ফতুল্লায় কুতুবপুর ইউনিয়নের মাহমুদপুর এলাকার তাজউদ্দিন বাজার থেকে করিম মার্কেট পর্যন্ত পাকা রাস্তায় বছরের প্রায় ৬ মাসই জলাবদ্ধতা থাকে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সুদৃষ্টি নেই বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
এছাড়া দুর্ভোগ থেকে বাঁচতে এবং নাগরিক সুবিধা পাওয়ার জন্য ইউনিয়ন পরিষদ থেকে এলাকাটি সিটি কর্পোরেশনের আওতাভুক্ত করারও দাবি স্থানীয়দের। কৃত্রিম বাঁধ সৃষ্টি করে মাছ চাষ, অনুন্নত ড্র্রেনেজ ব্যবস্থা এবং জনপ্রতিনিধিদের অবহেলাকেই এ রাস্তায় জলাবদ্ধাতার প্রধান কারণ হিসেবে মনে করছেন এলাকাবাসী। এর ফলে বিগত কয়েক বছর ধরে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে এলাকাবাসী।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, মাহমুদপুর এলাকার করিম মার্কেট থেকে তাজউদ্দিন মার্কেটের সামনের রাস্তাটিতে হাটু সমান পানি জমে আছে। পানি মাড়িয়ে চলাচল করছে বিভিন্ন যানবাহন। তাজউদ্দিন মার্কেট ঘেষেই অবস্থিত মাহমুদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। রাস্তার একপাশে শুড়কি ফেলে চলাচলের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
তবে এ কাজটি করা হচ্ছে ঐ এলাকার সাবেক মেম্বার মো. নজরুল ইসলামের উদ্যোগে। এছাড়া বিদ্যালয়ের বিপরীতে একটি ডোবায় কৃত্রিম বাঁধ সৃষ্টি করে মাছ চাষ করা হচ্ছে। করিম মার্কেটের দিকে ড্রেনেজ ব্যবস্থা থাকলেও ময়লা-আবর্জনাযুক্ত কালো পানি জমাট বেধে আছে ড্রেণটিতে।
অন্যদিকে তাজউদ্দিন মার্কেট হয়ে রাস্তার পাশে কোন ড্রেণেজ ব্যবস্থা নেই। যদিও মার্কেটটি সাথেই রয়েছে একটি খাল। তবুও পানি নামার জন্য ড্রেনেজের কোন ব্যবস্থা করা হয়নি।
মো. জজ মিয়া নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, বছরের ৫ থেকে ৬ মাসই এ রাস্তায় পানি জমে থাকে। বর্তমান মেম্বারকে একাধিকবার অবগত করা হলেও কোন প্রতিকার পাওয়া যায়নি।
জনপ্রতিনিধিরা কোন তথ্য-তালাশ নেয়না। চা দোকানদার গিয়াস উদ্দিন বলেন, পানি জমে থাকার কারণে রাস্তার বিভিন্ন স্থানে ছোট ছোট গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে প্রায়ই ছোটখাটো যানবাহন দুর্ঘটনার শিকার হয় এবং যাত্রীরা আহত হয়। গত শুক্রবার সকালেও ৩ জন পথচারী গুরুতর আহত হয়েছেন।
মুদী দোকানদার মো. জাকির হোসেন জানান, ৪ বছর পূর্বে প্রাবাস থেকে এসে রাস্তাটির এমন চিত্র দেখতে পাচ্ছি। এর মধ্যে কোন পরিবর্তন হয়নি। আব্দুর রব নামে আরেক দোকানদার বলেন, পাশেই একটি খাল রয়েছে। কিন্তু পানি যাওয়ার জন্য ড্রেণ নেই। এখানে ড্রেন প্রয়োজন। তিনি বলেন, আমরা অবহেলিত। জনপ্রতিনিধিরা কোন নজর দিচ্ছেনা। আমরা আমাদের এলাকাটিকে সিটি কর্পোরেশনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে ঐ এলাকার সাবেক মেম্বার মো. নজরুল ইসলাম বলেন, বিগত প্রায় ৫ বছর যাবৎ এ রাস্তাটির খুব খারাপ অবস্থা। স্থানীয় সাংসদ কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন, চেয়ারম্যানও কাজ শুরু করার জন্য বলেছেন।
তারপরও কোন কাজ করা হয়নি। মাহমুদপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রায় ৬শ শিক্ষার্থী রয়েছে। তারা পানি মাড়িয়ে কীভাবে পড়াশোনা করতে আসবে? তিনি আরো বলেন, আমি নিজ উদ্যোগেই রাস্তার কাজ শুরু করেছি। এতে যদি কেউ বাঁধাও দেয়, আমি পিছ পা হবো না। এলাকাবাসী আমাকে সহযোগীতা করছে।
এ ব্যাপারে কুতুবপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের বর্তমান মেম্বার আমির হোসেন সাগরের ব্যবহৃত মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি। এদিকে কুতুবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মনিরুল আলম সেন্টু বলেন, আমি ঐ ওয়ার্ডের মেম্বারকে বলেছি রাস্তাটির কাজ করার জন্য। এখন কি অবস্থা সেটা জানা নেই।