মহাসড়কে যাত্রী বহন করার অপরাধে প্রতিদিনই অসংখ্য অটো রিক্সা আটক করে কাঁচপুর হাইওয়ে থানা পুলিশ। কিন্তু জরিমানা বাবদ নির্ধারিত রেকার বিল ২ হাজার ৫০০ টাকা পরিশোধ করার পরও ছাড়া পায় না আটককৃত রিক্সা।
অভিযোগ রয়েছে, কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ওসিকে অতিরিক্ত ৪ হাজার টাকা দিলেই সব সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। আর ওসিকে দাবীকৃত টাকা না দিলে রেকার বিল পরিশোধ করার পরও ১৫ থেকে ২০ দিন পর্যন্ত আটককৃত রিক্সা আটকে রাখা হয়। চালক ও মালিকরা রীতিমত জিম্মি হয়ে পড়েছে গুনধর ওই ওসি মনিরুজ্জামানের কাছে।
এদিকে দীর্ঘদিন রিক্সা আটকে রাখার কারণে রিক্সার ব্যাটারিসহ মূল্যবান যন্ত্রাংশ নস্ট হয়ে যায়। ফলে রিক্সা ছাড়িয়ে নেয়ার পরও তা মেরামত করতে আরও টাকা গুনতে হয় মালিকদের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অটো রিক্সা চালক ও মালিকদের অভিযোগ, প্রতিদিনই মহাসড়কের আশেপাশে থেকে হাইওয়ে পুলিশ অটো রিক্সা ধরে ডাম্পিংয়ে নিয়ে যায়। নিয়ম অনুযায়ী জরিমানা আড়াইহাজার টাকা হলেও হাইওয়ে পুলিশকে দিতে অতিরিক্ত ৪ হাজার ২শ’ টাকা। তাদের চাহিদামত টাকা না দিয়ে আইন অনুযায়ী আড়াই হাজার টাকা দিলে অটো রিক্সা ফেরত দেয়না হাইওয়ে পুলিশ।
অন্যদিকে চাহিদা মাফিক ৪ হাজার ২শ’ টাকা দিলেই সাথে সাথে অটো রিক্সা ফেরত দেয় পুলিশ। অটো রিক্সা চালক ও মালিকরা আরো বলেন, কথিত ডাম্পিংয়ের দায়িত্বে থাকা কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ওসি মনিরুজ্জামান মনির ও টিআই মেহেদী হাসানের খুব কাছের লোক দালাল ইসমাইলের মাধ্যমে এ অতিরিক্ত টাকাটা নেওয়া হয়।
এদিকে গত ৩ সপ্তাহে করোনা থেকে সুরক্ষিত রাখতে লকডাউন ঘোষণা করা হলেও সরকারী কঠোর নির্দেশনা উপেক্ষিত হয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল মোড়, সাইনবোর্ড ও কাঁচপুর এলাকায়।
লকডাউনের ৪র্থ দিন থেকে শিমরাইল মোড়ে হাইওয়ে পুলিশ বক্সের চারপাশকে ঘিরেই হাইওয়ে পুলিশের সামনে প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাস গুলোতে দূরপাল্লার যাত্রী বহন করেছে চালকরা।
স্টপিজ প্রতি ৬শ’ থেকে ১ হাজার ৫শ’ টাকাও ভাড়া আদায় করেছে কাউন্টার শ্রমিক ও চাঁদাবাজ। প্রতি গাড়িতে গাদাগাদি করে তোলা হয়েছে যাত্রী। হাইওয়ে পুলিশের সামনেই এভাবে লকডাউনের নির্দেশনা উপেক্ষিত করে অসংখ্য মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার, অ্যাম্বুলেন্স, লোকাল বাস ও পিকাপ ভ্যানসহ বিভিন্ন পরিবহনে বিভিন্ন জেলার যাত্রী বহন করেছে চালকরা। এতে প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে হাইওয়ে থানা পুলিশের কার্যক্রম।
অভিযোগ রয়েছে, কাউন্টার শ্রমিক ও চাঁদাবাজদের সাথে হাইওয়ে থানা পুলিশের যোগসাজশেই যাত্রী বহন করছে চালকরা। এতে করে লাভবান হচ্ছে হাইওয়ে থানা পুলিশ ও চাঁদাবাজরা, আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে সাধারণ যাত্রীরা। হাইওয়ে পুলিশ দু’একটি গাড়ীর কাগজ নিলেও পরে তা টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেয়ার অভিযোগ করে গাড়ীর চালকরা।
একটি সূত্র জানায়, যাত্রী বহনের ক্ষেত্রে হাইওয়ে থানা পুলিশকে গাড়ি প্রতি অর্থ প্রদান করে কাউন্টারের শ্রমিক ও চাঁদাবাজরা।
কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ওসি মো. মনিরুজ্জামান মনির অভিযোগগুলো সত্য নয় বলে বলেন, আমি এ বিষয়ে কোন কিছুই জানিনা। যদি কেউ আমার নাম করে করে থাকে প্রমান পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।