাজতে নিয়ে যায়। 


এদিকে রানা স্ত্রীকে পাঠানো হয় শহরের কেয়ার ক্লিনিকে। তাকে স্যালাইনের সঙ্গে ঘুমের ঔষধ প্রয়োগ করে ঘুমিয়ে রাখা হয়। শুক্রবার দিবাগত রাত ২টায় রানার লাশ আসার পর ক্লিনিক থেকে নিয়ে আসা হয় রানার স্ত্রীকে। 


এসময় তাকে তার স্বামীর লাশ দেখানো হয়। লাশ দেখানোর সময়ও রানার স্ত্রী ছিলেন ঘুমের মোহে আচ্ছন্ন। বিষয়টি নিয়ে মহল্লায় শুরু হয়েছে কানাঘুষা। সকলেই জানতে চাইছেন রানার স্ত্রীকে কি করতে চাইছেন তারা?