নারায়ণগঞ্জ সোনারগাঁ উপজেলার নয়াপুর নানাখী পূর্বপাড়া জামে মসজিদের জায়গা অবৈধভাবে ভোগদখল করার প্রতিবাদে ১৩ সেপ্টেম্বর শুক্রবার বাদ জুম্মা নানাখী পূর্বপাড়া এলাকার মুসুল্লী ও সাধারণ মানুষের মানববন্ধন।
উল্লেখ্য স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা সরকারের সাবেক স্বাস্থ্য মন্ত্রী জাহিদ মালেক এর ভগ্নিপতি কাজী আক্তার হামিদ বাচ্চু(৬০) ও তার সহযোগী দোসর মোঃ রুহুল আমিন (৪০) দীর্ঘদিন যাবত মসজিদের জায়গা এবং আয় ব্যয় এককভাবে সম্বন্ধীর দাপটে ভোগদখল করে আসছে।২০১৫ সাল থেকে এযাবৎ কালে মসজিদের মোতোয়ালি এবং সমাজের মুসুল্লিদের কাছেও কোনো প্রকার আয় ব্যয়ের হিসাব দেওয়া হয় নাই।
এ ব্যাপারে প্রতিকার চেয়ে সোনারগাঁ থানায় লিখিত অভিযোগ করেছে নানাখী পূর্বপাড়া জামে মসজিদের নতুন পরিচালনা কমিটির সদস্য সহ এলাকাবাসী। অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে,মসজিদের পরিচালনা দীর্ঘদিন যাবত বংশ পরম্পরায় হয়ে আসছিলো। উক্ত মসজিদটি ১৯৭০ সালে স্থাপিত হওয়ার পর থেকে পাঞ্জেগানা নামাজ পড়ানো হতো।
তৎকালীন মসজিদের দায়িত্বে ছিলেন ইয়াকুব মুন্সী।তার মৃত্যুর পর পুত্র মুল্লুক হোসেনের উপর মসজিদের সম্পূর্ণ দায়িত্বভার ন্যস্ত হয়।সেই সুবাদে মুল্লুক হোসেন ও তার বড়ো ভাই আব্দুল হামিদ এই মসজিদের জন্য কিছু সম্পত্তি দান করেন। যার মধ্যে ৯ শতাংশে মসজিদ নির্মিত এবং বাকী জায়গা মুল্লুক হোসেনে(মোতোয়ালি)'র নামে পর্চা হয়েছে।
মুল্লুক হোসেনের মৃত্যুর পর আব্দুল কাদির মোতোয়ালি হিসাবে দায়িত্ব পালন করে ২০১৫ সালে মসজিদ পূনরায় নির্মান করেন।
অতঃপর ২৪/০৭/২০১৫ তারিখে কাজী আক্তার হামিদ বাচ্চু ক্ষমতাসীন আওয়ামী সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রী জাহিদ মালেক (সম্বন্ধী) কে প্রধান অতিথি করে মসজিদটি উদ্ভোদন করেন এবং ক্ষমতার দাপট দেখাইয়া মসজিদের আয় ব্যয়, নতুন ইমাম নিয়োগ সহ সমস্ত কার্যক্রমের জবরদখল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয়।
এই সুযোগে মসজিদের ওয়াকফাকৃত সম্পত্তি বাংলাদেশ ওয়াকফা স্ট্যাটে নিবন্ধন না করাইয়া ২০ শতাংশ জায়গা যার মূল্য ১ কোটি টাকা এবং ২০ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন।২০১৯ সালে আক্তার হামিদ তার স্ত্রী'র নামে প্রফেসর রুবিনা হামিদ আইডিয়াল স্কুল এবং একটি কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা করেন।এই দুইটি প্রতিষ্ঠান তার পালিত অস্ত্র মামলার ১৮ বৎসরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি রুহুল আমিন টাইগার দায়িত্ব পালন করেন।
এছাড়াও মসজিদের ওয়াকফা কৃত সম্পত্তি আক্তার হামিদ নিজ ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার এবং কিছু সম্পত্তি তার কথিত দোসর মোঃ রুহুল আমিন টাইগার এর নামে আম মোক্তার নামা দলিল করে দেয়। ২০১৫ সাল থেকে এ পর্যন্ত মসজিদের মোতোয়ালি আব্দুল কাদির এবং মুসুল্লিদের কোনো প্রকার আয় ব্যয়ের হিসাব দেননি। এলাকাবাসী হিসাব চাইলে, তিনি বলেন আমি হিসাব দিতে কারো কাছে বাধ্য নই।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতা আন্দোলনে স্বৈরশাসক সরকার পতনের পর এলাকাবাসীর সহযোগিতায় মসজিদে একটি নতুন কমিটি গঠন করলে আক্তার হামিদ তার সহযোগী রুহুল আমিন টাইগার সহ ৭/৮ জন সাঙ্গ পাঙ্গ নিয়ে হুমকি ধামকি দেয় এবং চাঁদাবাজি মামলা দিয়ে জেল খাটানোর ভয় ভীতি দেখায়।এছাড়া মসজিদের ইমামকে নামাজ না পরানোর জন্য ভীতি প্রদর্শন করে।রুহুল আমিন টাইগার তার বাহিনী নিয়ে বিভিন্ন অপকর্ম করে এবং তার অত্যাচারে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ।
এমতাবস্থায় এলাকাবাসী আশংকা করছে, যেকোনো সময় আক্তার হামিদ এবং তার সহযোগী গুন্ডা পান্ডা নিয়ে নতুন কমিটির উপর হামলা করতে পারে। এ ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।