মাদক ও কিশোগ্যাং এর বিষয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করলেও রহস্যজনক কারনে অধরা থেকে যাচ্ছে মূল হোতারা। মাদক ব্যবসায়ীদের উদ্ভব হয়েছে প্রতিটি এলাকায়, চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন প্রভাশালীদের শেল্টারে কিশোরদের দিয়ে মাদক ব্যবসা করাচ্ছে।
পাড়া মহল্লায় পুলিশের টহল জোরদার না থাকায় কোনো বাধা অতিক্রম না করেই নির্ভয়ে মাদক ব্যবসায়ীরা মাদক বেচা-কেনা ও সরবারহ করছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, পুলিশের অভিযান শিথিল থাকায় মাদক ব্যবসায়ীরা নির্ভয়ে মাদক ব্যবসা করে যাচ্ছে। তবে এলাকাগুলোতে মাদক ব্যবসায়ের নেপথ্যের লোকেরা ধরা ছোয়ার বাহিরে থেকে যায়।
ইয়াবা ব্যবসায় কিশোর বয়সের ছেলেরা জড়িয়ে পড়ছে আশঙ্কাজনক হারে। ফলে সমাজে ধীরে ধীরে অপরাধপ্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
রহস্যজনক কারনে অধরা থেকে যাচ্ছে মূল হোতারা। মাদক ব্যবসায়ীদের উদ্ভব হয়েছে প্রতিটি এলাকায়, চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন প্রভাশালীদের শেল্টারে কিশোরদের দিয়ে মাদক ব্যবসা করাচ্ছে।
বিভিন্ন কৌশলে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীদের হাতে। সিদ্ধিরগঞ্জের পাড়া-মহল্লায় দিন দিন যেনো বেড়েই চলছে মাদক ব্যবসায়ীদের ব্যবসা। হোম ডেলিভারি। ফোন দিলেই পৌঁছে দেয় মাদক। মাদক কারবারিদের উৎপাতে জনমনে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
মাদক ব্যাবসায়ীদের কাছে ফোন দিলেই মিলছে ফেন্সি, ইয়াবা, গাঁজা ও হিরোইনসহ বিভিন্ন মাদক। ধ্বংসের মূখে পতিত হচ্ছে তরুণ যুবসমাজ সহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ। অবাধে মাদকের ছড়াছড়ির ফলে এলাকায় চুরি, ছিনতাই সহ নানা অপরাধ কর্মকান্ড বেড়েই চলছে।
আর স্থানীয় একাধিক প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় চলছে এ মাদকের কারবার। তাদের শেন্টারে মহল্লায় মহল্লায় গড়ে উঠেছে মাদক বেচাকেনার একাধিক সিন্ডিকেট। এদের ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করারও সাহস পায়না। এরফলে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে এলাকাবাসীর দৈনন্দিন জীবনযাত্রা।
মাদক ব্যবসায়ীরা হলো-সিদ্ধিরগঞ্জের নাসিক ১নং ওয়ার্ডের মিজমিজি পাগলাবাড়ী এলাকার চিহ্নিত মাদকের ডিলার, মাদক মামলা সহ প্রায় ডজন মামলার আসামি আব্দুল হাই এর ছেলে মেহেদী ওরফে মাদকের ডিলার মেহেদী, মিজমিজি পাগলাবাড়ী এলাকার ইয়াবার ডিলার লিমন ওরফে ইয়াবা লিমন, শিমরাইল এলাকার ডিবি পুলিশের কথিত সোর্স একাধীক মামলার আসামি ইলিয়াস ওরফে ফেন্সি ইলিয়াস, মিজমিজি এলাকার একাধীক মামলার আসামি গনি মিয়ার ছেলে মিশু ওরফে ইয়াবা মিশু।
মিজমিজি টিসি রোড এলাকার মতিনের বাড়ীর ভাড়াটিয়া মোশারফের ছেলে মাসুদ রানা ওরফে মুরগি মাসুদ, একাধীক মাদক মামলার আসামি মৃত নওয়াব আলীর ছেলে মাদক ব্যবসায়ী রানা ওরফে ইয়াবা রানা, একই এলাকার মাহাবুব ওরফে ইয়াবা মাহাবুব, মিজমিজি সিআই খোলা বালুর মাঠ এলাকার ইকবাল ওরফে ফেন্সি ইকবাল।
নাসিক ৫নং ওয়ার্ডের সাইলো রোড চৌরাবাড়ী এলাকার খোকন ওরফে বরিশাইল্লা খোকন, আরমান, রহিমের ছেলে আনার, টুন্ডা শাহিনের ছেলে সোয়াদ, ফজলে রাব্বী ওরফে ফেন্সি রাব্বী, বাজার এলাকার রবিউল, একাধীক মামলার আসামি পলাশসহ আরো নামে বেনামে আরো অনেকেই রয়েছে।
এছাড়াও রয়েছে নাসিক ৬নং ওয়ার্ডের আদমজী নতুন বাজার এলাকার চিহ্নিত মাদকের ডিলার, মাদক ও হত্যা মামলাসহ প্রায় ডজন মামলার আসামি পক্ষি মজিবুরের ছেলে নাহিদ ও তার সহযোগী ইউনুছের ছেলে হাসান, মিজান, ইউসুফ, রাতুল, লামিম, সাকিব, বিহারী ক্যাম্পের মেজর আলীর ছেলে ডিলার বাবলা, আকরাম, ইয়াসিন, হানিফ, গুড়িয়া, হামারা যাবেদ, নাঈম, রাজু, শাবনাম, মুরাদ, জুসনা, ইমরুল, দুলালী, সোহাগ, রানী, আরমান, রাজ, রমজান, কামাল, মোস্তফা, চরশিমুল পাড়া এলাকার টেইলার রাজ, সুরুজ, মোহাম্মদ আলী, বাদল, নাছির, জাকারিয়া, মনির, হোসেন, ইমন, হাসান, তাজু, রিপন, লিখন, সেন্টু, আইল পাড়া এলাকার ডিলার সায়েদ, ইফতি, মুন্না, সমন, পিচ্চি বাবু, বাগপাড়া এলাকার সাদ্দম, রমজান।
৭নং ওয়ার্ড কদমতলী এলাকার মাদকের ডিলার শিহব, হৃদয়ের ছেলে তুহিন ও রাজন। এছাড়াও নামে বেনামে আরো অনেকেই রয়েছে ধোরা ছোয়ার বাইরে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়েই এসব এলাকাসহ বিভিন্ন স্পটে চিহ্নিত মাদক কারবারিরা দিনে দুপুরে অবাধে মাদক বিক্রি করছে। একাধিকবার প্রশাসনের হাতে গ্রেপ্তারের পরও মাদক বিক্রির দৌরাত্ম কোনো কিছুতেই কমছে না।
এলাকার বাসিন্দারা জানান, এলাকায় মাদক ব্যবসায়ী ও সেবনকারীরা রয়েছে বহাল তবিয়তে। উঠতি বয়সি তরুণ-তরুণীরা ধ্বংস হচ্ছে। গড়ে উঠছে ছোট-বড় কিশোর গ্যাং। অভিভাবক মহল রয়েছে চরম বিপাকে। মাদকের টাকা জোগাড় করতে গিয়ে অনেকে চুরি-ছিনতাই করছে।
পুলিশের তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে জরুরি ভিত্তিতে কঠোর ব্যবস্থা না নিলে যুবসমাজ ধ্বংস হয়ে যাবে। মাদক সিন্ডিকেট শিকড় থেকে উপড়ে ফেলতে হবে। তা না হলে সমাজে এই মাদকের ভয়াল থাবা থেকে কেউই নিরাপদ নয়।
তথ্যসূত্রে জানাগেছে, দেশের বর্তমান পরিস্থিতির সুযোগে সিদ্ধিরগঞ্জে চিহ্নিত মাদক কারবারিরা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। তারা সকলেই বিগত সময়ে গ্রেপ্তার হয়ে জেল কেটে জামিনে বেরিয়ে ফের শুরু করে এই মাদক ব্যবসা।
এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ বলছে, মাদক ও কিশোরগ্যাং দমনে পর্যায়ক্রমে প্রত্যেককেই আইনের আওতায় আনা হবে। কোনো অপরাধিকে ছাড় দেয়া হবেনা।
অপরদিকে, মাদকের ভয়াবহতায় সামাজিক অবক্ষয় থেকে পরিত্রান পাওয়ার জন্য যৌথ বাহিনী জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন সচেতন মহল।