নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

রোববার,

০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

নতুন করে আলোচনায় সেই নীলা

নারায়ণগঞ্জ টাইমস:

প্রকাশিত:২০:৩৩, ১৩ জুলাই ২০২৪

নতুন করে আলোচনায় সেই নীলা

আবারো আলোচনায় উঠে এসেছে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সাবেক সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর জান্নাতুল ফেরদৌস নীলা। ১ জুলাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নীলা তার ব্যক্তিগত আইডিতে বিয়ের বিষয়টি প্রকাশ করেন। তার ফেসবুক বন্ধুরা কমেন্ট বক্সে তাদের শুভ কামনা জানাচ্ছেন।

এরপর ১৩ জুলাই নতুন স্বামীকে নিয়ে একটি রিল ভিডিও আপলোড দিয়েছেন তিনি। সোস্যাল মিডিয়ায় নিজেই বিয়ের বিষয়টি প্রকাশ করায় নতুন করে আলোচনার শিরোনাম হয়েছেন নীলা। 

জানাযায়, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সিদ্ধিরগঞ্জের ৭নং ওয়ার্ড কদমতলীর ফজলুল হক জুয়েলের সাথে জান্নাতুল ফেরদৌস নীলার বিয়ে হয় চলতি বছরের ৩০ জুন। জুয়েলের সাথে দীর্ঘদিন ধরে গোপনে সম্পর্ক চলছিল নীলার। পরে জানাজানি হলে জুয়েলের পরিবার মেনে নিতে না চাইলেও জুয়েল নীলাকে বিয়ে করে তার ঘরে তুলেন।

এ বিষয়ে জুয়েলের সাথে কথা হলে তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের তাদের নতুন সংসার জীবনের জন্য দোয়া প্রার্থণা করেন। জুয়েল গত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ওই ওয়ার্ড থেকে মিস্টি কুমড়া প্রতীক নিয়ে কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করে পরাজিত হয়েছিলেন।

স্থানীয়দের সূত্রমতে, ২০১১ সালের ৩০ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে কয়েক মাস পর আলোচনা উঠে আসেন জান্নাতুল ফেরদৌস নীলা। কারণ ওই সময় সিদ্ধিরগঞ্জের ৪নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলেন আলোচিত নুর হোসেন। আর নীলা ছিলেন ৪,৫ ও৬ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর।

নীলা নূর হোসেনের সহযোগিতায় নারী কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। ফলে নূর হোসেনের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে নীলা। নীলার রূপ লাভন্যে পাগল হয়ে নীলাকে ২৭ লাখ টাকা দিয়ে একটি টয়োটা প্রিমিও গাড়ি কিনে দিয়েছিলেন নূর হোসেন।

বাড়িতে দিয়েছেন দামি আসবাবপত্র। নূর হোসেনের স্ত্রী পরিচয়ে বিভিন্ন মহলে প্রভাব বিস্তার করতেন তিনি। কেন্দ্রীয় বেশ ক’জন রাজনীতিক নেতা এবং প্রশাসনের অনেক কর্তাব্যক্তির সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন নীলা। এ সময় নীলাকে অনেক বেশি মূল্যায়ন করত নূর হোসেন। তাদের মধ্যে সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা ছিল ব্যাপক।

কিন্তু যে যা-ই বলত তেমন একটা গায়ে মাখেননি নূর ও নীলা। এক সময় স্বামী সায়েম প্রধানকে ছেড়ে নূর হোসেনের কব্জায় চলে যান নীলা। স্বাভাবিকভাবেই তারা একসঙ্গে ঘুরে বেড়িয়েছেন দেশের বিভিন্ন স্থানে এবং দেশের বাইরে। কিন্তু এক সময় তাদের সেই সম্পর্কে ফাটল ধরে।

এ নিয়ে স্বামী সায়েমের সঙ্গে বিরোধ দেখা দিলে ২০১৩ সালের ২৫ জুন সায়েমের সঙ্গে নীলার তালাক হয়। সাত খুনের ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ২০১৪ সালের ১৮ মে নীলাকে আটক করে পুলিশ। তবে পরদিনই তাকে ছেড়ে দেয়। ২০১৩ সালের ২৬ অক্টোবর সিদ্ধিরগঞ্জের আইয়ুব নগর থেকে জুয়েল নামে এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই ঘটনায় এক আসামি ১৬৪ ধারায় আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে হত্যার সঙ্গে নীলার জড়িত থাকার কথা বলেন।

এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৪ সালের ২৬ মে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন নীলা। প্রায় আড়াই মাস কারাভোগের পর জামিনে মুক্তি পান তিনি। 

তখন গণমাধ্যমকে সায়েম প্রধান জানিয়েছিলেন, কারাভোগের সময়ে নীলা তার কাছে আবার ফিরে যাওয়ার আকুতি-মিনতি করলে সন্তানের দিকে তাকিয়ে তিনি মোটা অঙ্কের টাকা খরচ করে নীলাকে জামিনে বের করে আনেন। কিছুদিন তার সঙ্গে ভালোভাবেই নীলার দিন কাটে। ২০১৪ সালে ঈদুল আজহার ছুটিতে নীলা ও সায়েমসহ পরিবারের লোকজনকে কক্সবাজারে অবকাশ কাটাতে দেখা গেছে।

ওই সময়ে নীলার সঙ্গে সায়েমের ঘনিষ্ঠ ছবিও ফেসবুকে আপলোড করেন নীলা। কিন্তু কিছুদিন আগে সায়েমের সঙ্গে আবারও নীলার বিরোধ দেখা দেয়। এরই জের ধরে ২০১৫ সালে ২৪ আগস্ট স্বামী সায়েমকে তালাক দেন নীলা। তখন থেকেই নীলা একাকী জীবনযাপন করছেন। ২০১৬ সালের ২২ ডিসেম্বর নাসিক নির্বাচনে নীলা অংশ নিতে পারেনি। নির্ধারিত সময়ের পরে যাওয়ায় মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারেননি তিনি।

তখনো প্রতিক্রিয়ায় নীলা সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, আল্লাহ যা করেন ভালোর জন্যই করেন। পরবর্তীতে ৪ বছর নীলাকে প্রকাশ্যে খুবই কম দেখা গেছে। এরপর ২০২২ সালের ১৭ জানুয়ারি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ডে প্রার্থী হয়ে পরাজিত হন নীলা। ধীরে ধীরে আড়ালে চলে যান তিনি। মানুষের মাঝে তাকে নিয়ে কৌতুহলও কমে যায়। কিন্তু আবারো বিয়ের কথা প্রকাশ করে আলোচনায় এসেছেন লাস্যময়ী আলোচিত সেই নীলা।


 

সম্পর্কিত বিষয়: