নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

বৃহস্পতিবার,

২৬ ডিসেম্বর ২০২৪

১৭ বছরে হাতিয়ে নিয়েছে ৫ কোটি টাকা

চিটাগাং রোড রেন্ট-এ কার স্ট্যান্ডে চাঁদাবাজি নিয়ে নয়া কৌশলে আওয়ামী চাঁদাবাজদের দোসররা

নারায়ণগঞ্জ টাইমস:

প্রকাশিত:২২:০২, ৩০ নভেম্বর ২০২৪

চিটাগাং রোড রেন্ট-এ কার স্ট্যান্ডে চাঁদাবাজি নিয়ে নয়া কৌশলে আওয়ামী চাঁদাবাজদের দোসররা

সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল মোড়ে চাঁদাবাজির অবৈধ উৎসস্থল খ্যাত চিটাগাংরোড রেন্ট-এ কার স্ট্যান্ড দখল নিতে মরিয়া আওয়ামী চাঁদাবাজদের দোসররা। গত ১৭ বছর ধরে রেন্ট-এ কার স্ট্যান্ডের সাধারণ গাড়ির মালিকদের জিম্মি করে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে চাঁদাবাজি করে আসছিল একটি মহল। 

গত ৫ আগষ্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সারাদেশে সকল ধরণের চাঁদাবাজী ও নৈরাজ্য বন্ধ থাকলেও থেমে নেই চিটাগাং রোড রেন্ট-এ কার স্ট্যান্ডের চাঁদাবাজি। বিগত দিনে ফেসিষ্ট আওয়ামীলীগের সুবিধাভোগী নরপিশাচ হায়নার দলেরা সরকারী জমিতে অবৈধভাবে গড়ে তোলা চিটাগাং রোড রেন্ট-এ কার স্ট্যান্ড থেকে বিগত ১৭ বছরে প্রায় কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে  চাঁদাবাজ সর্বদলীয় সুবিধাভোগী রেন্ট-এ কার স্ট্যান্ডের কথিত সভাপতি সালাউদ্দিন।

অনুসন্ধনে উঠে এসেছে, চিটাগাং রোড রেন্ট-এ কার স্ট্যান্ডে প্রয় ২০০ টির বেশী গাড়ী রয়েছে। প্রতি গাড়ী থেকে ঘরে এক হাজার টাকা করে চাঁদা উঠালে প্রতি মাসে টাকার পরিমান ২ লাখ, তা এক বছরে গিয়ে দাঁড়ায় ২৪ লাখ, গত ১৭ বছরে চাঁদার পরিমান প্রায় ৫ কোটি টাকা। 

রেন্ট-এ কার স্ট্যান্ডের একাধিক গাড়ীর মালিক ও চালকরা জানায়, চাঁদাবাজ সর্বদলীয় সুবিধাভোগী সেই সালাউদ্দিন, সাত খুনের ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত আসামি নুর হোসেনের হাত ধরে তার অপরাধ জগতের ডন হিসেবে উথান হলেও নুর হোসেন গ্রেপ্তারের পর বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রূপে বিভিন্ন জনকে ম্যানেজ করে তার অপরাধ কর্মকান্ড অব্যাহত রেখেছে। 

পরবর্তীতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি মজিবুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক হাজী ইয়ছিন মিয়ার অন্তত ঘনিষ্টজন হওয়া তাদের প্রভাব খাটিয়ে সে দীর্ঘ দিন চিটাগাং রোড রেন্ট-এ কার স্ট্যান্ডে নেতৃত্ব দিয়ে চাঁদাবাজির নিয়ন্ত্রন করছিল। সেই চাঁদার ভাগ আওয়ামীলীগের নেতা থেকে শুরু করে পুলিশের পকেট পর্যন্ত ভারি হয়েছে। 

তবে শেষ পর্যন্ত নিজেকে আর রক্ষা করতে পারেননি। গত ১১ সেপ্টেম্বর সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় দায়েরকৃত রাব্বি মিয়া হত্যা মামলায় আসামি করা হয় চাঁদাবাজ সালাউদ্দিনকে। এরপর থেকে সালাউদ্দিন আত্মগোপনে চলে যায়, সে চলে গেলেও তার রেখে যাওয়া অুনসারীরা চিটাগাং রোড রেন্ট-এ কার স্ট্যান্ড দখল নিতে মরিয়া হয়ে উঠে। 

তাদের মধ্যে রয়েছে চাঁদাবাজ টিটু, মিনাল শেখ, আওলাবন এলাকার সুদ কারবারি শফিক, ওসমান,শুক্কুর, মিজান খোরশেদসহ কয়েকজন চাঁদাবাজ সালাউদ্দিনের হয়ে বিভিন্ন গাড়ির মালিক ও চালকদের হুমকি-ধমকি দিয়ে চাঁদা আদায়ের জন্য পায়তারা করছিল।

তবে তাদের অভিযোগ সালাউদ্দিন পালিয়ে গেলেও থেমে থাকেনি এই চাঁদাবাজ চক্রটি। আর এই চাঁদাবাজির সাম্রাজ্য অব্যাহত রাখতে আত্মগোপনে থেকেও কলকাঠি নাড়ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে। 

সুদ কারবারি আওলাবন এলাকার আওয়ামীলীগ নেতা শফিক এক সময় শাহাজালাল বাদল ও নুরুদ্দিন মিয়ার আস্তাবাজন হওয়া বিগত সময়ে খমতার দাপটে বহু অপকর্মের হুতা ছিলেন তিনি। ৫ আগষ্টের পর আওয়ামীলীগ নেতা শফিক অর্থের বিনিময়ে বনে যান বিএনপি তরুন দলের নেতা তার এমন কর্মকান্ডে বিব্রত বিএনপির সাধারণ কর্মীরা। 

তারা আরো বলেন, গত ৫ আগষ্টের পর সালাউদ্দিনসহ তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে একাধিক বার “চাঁদাবাজ সর্বদলীয় সুবিধাভোগী সেই সালাউদ্দিন ভোল পাল্টিয়ে বিএনপিতে যোগ দিয়ে চাঁদাবাজি” এমন শিরোনামে পত্রপত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হলে শটকে পরে সালাউদ্দিনের অনুসারীরা তখন  রেন্ট-এ কার স্ট্যান্ডের সকল গাড়ীর মালিক ও চালকরা একত্রিত হয়ে সিদ্ধান্ত নেয় সালাউদ্দিন ও তার অনুসারীদের আর চাঁদা দিবেনা। 

এরপর থেকে গাড়ীর মালিক ও চালকদের এমন সিদ্ধান্ত নিলে শুরু হয় তাদের বিরুদ্ধে চক্রান্ত। গাড়ির মালিক পক্ষের মধ্যে বিভেদ সৃস্টি করে আওয়ামী চাঁদাবাজ দোসররা। এতে করে তাদের মধ্যে বিভক্ত করে রেন্ট-্এ-কার দখলের চেষ্টা চালালে বিষয়টি টের পেয়ে পায় মালিক ও চালকরা। 

মালিক ও পরিবহন চালকরা বলছেন, এতে ব্যার্থ হলেও থেমে নেই আওয়ামী চাঁদাবাজ দোসরদের ষড়যন্ত্র। আওয়ামী নরপিশাচ হায়নার দলেরা এই চাঁদাবাজ চক্রটি তাদের স্বার্থ হাসিল করার জন্য ফের উঠে পড়ে লেগেছে। বিভিন্ন মহল ও গণমাধ্যমে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে অপ প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে।  

গনমাধ্যম কর্মিদের ভুল তথ্য দিয়ে চিটাগাং রোড রেন্ট-এ কার স্ট্যান্ডের সাধারণ গাড়ির মালিকদের হয়রানি করার চক্রান্ত করছে। যারা গণমাধ্যমে এই মিথ্য তথ্য দিয়ে অপপ্রচার করেছে তারাই দীর্ঘদিন ধরে যখন যে সরকার ক্ষমতায় থাকে তখন সে দলের শীর্ষ নেতাদের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে এ স্ট্যান্ডের নিয়ন্ত্রণ করেছিলো।

বিগত সময়ে এ স্ট্যান্ডে নতুন গাড়ী ভর্তি করতে হলে সালাউদ্দিকে পাঁচ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা চাঁদা দিতে হয়। এছাড়াও প্রতি মাসে হাইয়েস গাড়ী ও নোয়া গাড়ী থেকে ১৪শ’ টাকা এবং প্রাইভেট কারের জন্য ১ হাজার টাকা করে চাঁদা আদায় করতো। 

সাধারন গাড়ির মালিক ও পরিবহন চালকারা ওই আওয়ামী চাঁদাবাজ দোসরদের অপপ্রচারের প্রতিবাদ করে যারা দীর্ঘদিন ধরে চাঁদাবাজি করেছে তাদেরকে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থার দাবি জানান।

বর্তমানে আমরা সকলে মিলে নিজেদের মধ্যে সমঝোতা করে এ স্ট্যান্ডটি পরিচালনা করছি। এ নিয়ে যদি কেউ ষড়যন্ত্র করে আমাদের রুটি রোজগারের ব্যাঘাত করে কাউকে ছাড় নয়।