ফতুল্লার লালঁখায় ফ্ল্যাট বাসায় জমে থাকা গ্যাস বিস্ফোরণে নিহত মঙ্গলী রানীর দুই শিশু কন্যা ও বৃদ্ধ শাশুড়ির দায়িত্ব নিয়েছেন সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আরিফা জহুরা।
নিহত মঙ্গলী রানী সিলেট জেলার ছাতক উপজেলার মৃত নন্দ দাসের স্ত্রী। স্বামীর মৃত্যুর পর বড় মেয়ে পূর্ণিমাকে (১০) নিয়ে ছোট মেয়ে স্বর্ণিমাকে তার দাদীর কাছে রেখে সিলেট থেকে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় লালখার মোড় এলাকায় মাজহারুল ইসলামের বাড়িতে একটি রুম ভাড়া নিয়ে চলে আসেন। এরপর থেকে লালখা এলাকায় একটি গার্মেন্টসে কাজে যোগ দেন মঙ্গলী রানী।
এদিকে সোমবার সকালে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউটের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দগ্ধ ঝুমা রানীর তার মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মোক্তার মিয়ার বাড়িতে বিস্ফোরণের ঘটনায় পাশের বাড়ির মায়া রানী পথচারী মঙ্গলী রানীসহ তিন নারীর মৃত্যু হলো। আইসিইউতে ঝুমার মা তুলসী রানী চিকিৎসাধীন রয়েছে। তার শরীরে ২৫ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে।
তুলসী রানীর ছেলে রুবেল বলেন, গত শুক্রবার ভোরে ফতুল্লার লালখাঁর মোড় এলাকায় মোক্তার মিয়ার পাঁচতলা বাড়ির নিচতলার একটি ফ্ল্যাটে জমে থাকা গ্যাস বিস্ফোরণ হয়। এতে ওই বাসার নিচতলার আরেকটি ফ্ল্যাটে আমার মা তুলসী রানী ও বোন ঝুমা রানীকে নিয়ে ভাড়ায় বসবাস করতাম। বিস্ফোরণে আমার পরিবারে মা-বোনসহ তিনজনই দগ্ধ হয়েছি। আমাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দগ্ধ হয়েছে বোন ঝুমা রানী।
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আরিফা জহুরা জানান, হতাহত সবাইকেই উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অনুদান দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে নিহত মঙ্গলী রানীর পরিবারের মধ্যে দুই শিশু কন্যা ও বৃদ্ধ এক মা রয়েছে। তাদের থাকা খাওয়া ও চলার মতো কোনো কিছুই নেই।
এ জন্য সিলেটের ছাতক উপজেলার ইউএনওকে অনুরোধ করেছি মঙ্গলী রানীর দুটি শিশু কন্যা ও মাকে থাকার জন্য একটি জমি ও ঘর সরকারিভাবে যেন ব্যবস্থা করে দেন। একই সঙ্গে বৃদ্ধ মাকে বয়স্ক ভাতার ব্যবস্থা করে দিবেন ইউএনও। এছাড়া আপাতত তাদের থাকা খাওয়ার জন্য ২৫ হাজার টাকা সহায়তা করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, যে বাড়িটিতে বিস্ফোরণে এত হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সে বাড়ির বিষয়ে জেলা প্রশাসন থেকে সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।