নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

সোমবার,

৩১ মার্চ ২০২৫

ফতুল্লায় চাঁদা না পেয়ে ব্যবসায়ীকে অপহরণ, উদ্ধার করলো এলাকাবাসী

নারায়ণগঞ্জ টাইমস

প্রকাশিত:২০:২০, ৪ মার্চ ২০২৫

ফতুল্লায় চাঁদা না পেয়ে ব্যবসায়ীকে অপহরণ, উদ্ধার করলো এলাকাবাসী

সন্ত্রাসী উৎস

ফতুল্লায় দাবীকৃত চাঁদা না দেয়ায় শরীফ মোল্লা নামক এক ইট বালুর ব্যবসায়ীকে অপহরণ করেছে সন্ত্রাসীরা। পরে এলাকাবাসী সংঘবদ্ধ হয়ে ওই ব্যবসায়িকে উদ্ধার করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার রাতে। 

জানা গেছে, সোমবার রাত আনুমানিক দশটার সময় ব্যবসায়ী শরীফ মোল্লাকে দূর্র্ধষ মাদক কারবারী এবং সন্ত্রাসী উৎস তার দলবল নিয়ে অস্ত্রের মুখে একটি মাইক্রোবাসে তুলে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে ফতুল্লার ইসদাইর কাপুইরাপট্টি এলাকায় আইসক্রিম ফ্যাক্টরীর পেছনে নির্জন মাঠে নিয়ে গিয়ে হাত পা বেঁধে পিটিয়ে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপন দাবি করা হয়। 

শরীফ মোল্লাকে দিয়ে তার পরিবারের কাছে ফোন করিয়ে এই টাকা দাবি করে অপগরণকারীরা। তখন শরীফ মোল্লার স্ত্রীর বড় ভাই কামরুল মেম্বার বিষয়টি এলাকাবাসীকে জানালে এলাকাবাসী সংঘবদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে শরীফ মোল্লাকে উদ্ধার করে। এ সময় বহু লোকের উপস্থিতি টের পেয়ে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। 

ভূক্তভোগী শরীফ মোল্লা জানিয়েছেন, বেশ কিছুদিন ধরেই মাদক ব্যবসায়ী উৎস তার বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে তার কাছে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছে। তিনি টাকা দিতে অস্বীকার করায় দুইদিন আগে উৎস এসে তার ইট বালু পরিবহনের নসিমন গাড়িটি নিয়ে যায়। পরে পুলিশের সহায়তায় তিনি গাড়িটি উদ্ধার করেন।

এতে আরো ক্ষুব্দ হয়ে উৎস ও তার বাহিনী তাকে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে টাকা দাবি করে এবং মারধোর করে। পরে এলাকাবাসীর সহায়তায় তিনি প্রানে বেঁেচ যান। কিন্তু এখন তিনি তার পরিবার পরিজন নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।

এদিকে এলাকাবাসী জানিয়েছে, একজন শীর্ষ যুবদল নেতার নাম ভাঙ্গিয়ে নতুন করে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে সন্ত্রাসী উৎস। আগে সে আওয়ামী লীগের এক নেতার নাম ভাঙ্গাতো। এই সন্ত্রাসী প্রতিদিনই ফতুল্লা থানার গাবতলী এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে চলেছে। গত এক সপ্তাহে তিনটি বাড়িতে গিয়ে চাঁদার দাবিতে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে। রাস্তা ঘাটে প্রকাশ্যে যাকে তাকে মারধর করছে। মাসদাইর কাবরস্থান থেকে শুরু করে পঞ্চবটি পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশে দোকানপাটে চাঁদাবাজী করছে।

ফলে ওই এলাকার মানুষ এই সন্ত্রাসীর অত্যাচারে একেবারে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। গাবতলী এলাকায় কামরুল মেম্বার, মনির হোসেন, জামাই কামরুল, তুহিন সহ আরো অনেকের বাড়িতে গিয়ে পাঁচ লাখ টাকা করে চাঁদা দাবি করেছে। এতে গাবতলী এলাকায় সাধারণ মানুষের মাঝে আতংক ছড়িয়ে পড়েছে।

প্রসঙ্গত এই উৎস নারায়ণগঞ্জের একজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। সে অপর মাদক ব্যবসায়ী পেটকাটা রকির সহযোগী। বিগত প্রায় এক যুগ ধরে এরা মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত এবং বহুবার মাদক সহ গ্রেফতারও হয়েছেন। কয়েক মাস আগে ৫০ কেজি গাজা সহ কুমিল্লায় গ্রেফতার হয়েছিলো এই উৎস। কিন্তু জামিনে বেরিয়ে এসে এখন সে যুবদলের পরিচয় দিচ্ছে।

যদিও এই সন্ত্রাসী কোনো দলের কোনো পদে নেই। দিনের পর দিন ত্রাস সৃষ্টি করে চলেছে। ফলে এখনই আইনশৃংখলা বাহিনী কঠোর ব্যবস্থা না নিলে এই সন্ত্রাসীবাহিনী এলাকায় আরো অঘটন ঘটাবে বলে এলাকাবাসী মনে করছে।