ক্ষতিগ্রস্থ জমির মালিকদের কয়েকজন
ঢাকা (কাঁচপুর)-সিলেট মহাসড়কের ৪ লেন সড়ক উন্নতিকরণ প্রকল্পের অধিগ্রহণকৃত ভূমির ন্যায্য ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়েছে ৩২ জন ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিক। এ নিয়ে তারা জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত আবেদন এবং মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে। দাবী আদায় না হলে কঠোর কর্মসূচির প্রস্তুতি নিচ্ছে ক্ষতিগ্রস্থ জমির মালিকরা। তবে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, আপত্তি থাকলে বিস্তারিত জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ক্ষতিগ্রস্থ জমির মালিকদের মধ্যে বারেক মোল্লা, ডাক্তার তুহিন মিয়া, মুরাদ মিয়া, মাসুদা বেগম, মোসলেমা বেগম জানান, সাপোর্ট টু ঢাকা-(কাঁচপুর) সিলেট তামাবিল মহাসড়ক চার লেন উন্নীত করন এবং উভয় পাশের সার্ভিস লেন নির্মান প্রকল্পের জন্য দুপ্তারা ও পাঁচ রুখি মৌজায় সরকার জমি অধিগ্রহনের সিদ্ধান্ত নেয়। সেই মোতাবেক প্রস্তাবিত চার লেনের উপরে আমাদেরকে ভুমি অধিগ্রহনের নোটিশ প্রদান করেন। জেলা প্রশাসনের অধিগ্রহন কর্মকর্তা যাচাই বাছাই করে অধিগ্রহনকৃত ভূমির মুল্য প্রস্তাব করেন। প্রস্তাবিত মূল্য দেখে আমরা হতবাক হই, আমরা দেখতে পাই যে আমাদের ভূমির ন্যায্য মুল্য নির্ধারণ করা হয়নি। কিন্ত আমাদের একই মৌজায় পাশাপাশি দাগের অন্যান্য মালিকদের অধিগ্রহনকৃত জমির মূল্য কয়েকগুন বেশি নির্ধারন করা হয়েছে এবং টাকা হস্তান্তর করা হয়েছে। এক্ষেত্রে আমাদের ভূমির মূল্য কম দেখিয়ে আমাদের সাথে বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির সম্মুক্ষীন করা হয়েছে।
তারা আরও জানান, আড়াইহাজার-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আওয়ামীলীগ নেতা নজরুল ইসলাম বাবুর প্রভাব খাটিয়ে জেলা প্রশাসনের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজশে এমপি বাবুর অনুগত ও পছন্দের লোকদের উপযুক্ত মূল্য প্রদান করলেও আমরা ভিন্ন মতের হওয়ায় কোন যৌক্তিক কারণ ছাড়াই সম্পূর্ন অন্যায় ভাবে আমাদের উপযুক্ত মূল্য না দিয়ে আর্থিক ভাবে চরম ক্ষতিগ্রস্থ করা হয়। নজরুল ইসলাম বাবুর লোকজন আমাদেরকে জেলা প্রশাসনের প্রস্তাবিত মূল্য মেনে নিয়ে টাকা গ্রহন করার জন্য হুমকি-ধামকি ও চাপ প্রদান করেন। আমরা তাতে রাজি না হয়ে আত্মগোপনে থাকি। কারণ আমাদের পাশের জমি আর,এস ২৪৫ দাগে প্রতি একর ৭ কোটি ৭০ লাখ টাকা প্রদান করা হলেও আমাদের আর,এস ২৪৪ দাগের মূল্য নির্ধারন করা হয়েছে ২ কোটি ৪৩ লাখ ৩১ হাজার টাকা। এভাবে বহু মালিককে উপযুক্ত ক্ষতিপুরন থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। আমরা সরকারি উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য আমাদের একমাত্র জমিটুকু দিয়ে দিলে আমাদের কোন জমি অবশিষ্ট থাকবে না। সুতরং আমাদের শেষ সম্বলটুকুর ন্যায্য ক্ষতিপুরন না পেলে পরিবার পরিজন নিয়ে অসহায় ভাবে খোলা রাস্তায় জীবন যাপন করতে হবে। তাই সরকারের কাছে আমরা আমাদের জমির ন্যায্য ক্ষতিপূরণের দাবি জানাচ্ছি।
তারা অভিযোগ করেন, অধিগ্রহনের সময় ডোবা নালা জমি বাণিজ্যিক দেখিয়েছে। অথচ সড়কের পাশের ভরাট জমি ডোবা দেখিয়েছে।
তাই আমরা অধিগ্রহনকৃত জমির সঠিক মূল্য পুনরায় যাচাই বাচাই সাপেক্ষে প্রকৃত ন্যায্য ক্ষতিপূরন নির্ধারনের জন্য ২ সেপ্টেম্বর জেলা প্রশাসকের বরাবর লিখিত আবেদন করি। কিন্তু এই ব্যাপারে জেলা প্রশাসন কোন প্রকার পদক্ষেপ না নেওয়ায় আমরা ২৩ অক্টোবর মানবন্ধন করেছি। আমরা ন্যায্য ক্ষতিপূরণ না পেলে জীবন দিবো কিন্তু জমি দিবো না। প্রয়োজনে কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। এমনকি সড়কের নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিবো।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. জাহিদ হাসান সিদ্দিকী বলেন, আমি নতুন যোগদান করেছি, এ বিষয়ে তেমন কিছুই জানি না। তবে, যতটুকু জানি মৌজা অনুযায়ী মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। তারপরও তাদের যদি আপত্তি থাকে তাহলে তারা আসলে, তাদের আপত্তির বিষয়ে বিস্তারিত জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।