রূপগঞ্জের পূর্বাচলের ভয়ঙ্কর এক প্রতারক সাইদুর ওরফে ইয়াবা সাইদুর। দীর্ঘ এক যুগ পালিয়ে থাকার পর প্রকাশ্য এসে আবারও মাদককারবার, চাঁদাবাজী, নারীদের কু-প্রস্তাব দেয়া, যাকে ইচ্ছে লাঞ্চিত করা সহ বিভিন্ন অপরাধ কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে এলাকাবাসী। তাকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে শাস্তির দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী সহ সাধারণ মানুষজন।
সরেজমিন ঘরে যায়, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ সদর ইউনিয়নের পূর্বাচল ১১ নম্বার সেক্টরের হাড়ার-বাড়ি গ্রামের মৃত-হাকিম উদ্দিনের ছেলে সাইদুর ওরফে ইয়াবা সাইদুর (৪০)। তার হাতে জিম্মি পূর্বাচলবাসী। পূর্বাচলে বিভিন্ন ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান থেকে নিয়মিত চাঁদা নেয়া তার পেশায় পরিণত হয়েছে। আর চাঁদাবাজি ও মাদককারবার বীরদর্পে চালিয়ে যেতে র্যাব-পুলিশের সোর্সের পরিচয় ব্যবহার করেন তিনি।
ফলে তার অপকর্মের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুললেই র্যাব-পুলিশ দিয়ে নিরহ মানুষদের হয়রানি করার ভয় দেখানো হয়। চলে নিয়মিত হুমকি-ধামকি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পূর্বাচলের একাধিক সূত্র থেকে জানা যায়, পূর্বাচলের ৩০০-ফিট সড়কের পাশে ১১ নম্বার সেক্টরে স্থানীয় আদিবাসীদের উদ্যোগে গড়ে উঠেছে অস্থায়ী দোকান রেস্টুরেন্টসহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। ওই ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে ক্ষমতা দেখিয়ে নিয়মিত চাঁদাবাজি করে সাইদুর।
কেউ চাঁদার টাকা না দিলে তার ওপর চলে নির্যাতন। তার হাত থেকে রেহায় পায়নি পূর্বাচলে অবস্থিত ইসলামীয়া হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্টের কাজ করা নারী শ্রমিকরাও। বিভিন্ন সময় দেওয়া হয় কুপ্রস্তাব তার প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় অনবরত দেয়া হচ্ছে গুম ও হত্যার অভিযোগ। বাধ্য হয়ে ভয়ে কাজ ছেড়ে পালিয়ে যান ওই নারী শ্রমিকরা।
ভুক্তভোগী এক নারী জানান, আমার জীবণের নিরাপত্তা চাই। সাইদুরের ভয়ে আমি পালিয়ে পালিয়ে থাকি।
আরেক ভুক্তভোগী শাকিল জানান, গত ১৬ আগস্ট পূর্বাচলে মটরসাইকেলের দোকানে গিয়ে বাকি চান সাইদুর ওরফে ইয়াবা সাইদুর। বাকি না দেওয়ায় হত্যার উদ্দেশ্যে ছুরি দিয়ে পেটে আঘাত করে ইয়াবা সাইদুর ।
তাছাড়া দূর-দূরান্ত থেকে পূর্বাচলে ঘুরতে আসেন বেড়াতে আসা পর্যটকসহ স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের ভয় দেখিয়ে টাকা পয়সা, মোবাইলসহ বিভিন্ন মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনতাই করা তার দৈনন্দিনের কাজ। এছাড়া নেশাগ্রস্ত হয়ে পূর্বাচলের ১০ নাম্বার সেক্টরের বাসিন্দ রনি মিয়া, অপু, সাকিবকে পিটিয়ে জখম করাসহ তার এসব কর্মকান্ডে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এলাকাবাসী।
স্থানীয়রা জানান, ২০০৩ সালের দিকে হারার বাড়ি এলাকার মো. মোস্তফার মিয়ার দায়ের করা নারী নির্যাতন ও হত্যা চেষ্টা মামলায় আসামি হয়ে ছাড়েন সাইদুর ওরফে ইয়াবা সাইদুর। পরে রাজধানীর মহাখালী এলাকায় অস্ত্রের মুখে মানুষকে জিম্মি করে চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্মে জড়িয়ে পরে। ঢাকার বিভিন্ন থানায় তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। তার এসব অত্যাচার থেকে মুক্তি পেতে তাকে দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
এসব বিষয়ে জানতে সাইদুরের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে, তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করেন সাইদুর।
এ বিষয়ে রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি লিয়াকত হোসেন জানান, কারো বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ পেলে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।