নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

রোববার,

২৪ নভেম্বর ২০২৪

সিদ্ধিরগঞ্জে চাঁদাবাজিকে কেন্দ্র করে বিএনপি-ছাত্রদলের সংঘর্ষ, আহত ৮

নারায়ণগঞ্জ টাইমস:

প্রকাশিত:১৮:৫৫, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

সিদ্ধিরগঞ্জে চাঁদাবাজিকে কেন্দ্র করে বিএনপি-ছাত্রদলের সংঘর্ষ, আহত ৮

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে বিএনপি ও ছাত্রদলের মধ্যে ৩ ঘণ্টাব্যাপী ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের ৮ জন আহত হয়েছেন। এসময় ভাংচুরের ঘটনাও ঘটে। সরকারি খাল দখল ও চাঁদাবাজিকে কেন্দ্র করে রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) রাতে সিটি করপোরেশনের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কদমতলী পুল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।  পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন।

আহতরা হলেন-কাউসার,মিরাজুল,রেজাউল,নিলয়,সাব্বির,সিজান, হাসান বাবু ও জিসান। তাদের মধ্যে নিলয়ের অবস্তা গুরুতর। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যদের স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।  

 এলাকাবাসী জনায়, দুই গ্রুপই সাবেক এমপি গিয়াস উদ্দিনের লোক। 


স্থানীয় ৭নং নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জামান মীর্জা জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সদস্য শামীম ডালির নেতৃত্বে দলীয় কিছু লোক কতমতলী এলাকায় ডিএনডি খাল দখল করে মাছ চাষ, ফুটপাত দোকান ও ময়লার গাড়ি থেকেও চাঁদা আদায় শুরু করে। একই ওয়ার্ডের বাসিন্দা নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুর রহমান সাগর বিষয়টি জানতে পেরে দখল চাঁদাবাজি করতে নিষেধ করেন। এতে শামীম ডালি ক্ষিপ্ত হয়ে ছাত্রদল নেতাকর্মীদের মারধর করে। ফলে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।  

 
নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুর রহমান সাগর বলেন, শামীম ডালির নেতৃত্বে বিএনপির কিছু লোকজন আওয়ামী লীগের লোকদের সঙ্গে আঁতাত করে সরকারি খাল দখল ও চাঁদাবাজির বিষয়টি জানতে পেরে আমি তাদের নিষেধ করি। কিন্তু তারা আমার কথা কর্ণপাত করেন নি। তাই রোববার রাত ৯ টার দিকে ছাত্রদলের কয়েকজন নেতাকর্মীকে পাঠাই দোকানদারদের নিষেধ করতে তারা যেন চাঁদা না দেয়। চাঁদা দিতে নিষেধ কারায় শামীম ডালির সহযোগী আকাশ, হাসান বাবু, মেহেদী হাসান, সোহেল ও আল-আমিনসহ ২০-২৫ জন মিলে ছাত্রদল নেতাকর্মীদের উপর হামলা করে। তাদের হামলা কাউসার, মিরাজুল ও রেজাউল আহত হয়। পরে তারা লাঠিসোটা নিয়ে এলাকায় বিক্ষোভ আর নিজেদের দলীয় অফিস ভাঙচুর করে আমাদের উপর দোষ চাপানোর ফন্দি করে। এ খবর পেয়ে আমরা ছাত্র জনতা মিলে ঘটনাস্থলে গিয়ে চাঁদাবাজদের ধাওয়া দেই। ফুটপাত ব্যবসায়ীদের চাঁদা দিতে নিষেধ করি। সবাইকে সতর্ক করি দখল চাঁদাবাজি করে যেই দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করবে আমরা ছাত্র-জনতা কঠোরভাবে তা প্রতিহত করবো।   

 

দখল চাঁদাবাজির অভিযোগ সঠিক নয় দাবি করে বিএনপি নেতা শামীম ডালি বলেন, আমরা কয়েকজন কদমতলী পুল দলীয় অফিসে ছিলাম। রাত ৯ টার দিকে ছাত্রদলের কিছু ছেলে আমাদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। তারা অফিসে লাগানো বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ জিয়াউর রহমান, বেগম খালেদা গিয়া ও তারেখ রহমানের ছবিসহ আসভাবপত্র ভাঙচুর করে। আমরা এঘটনার প্রতিবাদ করছিলাম। পরে রাত সাড়ে ১১ টার দিকে সাগরের নেতৃত্বে কয়েক শতাধীক লোক এসে দ্বিতীয় দফা আমাদের উপর হামলা করে। তাদের হামলায় নিলয়, হাসান বাবু সাব্বির, সিজান ও জিসানসহ বহু লোক আহত হয়। 

 
সংঘর্ষের বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি আল মামুন বলেন, বিষয়টি তাদের দলীয়। মৌখিকভাবে দুপক্ষই পাল্টা পাল্টি অভিযোগ জানিয়েছে। কোন পক্ষ লিখিত অভিযোগ করেনি। লিখিত অভিযোগ করলে তদন্ত করে দোষিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এদিকে এলাকাবাসী জানায়, ৫ আগস্টের পর কয়েকটি চাঁদাবাজ গ্রুপ সক্রীয় হয়েছে কদমতলীতে। ফুটপাত থেকে শুরু করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চলছে চাাঁদাবাজি। এর সাথে যুক্ত হয়েছে সরকারী জায়গা দখল করে স্থাপনা নির্মাণ। ভুমিদস্যরাও সক্রীয়।