নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে অবস্থিত আদমজী ইপিজেডে কর্মবিরতি করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন সিএন্ডএফ এজেন্ট কর্মচারীরা। এতে পুরো ইপিজেডের অভ্যন্তরীণ সকল প্রকারের রপ্তানী শুল্ক আদায় কার্যক্রম প্রায় পাঁচ ঘন্টা বন্ধ ছিলো।
ইপিজেডের কাস্টমস (শুল্ক) বিভাগের সহকারী কর্মকর্তা আবুল হোসেন ও জাকির হোসেন শেখের অপসারণের দাবিতে এ আন্দোলন করেন তারা। রোববার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত আদমজী ইপিজেডের মূল ফটকের ভিতরে কাস্টমস বিভাগের কার্যালয়ের সামনে এ বিক্ষোভ পালন করেন আদমজী ইপিজেডের সিএন্ডএফ কর্মচারীরা।
পরবর্তীতে কাস্টমসের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেওয়ার প্রেক্ষিতে কাজে ফেরেন সিএন্ডএফ কর্মচারীরা।
সিএন্ডএফ কর্মচারীরা জানায়, আদমজী ইপিজেডের কাস্টামস (শুল্ক) বিভাগের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা আবুল হোসেন এবং জাকির হোসেন শেখ এ অফিসে যোগদানের পর থেকেই সিএন্ডএফ কর্মচারীদের থেকে অতিরিক্ত উৎকোচ আদায় করতো।
তাদের দাবিকৃত অতিরিক্ত উৎকোচ না দিলে বিভিন্ন কাগজপত্র নিয়ে দুর্ব্যবহার করতো ঐ দুই কর্মকর্তা। দাবিকৃত অর্থ না পাওয়ায় সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) কাস্টমস বিভাগের কার্যালয়ে হান্নান নামে এক সিএন্ডএফ কর্মচারীকে আটকিয়ে মশা মারার ব্যাট দিয়ে বিদ্যুতের শক খাওয়াইয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে ঐ দুই কর্মকর্তা।
এ ঘটনা জানাজানি হলে সিএন্ডএফ কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। সেই ক্ষোভ থেকে রোববার সকাল ৯ টা থেকে কর্ম বিরতিতে গিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে সিএন্ডফ কর্মচারীরা। এই বিক্ষোভের কারণে ইপিজেডের অভ্যন্তরে রপ্তানীপণ্য বহনের জন্য কোনো প্রকারের মালবাহী যানবাহন প্রবেশ করতে না পারায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
আন্দোলনকারীরা জানান, আদমজী ইপিজেডের কাস্টমস বিভাগের সহকারী কর্মকর্তা আবুল ও জাকির মিলে সিএন্ডএফ এজেন্টদের কর্মচারীদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে। কাগজপত্র নিয়ে মামলা দেওয়ার ও পুলিশ দিয়ে গ্রেফতার করিয়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে আসছিলো। কাস্টমস কর্মকর্তাদের এহেন দুর্ব্যবহারের সিএন্ডএফ এজেন্টরা অতিষ্ঠ।
ঢাকা কাস্টমস সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের সেক্রেটারি খায়রুল বাশার বলেন, আদমজী ইপিজেডের কাস্টমস বিভাগের দুই কর্মকর্তার হয়রানিতে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে সিএন্ডএফ কর্মচারীরা। তাই আমাদের সাংগঠনিক সিদ্ধান্তে এই কর্ম বিরতি পালন করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে আদমজী ইপিজেডের জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) আহসান কবির জানান, রাজস্ব বিভাগের ছোটখাটো সমস্যা হয়েছে। তা তারা সমাধান করবে।
বিক্ষোভের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে সাংবাদিকরা গেলে তাদের সাথে এ ব্যপারে কোন বক্তব্য দিতে রাজী হয়নি ইপিজেডের কাস্টমস (শুল্ক) বিভাগের সহকারী কর্মকর্তা আবুল হোসেন ও জাকির হোসেন শেখ।
এদিকে এ আন্দোলনের কারণে কাস্টমস বিভাগের সহকারী কর্মকর্তা আবুল হোসেন ও জাকির হোসেন শেখকে আদমজী ইপিজেড থেকে প্রত্যাহারের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। সেই আশ্বাসে কাজে ফিরেছেন সিএন্ডএফ কর্মচারীরা।