নারায়ণগঞ্জের এক শিল্পপতির বিরুদ্ধে স্বরাস্ত্র উপদেষ্টার কাছে অভিযোগ দেয়া হয়েছে। অভিযোগে ভুক্তভোগীরা ওই শিল্পপতির ভূমিদস্যুতার কথা তুলে ধরেছে। অভিযোগকারীরা হলেন ফতুল্লার মাসদাইর পাকাপুল এলাকার জাহাঙ্গীর হোসেন, হিরু হক এবং শিউলী আক্তার গং। আর অভিযুক্ত শিল্পপতি হলেন শোভন গ্রুপের মালিক আবু সিদ্দিক। এ অভিযোগে ফতুল্লা পুলিশের একজন এসআইয়ের কথাও রয়েছে।
স্বরাস্ত্র উপদেষ্টার কাছে অভিযোগে তারা জানান, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে সে সাবেক এমপি শামীম ওসমানের ছেলে অয়ন ওসমানের পালিত সন্ত্রাসী মাদক বিক্রেতা স্বপনের নেতৃত্বে ইব্রাহিম হাজীর ছেলে রনি, সোহেল সহ আরও সন্ত্রাসী দিয়ে আমাদের সম্পত্তি দখলের পায়তারা করছে। এমনকি কয়েকজনকে ওই শিল্পপতি কারখানার ওয়েস্টেজ মালের লোভ দেখিয়ে বলেছে, আগে আমার জায়গা দখল করো এরপর ওয়েস্টেজ পাবে।
গত ১৮ অক্টোবর রাতে আবু সিদ্দিক এক থেকে দেড়শ সন্ত্রাসীকে পাঠিয়ে আমাদের জায়গা থেকে সরে যেতে বলেছে। ওই সন্ত্রাসীরা আমাদের বলেছে ‘ এ জায়গা বস আবু সিদ্দিকের। আমরা যদি জায়গা না ছাড়ি আমাদেরকে কিলিং করে দিবে। এর আগে ১ অক্টোবর আমাদের জায়গার আম মোক্তার হাজী আলমগীর হোসেনকেও কয়েক দফা সন্ত্রাসী দিয়ে হুমকি-ধামকি দিয়েছে। এ ঘটনায় আলমগীর হোসেন ফতুল্লা মডেল থানায় অভিযোগ করলেও পুলিশ কোন ব্যবস্থা নেয়নি। উল্টো ১৮ অক্টোবর আমাদের হুমকি দেয়ার পর ফতুল্লা থানায় গেলে ওসি সাহেবের সামনে আলমগীর হোসেনের করা অভিযোগ প্রসঙ্গে এস আই মিজান বলেন, স্বপনতো ভালো মানুষ আগে মাদক বিক্রি করেছে। আমাদেরকে এসআই মিজান বলেন, আপনারা সিদ্দিক সাহেবের জায়গা দখল করে আছেন কেন, জায়গা ছেড়ে দেন। অথচ এসআই মিজান আমাদের জায়গার কাগজপত্রই দেখেনি। পরে আবার থানায় যোগাযোগ করলে ওসি সাহেব বলেছেন, জায়গা সম্পত্তির বিষয়ে তারা কিছু করতে পারে না। আমরা বলেছি, জায়গা নিয়ে আবু সিদ্দিক আদালতে মামলা করেছে। আমরা এ নিয়ে পুলিশের কাছে প্রতীকার চাইতে আসি নাই। সন্ত্রাসীদের হাত থেকে রক্ষা পেতে এসেছি।
অভিযোগে আরও জানানো হয়, শোভন গ্রুপের মালিক আবু সিদ্দিক এর আগেও স্থানীয় অনেকের জায়গা নানা কায়দায় দখল করেছে। তিনি গর্ব করে বলে থাকেন জায়গা কিনতে আমার খুব ভালো লাগে। তার প্রভাব প্রতিপত্তি দিয়ে প্রশাসন থেকে শুরু করে সন্ত্রাসী, নেতা সবই ম্যানেজ করে। তবে এ কথা সত্য আবু সিদ্দিক কারখানা মালিক হিসেবে শ্রমিক কর্মচারীদের কাছে জনপ্রিয়। কারণ তিনি তার শ্রমিক কর্মচারীর বেতন ভাতা নিয়মিত পরিশোধ করেন। তার এই গুণ ভূমিদস্যুতার কারনে ম্লান হয়ে গেছে।
হিরু হক জানান, স্বরাস্ত্র উপদেষ্টার কাছে দেয়া অভিযোগের অনুলিপি জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান, বিজেএমইএ এর প্রেসিডেন্ট, বিকেএমইএ এর প্রেসিডেন্ট, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক, নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার, নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক সহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে দেয়া হয়েছে। হিরু হক আশা করেন, অতীতে ক্ষমতার প্রভাব দেখাতে পারলেও বর্তমান সরকারের আমলে আবু সিদ্দিকের ভূমিদস্যুতার অবসান হবে।