নারায়ণগঞ্জ বন্দরে নেশা সেবনের টাকা না দেওয়ার জের ধরে ২ সন্তানের জননী কাজলী বেগম (৩০)কে এলোপাতাড়ি ভাবে কুপিয়ে হত্যাকান্ডের ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। এ ঘটনায় নিহত গৃহবধূর মা বাদী হয়ে গত সোমবার জামাতা মাসুমকে আসামি করে বন্দর থানায় এ হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এর আগে গত সোমবার ভোর ৬ টায় বন্দর উপজেলার উলাক এলাকাস্থ গৃহবধূর পিত্রালয়ে এ হত্যাকান্ডের ঘটনাটি ঘটে। হত্যাকান্ডের পর বড় মেয়ের ডাক চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে ঘাতক স্বামী মাসুম(৩০)কে গনপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছে এলাকাবাসী।
প্রত্যক্ষদর্শী নিহতের বড় মেয়ে মারজান (১২) জানান, মা কিস্তির টাকা উঠিয়েছে। ওই টাকা থেকে বাবা নেশার টাকার জন্য মাকে চাপ সৃষ্টি করে আসছিলেন। মা টাকা দিতে অস্বীকার করায় রোববার রাতে প্রতিদিনের ন্যায় সবাই ঘুমিয়ে পড়েছি। সোমবার ভোর ৬ টার দিকে বাবা মাকে কাপড় কাটার কেঁচি দিয়ে এলোপাতাড়ি ভাবে কোপাতে থাকেন।
এসময় মায়ের চিৎকারে ঘুম ভেঙ্গে যায়। পরে মায়ের রুমের দরজা খুলতে ডাকাডাকি করলে বাবা দরজার খোলার পর মায়ের রক্তাক্ত জখম অবস্থায় মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখে ছোট মুনা নিয়ে ঘরের বাহিরে চলে গিয়ে ডাক চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে ঘরের দরজা ভেঙ্গে মায়ের লাশ দেখতে পায়।
মামলার বাদী নিহতের মা আয়েশা বেগম জানান,উপজেলার কলাগাছিয়া ইউপির নয়ানগর এলাকার মৃত দেলোয়ার হোসেনের ছেলে মামসুমের সঙ্গে ১৫ বছর আগে আমার মেয়ের কাজলীর বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে অভাব অনটনে স্বামীর সংসারে কাজলীর ১৫ বছর।
নেশার টাকা না দেয়ায় তিন বছর আগে কাজলীকে কুপিয়ে জখম করে স্বামী মাসুম। তার পর থেকে মেয়ে নিজ বাড়িতে আনা হয়েছে। তিন বছর প্রায় পিত্রালয়ে বসবাস করতো কাজলী। নিজের কাছে মেমেকে রেখেও মাদকাসক্ত স্বামীর হাতে অবশেষে খুন হয়েছে। এখন দুই নাতিন এতিম।
বন্দর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) আবু বকর ছিদ্দিক জানান, মাদকাসক্ত স্বামীর এলোপাথাড়ি কেঁচির আঘাতে ক্ষতবিক্ষত স্ত্রীর শরীর। এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় নিহত কাজলীর মা আয়েশা বেগম বাদী হয়ে জামাতা মাসুমকে আসামি করে মামলা করেছেন। গনপিটুনির শিকার আটক মাসুম পুলিশের হেফাজতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।