বেতন বৃদ্ধি, কর্মঘণ্টা নির্ধারণ, চাকরি স্থায়ীকরণ ও শ্রমিক নির্যাতন বন্ধসহ ১৯ দফা দাবিতে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে বিক্ষোভ করেছে শরীফ ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেড কোম্পানির শ্রমিকরা।
শনিবার (৩১ আগস্ট) সকাল ১০টায় কর্ম বিরতি দিয়ে উপজেলার বরাব এলাকায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে দুই ঘণ্টাব্যাপী এ কর্মসূচি পালন করে শরিফ মেলামাইন কোম্পানির সহযোগী প্রতিষ্ঠান শরীফ ফার্মাসিউটিক্যাল কারখানার চার শতাধিক শ্রমিক। এসময় মহাসড়কে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হলে চরম ভোগান্তিতে পরেন বিভিন্ন পরিবহনের চালক ও যাত্রীরা।
শ্রমিকরা জানান, প্রতিষ্ঠানটির অ্যাডমিন ম্যানেজার ইসমাইল হোসেনের মাধ্যমে নারী শ্রমিকরা দীর্ঘদিন দরে নানাভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছেন। পাশাপাশি শ্রমিকদের ন্যূনতম পারিশ্রমিক দেয়া হয় না। প্রাপ্ত ছুটি ও খাবারের মান নিয়েও নানা অভিযোগ রয়েছে শ্রমিকদের। এসব সমস্যা সমাধানে আন্দোলন করতে বাধ্য হয়েছেন তারা।
এদিকে, শ্রমিকদের ১৯ দফা দাবির সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে আরও ১০ দফা দাবি যুক্ত করেন প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন পদে কর্মরত কর্মকর্তারা।
পরে মালিকপক্ষ অ্যাডমিন ম্যানেজার ইসমাইল হোসেনকে তাৎক্ষণিক অপসারণ করেন এবং অন্যান্য দাবি বিবেচনা করে দেখবেন বলে আশ্বস্ত করেন শ্রমিকদের। পরে শ্রমিকরা শান্ত হয়ে কারখানায় গিয়ে কাজে যোগদান করেন।
শরিফ গ্রুপের এজিএম মো. মফিজুর রহমান এর সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এখানে শরীফ গ্রুপের চারটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে একটি প্রতিষ্ঠান শরীফ ফার্মাসিউটিক্যাল কারখানা। শ্রমিকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তাৎক্ষণিক শরিফ ফার্মাসিউটিক্যাল কারখানার অ্যাডমিন ম্যানেজার ইসমাইল হোসেনকে অপসারণ করা হয়েছে। এ ছাড়া শ্রমিকদের অন্যান্য দাবিগুলো মালিকপক্ষের সঙ্গে কথা বলে বাস্তবায়ন করার জন্য বিবেচনা করা হবে।
শ্রমিকদের ১৯ দফার মধ্যে উল্লেখযোগ্য দাবিগুলো হলো- নতুন যোগ দেওয়া কর্মচারীদের বেতন ১৭ হাজার ৫০০ টাকা করা এবং ছয় মাসের মধ্যে স্থায়ীকরণের পর বেতন ২০ হাজার ৫০০ টাকা করা, প্রতিবছর বেতন তিন হাজার টাকা বৃদ্ধি করা, দুই ঈদের বোনাস দেওয়া এবং বেতনের সমপরিমাণ ও বৈশাখী বোনাস দেওয়া, প্রভিডেন্ট ফান্ড ও গ্রাচুইটি চালু করা, নাইট ডিউটিতে ৫০০ টাকা করে দেওয়া, ওভারটাইম হার শতভাগ দেওয়া এবং বেতনের সঙ্গে দেওয়া, দুপুরের খাবারের মান উন্নয়ন করা এবং সকালের নাশতা দেওয়া, ওভারটাইম থাকলে নাশতা বিল বাড়ানো, রমজানে ভালো মানের ইফতার দেওয়া, ক্যান্টিন বিল তিন হাজার টাকা দেওয়া, কোনো শ্রমিক চাকরিচ্যুত হলে তাকে কমপক্ষে তিন মাসের বেতন দেওয়া, সব কর্মচারীর কর্মঘণ্টা ৮ ঘণ্টা করা।