ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে হাসিনা সরকারের পতনের পর গা ঢাকা দিলেও ফের চর কাশিপুর লালনের আখড়ায় ফিরে এসেছে আজমেরী ওসমানের ঘনিষ্ঠ সহযোগী যুবলীগ নেতা সজীব-রুবেল ও তার বাহিনীরা।
ছাত্র আন্দোলনে পারভেজ নিহতের ঘটনার ফতুল্লা থানা দায়েরকৃত হত্যা মামলার আসামি হয়েও প্রকাশ্যে কাশীপুরে বীরদর্পে ঘুরে বেড়িয়ে পুনরায় আধিপত্য নেওয়ার জন্য বেপরোয়া হয়ে উঠছে।
এতে করে এলাকায় শান্তি শৃংখলা ভঙ্গসহ যে কোন ধরনের নাশকতা কর্মকান্ডে আতংকে ভুগছেন এলাকাবাসী। এরআগেও আজমিরী ওসমানের ঘনিষ্ঠ সহযোগী এই সন্ত্রাসী দল ক্ষমতায় থাকাকালীন বিসিক, শাসন গাওসহ নবীনগর এলাকায় তাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল।
স্থানীয়রা জানান, হত্যা মামলার আসামি সন্ত্রাসী সজীব বাহিনীর অন্যতম রুবেল দেওয়ান রাজা রনি, ইয়াবা মুন্না, কাইল্লা সুমন, ফরমা ইমরান, ওলা মাসুদ এর বাগিনা,কাইল্লা রিপন, রিদয় ও আরো কয়েকজন কে প্রায়ই দেখা যায় চর কাশিপুর লালনের আখড়ায়।
৫ আগস্ট সরকার পতনের আগে ওরা সব সময় এখানে আসত। ওরা এখান থেকে মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করত। আর কিছুদিন পরপরই কাউকে না কাউকে ধরে এনে এখানে মারধর করত। এখানে ছিল তাদের টর্চার সেল। ইদানিং তাদের আবার আনাগোনা দেখা যাচ্ছে। আমরা চর কাশিপুরের শান্তির প্রিয় মানুষেরা চাই শান্তি।
ওরা যাতে এখানে বসে মাদকের ব্যবসা না করতে পারে। আমরা এলাকাবাসী প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি যাতে ওদের কারণে আমাদের সন্তানেরা নষ্ট না হয়। এই বাহিনী হত্যা মামলার আসামিদের গ্রেপ্তার করে এলাকায় শান্তি ফিরিয়ে দিতে সাহায্যে করুন।
জানা যায়, জুট সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি, ভূমিদস্যু, টেন্ডারবাজি, মাদক ব্যবসা এমন কোন অপকর্ম ছিল না তাদের হাতে না হতো। দল ক্ষমতায় থাকা সময় আজমেরী ওসমানের নামে পুরো এলাকায় চাঁদাবাজি, মাদক, ঝুট সন্ত্রাস ও ভুমি দখলসহ নানা অপরাধ কর্মকান্ডে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে বেড়াতো সজীব, মুন্না ও তার বাহিনী।
অনেক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে বিভিন্ন উপায়ে নিয়মিত চাঁদা নিতো সজিব। তাদের অত্যাচারে ওই অঞ্চল গুলোর সকল মানুষ ব্যবসায়ীরা অসহায়ত্ব ছিল।
সজীব ও তার বাহিনীর বিরুদ্ধে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সময় (৫ আগস্ট) নির্দেশ, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত থেকে ফতুল্লায় প্রকাশ্যে এক ছাত্র পারভেজকে পিটিয়ে হত্যা করার অভিযোগে ফতুল্লা থানায় একটি হত্যা মামলা হয়।
এজাহারভুক্ত আসামি হয়েও প্রকাশে অপরাধ কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে এই বাহিনী। বিগত কয়েকদিন অতিবাহিত হলেও উল্লেখিত এই সন্ত্রাসী বাহিনী ভূমিদস্যু, হত্যা মামলার আসামি আজমির ওসমানের ঘনিষ্ঠ সহচর যুবলীগ নেতা সজীব ও তার বাহিনীদের প্রকাশ্যে ঘুরাফেরা করলেও পুলিশ তাদের গ্রেফতার করছে না।
পুলিশের নিরবতায় মাদক, ঝুট ব্যবসা নিয়ন্ত্রন, চাঁদা আদায়, জোরপূর্বক মানুষের জমি দখলসহ নানা অপরাধ কর্মকান্ডে ফের বেপোরোয়া হয়ে উঠেছে। এই বিষয়টি নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, সজীব ও মুন্না বাহিনীর অস্ত্রের দাপটের সামনে সামনে আমরা নিরূপায় ছিলাম। এখনও তাদের ভয়ে কেউই মুখ খুলতে পারছিনা। কারণ, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় এই সন্ত্রাসীরা অস্ত্র হাতে নিয়ে ছাত্রদের উপর প্রকাশ্যে হামলা করেছিল।
প্রকাশ্যে ছাত্রদের উপর হামলা করে এক স্কুল ছাতকে নিহত করেছিল ফতুল্লা থানায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার পরও প্রকাশ্যে ঘুরা ফেরা করছে। পুলিশ তাদের গ্রেফতার করছে না। এতেই বুঝা যায়, তাদের পেছনে অদৃশ্য শক্তির উৎস রয়েছে।
কিছুদিন আগে চর বক্তাবলীতে দেওয়ান স্টীল মিল দখলের চেষ্টা চালিয়েছে মুন্নাসহ অন্যান্যরা। এ ঘটনায় ফতুল্লা মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন ওই কারখানার স্বত্তাধিকারী ইমরান।
এলাকাবাবাসীর দাবি সজীব, মুন্নাসহ এ বাহীনির সকলের কাছে অস্ত্র রয়েছে। তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে সকল অস্ত্র উদ্ধার করা হউক। নচেৎ এলাকা ফের অশান্ত হয়ে উঠবে।