সিদ্ধিরগঞ্জে আতংকের অপর নাম টেনশন প্রুপ। এ বাহিনীর বেপরোয়া কর্মকান্ডে অতিষ্ঠ মিজমিজি এলাকাবাসী। বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যকলাপের জন্য র্যাব-পুলিশের অভিযানে এ গ্রুপের একাধিক সদস্য গ্রেপ্তার হলেও থামছেনা এদের অপরাধ কর্মকান্ড। আসামিরা জেল থেকে বেরিয়ে পুনরায় তাদের কার্যক্রম চালায়।
এ গ্রুপের বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক মামলা। ইভটিজিং থেকে শুরু করে মাদক বিক্রি, মাদক সেবন, চুরি, ছিনতাই, অপহরণসহ বিভিন্ন অপরাধ কর্মকান্ডে এ গ্রুপের সম্পৃক্ততা রয়েছে।
এদিকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় টেনশন প্রুপের অন্যতম সদস্য মো. রাহাত হোসেন (২৪) মিজমিজি দক্ষিণপাড়ায় অতর্কিত হামলা চালিয়ে রিয়াদুল ইসলাম (২৯) নামে এক যুবকের মোটরসাইকেল ভাংচুর করে।
এ সসয় ওই যুবক বাধা দিলে তাকে বেধড়ক মারপিঠ করে রক্তাক্ত জখম করে। এপর্যায়ে হত্যার উদ্দ্যেশ্যে সন্ত্রাসী রাহাত তার হাতে থাকে ছুরি দিয়ে ওই যুবককে আঘাত করেলে সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এরপরও ক্ষ্যান্ত হয়নি রাহাত। লুটিয়ে পড়া যুবকের উপর চড়াও হয়ে এস এস পাইপ দিয়ে মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত করে। পরে স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে সে দৌড়ে পালিয়ে যায়।
পরে তাকে উদ্ধার করে খানপুর ৩শ’ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করায় স্বজনরা। চিকিৎসা শেষে রাতেই এ ঘটনায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগী আহত যুবক রিয়াদুল ইসলাম।
আহত রিয়াদুল মিজমিজি দক্ষিনপাড়া এলাকার প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম এ.কে. এম নুরুল ইসলামের ছেলে। অভিযুক্ত টেনশন গ্রুপের অন্যতম সদস্য মো. রাহাত হোসেন একই এলাকার আমার উল্লাহর ছেলে। তার ্িবরুদ্ধে বিভিন্ন অপরাধে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।
আহত রিয়াদুল ইসলাম জানান, মিজমিজি কবরস্থানের পার্শ্বে তার একটি মাছের খামার আছে। টেনশন গ্রুপের অন্যতম সদস্য মো. রাহাত প্রায়ই খামার থেকে মাছ নিয়ে যায়। এ নিয়ে রাহাতকে বললে সে রিয়াদুল ইসলামকে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদান করে আসছে।
সর্বশেষ গত ২৯ মে বুধবার বিকেলে খামার থেকে মাছ নিয়ে যায়। রাহাতকে না পেয়ে বিষয়টি সে রাহাতের বন্ধু বন্ধু সাইদুলকে জিজ্ঞাস করলে রাহাত ক্ষিপ্ত হয়ে হামলা চালিয়ে মোটরসাইকেল ভাংচুর করে ও তাকে রক্তাক্ত জখম করে।
এদিকে স্থানীয়রা বলছেন ক্ষমতাশীন দলের প্রভার খাটিয়ে মিজমিজি পশ্চিম পাড়া এলাকার বাসিন্দা নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি ও বর্তমানে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা শফিকুল ইসলাম শফির ছেলে রাইসুল ইসলাম সীমান্ত নেতৃত্বে টেনশন গ্রুপ পরিচালিত হয়।
বাবার পরিচয় দিয়ে রাজনৈতিক ছত্রচ্ছয়ায় থাকায় সে অবাধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। এই বাহিনীর কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে এলাকার সাধারণ মানুষ। স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীরা তাদের বখাটেপনা থেকে রক্ষা পায় না।
প্রতিবাদ করলে পরিবারের ওপর নানা ঝামেলা আসে। হুমকি-ধমকি দিয়ে ভয়ভীতি দেখানো হয়। ফলে কেউ আইনের আশ্রয় নিতে সাহস করেন না। প্রচণ্ড শব্দে বাইকের হর্ন বাজিয়ে ঘুরে বেড়ায় তারা। গভীর রাত পর্যন্ত চলে মহড়া। এই বাহিনীর সদস্যসংখ্যা অর্ধশতাধিক। অস্ত্র-মাদক তাদের নিত্যদিনের সঙ্গী।
এ বিষয়ে অভিযোগ তদন্তকারী কর্মকর্তা সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) মশিউর রহমান নয়ন বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তসাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থ্া নেয়া হবে।