অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ, ফাইল আটকে রাখা, অর্থের বিনিময়ে মিটার প্রদানসহ ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগের প্রেক্ষিতে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ ডিপিডিসি এনওসিএস শাখার উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী বেলায়েত হোসেন ও সহকারী প্রকৌশলী সারোয়ার এ আলমকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারী) দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জ ডিপিডিসি এনওসিএস এর নির্বাহী প্রকৌশলী অমিত অধিকারী প্রত্যাহারের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, গত সোমবার (৬ জানুয়ারী) ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি)-এর প্রধান কার্যালয় থেকে প্রেরিত চিঠিতে তাদেরকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
অপরদিকে, সোমবার বেলা ১১টার দিকে বিদ্যুৎ সংযোগে ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগে সিদ্ধিরগঞ্জ ডিপিডিসি-এর কার্যালয়ে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের সমন্বিত নারায়ণগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক তুষার আহমেদ, সহকারি পরিচালক বেলায়েত হোসেন ও উপ-সহকারী পরিচালক মশিউর রহমানের নেতৃত্বে একটি এনফোর্সমেন্ট টিম এই অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযোগ ছিল, বিদ্যুতের সংযোগ পেতে গ্রাহকদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করা হচ্ছে এবং নথিপত্র ইচ্ছাকৃতভাবে আটকে রাখা হচ্ছে।
অভিযান চলাকালে দুদকের টিম গ্রাহক রেজিস্টার বই, সংযোগ আবেদনপত্র, বিদ্যুৎ বিলের নথি এবং সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র জব্দ করে। তারা উপস্থিত কর্মচারী এবং কর্মকর্তাদের কাছ থেকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। একইসঙ্গে সেবা নিতে আসা গ্রাহকদের কাছ থেকেও অভিযোগ শোনা হয়।
দুদকের টিম জানিয়েছে, প্রাপ্ত নথি এবং বক্তব্য বিশ্লেষণের ভিত্তিতে তদন্তের পর অভিযোগ প্রমাণিত হলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অভিযানের সময় উপস্থিত গ্রাহকরা জানান, নতুন সংযোগ পেতে মাসের পর মাস ঘুরতে হয়। টাকা না দিলে ফাইল এগোয় না। দুদকের এই পদক্ষেপে তারা আশাবাদী যে, দুর্নীতিগ্রস্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দুদক সূত্র জানিয়েছে, অভিযানের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর এই ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনার প্রক্রিয়া শুরু হবে।
ডিপিডিসির সিদ্ধিরগঞ্জ কার্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরেই অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। এ ঘটনায় দুদকের এই সরাসরি অভিযান প্রমাণ করে, বিদ্যুৎ সংযোগের নামে চলা দুর্নীতির জাল ভেঙে ফেলার সময় এসেছে।