নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

শুক্রবার,

২৭ ডিসেম্বর ২০২৪

ছাত্র আন্দোলনে নিহত হাফেজ  সোলাইমানের মরদেহ উত্তোলনে বাধা

নারায়ণগঞ্জ টাইমস:

প্রকাশিত:১৮:২১, ৯ ডিসেম্বর ২০২৪

ছাত্র আন্দোলনে নিহত হাফেজ  সোলাইমানের মরদেহ উত্তোলনে বাধা

বাদি ও পরিবারের বাধার কারণে ময়না তদন্তের জন্য উত্তোলন করা যায়নি বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত হাফেজ সোলাইমানের মরদেহ। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের মাদানিনগর কবরস্থানে ঘটনাটি ঘটে। 

এর আগে আদালতের নির্দেশে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের উপস্থিতিতে সোলাইমানের মরদেহ উত্তোলনের জন্য মাদানিনগর কবরস্থানে আসেন তদন্তকারী সংস্থা অপরাধ তদন্ত বিভাগের পরিদর্শক মোসা. হাসিনা বেগমসহ সংশ্লিষ্টরা। এসময় নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার মোঃ তামশিদ ইরাম খান।

জানা যায়, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গত ৫আগষ্ট দুপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের শিমরাইল এলাকায় ডাচ-বাংলা ব্যাংকের সামনে গুলিতে নিহত হয় হাফেজ সোলাইমান। পরবর্তীতে ওই ঘটনায় গত ২২ আগষ্ট সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় নিহতের বোন জামাতা শামীম কবির বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ]মামলাটির তদন্তভার দেয়া হয় অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি)। 

তারই প্রেক্ষিতে সোমবার দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জের মাদানি নগর মাদ্রাসা সংলগ্ন কবরস্থান থেকে আদালতের নির্দেশে মরদেহ উত্তোলনের জন্য আসে সিআইডি। এসময় খবর পেয়ে নিহত সোলাইমানের পরিবারের লোকজন ঘটনাস্থলে আসে। এবং মরদেহ উত্তোলনে আপত্তি জানিয়ে বাধা প্রদান করেন।

তখন ঘটনাস্থলে উপস্থিত তদন্তকারী কর্মকর্তা এবং নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মামলার বাদী শামীম কবিরসহ পরিবারের লোকদের দুদিন সময় দিয়ে আদালতের মাধ্যমে ব্যাবস্থা নেয়ার কথা বলে মরদেহ উত্তোলন না করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। 

এদিকে, কবরে লাগানো নাম ফলকে দেখা যায় এতে উল্লেখ রয়েছে গত ৫ আগষ্ট দুপূরে রাজধানীর যাত্রবাড়ী এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে সোলাইমান নিহত হয়েছেন। 

ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাংবাদিকদের মামলার বাদী নিহত হাফেজ সোলাইমানের বোন জামাতা শামীম কবীর জানান, মামলাটির তদন্তকারী সংস্থা সিআইডি থেকে আমাদের সাথে আগে যোগাযোগ করা হয়েছিলো মরদেহ উত্তোলনের জন্য। আমরা বরাবরই মরদেহ উত্তোলনের বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে আসছিলাম। 

পরবর্তীতে নিহত সোলাইমানের বাবা মাকে বিষয়টি জানাই। তারাও মরদেহ উত্তোলনের বিষয়ে আপত্তি জানায়। কিন্তু আজকে যে তারা আদালতের মাধ্যমে সকল কাজ সম্পন্ন করে মরদেহ উত্তোলনের জন্য আসছে সেটা আমাদের জানা ছিলো না। আমরা খবর পেয়ে আজকে এখানে আসি। বিষয়টি নিয়ে আপত্তি জানাই। 

তখন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট এবং তদন্তকারী কর্মকর্তা আমাদেরকে আদালতের মাধ্যমে বিষয়টি এগিয়ে নেয়ার কথা জানান। এসময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে শামীম কবির বলেন, মরদেহ উত্তোলন ছাড়া যদি কোন পক্রিয়া থাকে তবে আমরা মামলা চালিয়ে যাবো। আর যদি মরদেহ উত্তোলনই করতে হয় তাহলে আমরা মামলাটি আর চালাবো না, প্রয়োজনে প্রত্যাহার করে নিবো মামলা।

এবিষয়ে দায়িত্বে থাকা নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট সহকারী কমিশনার মোঃ তামশিদ ইরাম খান জানান, নিহতের পরিবারের কাছ থেকে সময় চাওয়া হয়েছে। তাই আমরা তাদেরকে সময় দিয়েছি। উনারা আদালতে যাবেন। আদালতের সিদ্ধান্তে পরবর্তী ব্যাবস্থা নেয়া হবে। 

এদিকে মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) পরিদর্শক মেসাঃ হাসিনা বেগম জানান, নিহত সোলাইমানের পরিবার মরদেহ উত্তোলনে রাজী নয়। তাই তারা সময় চেয়েছে। বিষয়টি আদালতের মাধ্যমে সমাধানের জন্য তাদের সময় দেয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, কবরের নাম ফলকে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গত ৫ আগষ্ট দুপূরে রাজধানীর যাত্রবাড়ী এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে সোলাইমান নিহত হয় উল্লেখ থাকলেও সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল মোড় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের সামনে ঘটনাস্থল দেখিয়ে ২২ আগষ্ট শেখ হাসিনাকে প্রধান করে ৫১ জনের নাম উল্লেখ করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন নিহতের ভগ্নিপতি শামীম কবির। 

নিহত সোলাইমান মাদারীপুর জেলার রাজৈর থানার কবিরাজপুর গ্রামের মিরাজের ছেলে। সে ঢাকার মিরপুর এলাকার দারুর রাসাত মাদ্রাসার শিক্ষাথী ছিলেন বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।