নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

শুক্রবার,

০৫ জুলাই ২০২৪

বন্দরে আলোচিত মনু হত্যা মামলায় ২ সহোদর গ্রেপ্তার

নারায়ণগঞ্জ টাইমস

প্রকাশিত:২০:৩৪, ২ জুলাই ২০২৪

বন্দরে আলোচিত মনু হত্যা মামলায় ২ সহোদর গ্রেপ্তার

নারায়ণগঞ্জের বন্দরে আলোচিত  মনিরুজ্জামান মনু (৪২) হত্যা মামলার এজাহারভূক্ত আসামী ২ সহোদরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো বন্দর থানার মুরাদপুর এলাকার ছিদ্দিক মিয়ার ছেলে হত্যা মামলার ৯নং এজাহারভূক্ত আসামী ফরহাদ (২১) ও তার বড় ভাই মামলার ১০ নং এজাহারভূক্ত আসামী ফয়সাল (২৫)।

মঙ্গলবার (২ জুলাই)  ভোরে সোনারগাঁ থানার কাঁচপুর ইউনিয়নের নয়াপুর এলাকা থেকে তাদেরকে  গ্রেপ্তার করা হয়।  গ্রেপ্তারকৃতরা বন্দর থানা হাজতে পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। এর আগে গত ৭ জুন বেলা ১১ টার দিকে  নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ২৭ নং ওয়ার্ড মুরাদপুর এলাকায়  প্রকাশ্যে গুলি করে ও পিটিয়ে এ নৃংশস হত্যাকান্ডের ঘটনাটি ঘটে।r

এ  ঘটনায় নিহতের স্ত্রী সাবিনা বেগম বাদী হয়ে সন্ত্রাসী   মনির,  মিঠু ও টিটু সহ ১৫  জনের নাম উল্লেখ করে বন্দর থানায় একটি হত্যা  মামলা দায়ের করেন।

যার মামলা নং- ১৩(৬)২৪ ধারা- ১৪৩/ ৪৪৭/ ৪৪৮/ ৩০৭/ ৩২৩/৩২৫/৩৫৪/ ৩৮৯/ ৪২৭/ ৫০৬/ ১১৪/ ৩০২/ ৩৪ পেনাল কোড ১৮৬০। এর আগে  মামলার ১২ নং আসামি নুরুল আলম ওরফে নুরুকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

মামলার তদন্তকারি অফিসার কামতাল তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ ইন্সপেক্টর সাব্বির রহমান বলেন,  প্রতিপক্ষ সন্ত্রাসী গ্রুপ মনুকে ঘর থেকে বাহির করে প্রকাশ্যে নৃশংস ভাবে হত্যা করে। এ মামলার এজাহারভুক্ত আসামী ফরহাদ ও ফয়সালকে মঙ্গলবার ভোরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে  সোনারগাঁও উপজেলার নয়াপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গ্রেপ্তারকৃতদের  জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এ মামলায় মোট ৩ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি। বাকি আসামীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যহত রয়েছে। 

এলাকাবাসী ও বিভিন্ন তথ্য সূত্রে জানাগেছে, গত দেড় যুগ ধরে ধারাবাহিক ভাবে  নিহত মনুর  বড় ভাই বাবুল আক্তার , ছোট ভাই নূরুজ্জামান নুরা ও বড় দুই বোন নিলুফা, রেহেনা  সহ চার ভাইবোন  প্রতিপক্ষ শীর্ষ সন্ত্রাসী সুরুত আলী বাহিনীর হাতে খুন হয়েছেন। 

এক সময়ের বন্দর থানার তালিকাভূক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী কামরুজ্জামান কামু দীর্ঘদিন জেল খেটে জামিনে বের হওয়ার পর তার সাভাবিক মৃত্যু হলেও হত্যা সহ সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে একাধিক মামলার আসামি মনুর বড় ভাই  আবুল পুলিশের ক্রসফায়ারে নিহত হন। এক দেড় বছরের ব্যবধানে তিন ভাই ও দুই বোন হত্যাকান্ডের শিকার হওয়ার পর থেকে মনু এলাকা ছেড়ে কাপাসিয়া বিয়ে করে শ্বশুর বাড়িতে বসবাস করতেন।  

সম্প্রতি মনিরুজ্জামান মনু স্থানীয় গার্মেন্টের ঝুট বয়বসা নিয়ন্ত্রণ ও  এলাকায়  একক আদিপত্য বিস্তার লাভের চেষ্টা করলে প্রতিপক্ষ  সন্ত্রাসী গ্রুপের প্রধান মনির, টিটু ও  মিঠুর  সঙ্গে দ্বন্দ্ব হয়।  গত বৃহস্পতিবার পাশ্ববর্তী সোনারগাঁও উপজেলার কাঁচপুর ইউপির  কুতুবপুর এলাকায় মনু তার   মামীর জানাজায় অংশ নেয়। শুক্রবার সকালে মনু মুরাদপুর নিজ  বাড়িতে আসেন। এ  খবর পেয়ে প্রতিপক্ষ সন্ত্রাসীরা গুলি ছুড়তে ছুড়তে  বাড়িতে  ঢুকে । 

পরে  স্ত্রী, ছেলে- মেয়ে ও দুই ভাগনির সামনে থেকে মনুকে  ঘরের গেইটের তালা ভেঙ্গে  টেনে হেঁচড়ে  বের করে প্রথমে মাথায় গুলি করে   উঠানে ফেলে দেয়। পরে মোফাজ্জল নামে এক ভাড়িটিয়া সন্ত্রাসী মাথায় বসে থাকে অন্যান্যরা পিটিয়ে  নৃংশস ভাবে হত্যা করে লাশ ফেলে রেখে যায়। 

নৃশংস ওই হত্যাকান্ডের প্রত্যক্ষদর্শী নিহত মনুর ৮ বছরের শিশু কন্যা ১৭ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ধারণ করে।  পরে ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। 

এর আগে নিহত মনুর মা ফুলমতি  বেগম  ও পিতা কামালউদ্দিন খুন হয়েছিলেন প্রতিপক্ষ  সন্ত্রাসী বাহিনীর হাতে।  নিহত মনুর ৫ ভাইয়ের মধ্যে কামু, নুরা, আবুল ও বাবুল চার ভাই ও দুই বোন একের পর হত্যাকান্ডের শিকার হলেও পরিবারের শেষ প্রদীপ মনিরুজ্জামান মনু অবশেষে প্রতিপক্ষ সন্ত্রাসীদের হাতে খুন হয়েছেন। ক্রসফায়ারে নিহত আবুল মিয়ার দুই মেয়ে এবং  নিহত   মনু,র এক ছেলে ও এক মেয়ে।
 

সম্পর্কিত বিষয়: