নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

শনিবার,

২১ ডিসেম্বর ২০২৪

সদর মডেল থানার চাঞ্চল্যকর ক্লুলেস হত্যা মামলার আসামি গ্রেপ্তার

ব্যবসার টাকা নিয়ে বিরোধের জেরে স্বপনকে হত্যা করা হয়

নারায়ণগঞ্জ টাইমস

প্রকাশিত:২০:৩৫, ৭ মে ২০২৪

ব্যবসার টাকা নিয়ে বিরোধের জেরে স্বপনকে হত্যা করা হয়

নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার চাঞ্চল্যকর ক্লুলেস স্বপন হত্যা মামলার ঘটনায় জড়িত হত্যাকারী ও হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী আসামি নুরুল আমিন (৪২) কে ঢাকার দক্ষিণ কেরণীগঞ্জ এলাকা হতে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-১০ ও র‌্যাব-১৪ এর যৌথ আভিযানিক দল।

গ্রেপ্তারকৃত নুরুল আমিন সদর মডেল থানার এনায়েত  নগর ইমাম হোসেনের ছেলে। মঙ্গলবার (৭ মে) গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন র‌্যাব-১০’র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) এম. জে. সোহেল।

এরআগে সোমবার দিবাগত রাতে সাড়ে ৯টায় র‌্যাব-১০ এর একটি আভিযানিক দল গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় এবং র‌্যাব-১৪ এর সহযোগিতায় ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানাধীন কদমতলী এলাকায় একটি যৌথ অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেপ্তার করে।

গ্রেপ্তারের পর নুরুল আমিন স্বীকারোক্তি দেয়, ব্যবসায় বিনিয়োগকৃত টাকা লেনদেন সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে স্বপনের সাথে বিরোধের জের ধরে পরিকল্পিতভাবে সে ও তার ভাই রুহুল আমিন অজ্ঞাতনামা অন্যান্য আসামিদের সহযোগীতায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথারি আঘাত করে স্বপনকে হত্যা করে।

গণমাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয় গত ১১ মার্চ  সকাল সোয়া ১০টার দিকে নারায়নগঞ্জ সদর নৌ থানায় কর্মরত এসআই মো. সবুর মিয়া সঙ্গীয় ফোর্সসহ নৌ টহল করা কালে সংবাদ প্রাপ্ত হন যে নারায়ণগঞ্জ জেলার সদর থানাধীন আলআমিন নগর এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদীর পশ্চিম পাড়ে একটি অজ্ঞাতনামা ভিকটিমের (৩৫) মৃতদেহ ভাসতেছে। 

পরবর্তীতে এসআই মো. সবুর মিয়া মৃতদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুলকালে অজ্ঞাতনামা ভিকটিমের চোখের ডান পাশে ও কোমরের উপরের তলপেটে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের মাধ্যমে কাটা রক্তাক্ত জখম এবং বুকে রক্ত জমাট আঘাতের চিহ্ন দেখতে পান। 

এ ঘটনায় লাশ উদ্ধারকারী কর্মকর্তা এসআই মো. সবুর মিয়া বাদী হয়ে সদর মডেল থানায় অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-১৬, তারিখ- ১২/০৩/২০২৪ খ্রিঃ; ধারা-৩০২/২০১/৩৪ পেনাল কোড ১৮৬০।

মামলা রুজুর পর প্রাথমিক তদন্তে ভিকটিমের নাম পিয়ার আলী স্বপন (৩৫) এবং ভিকটিম নারায়নগঞ্জ জেলার ফতুল্লা এলাকায় বসবাস করতেন বলে জানা যায়। ভিকটিম স্বপনের সাথে আসামী নুরুল আমিন তার ছোট ভাই রুহুল আমিন (৩৯), অংশাদারি ভিত্তিতে কাপড়ের ব্যবসা করতেন। 

উক্ত ব্যবসায় বিনিয়োগকৃত টাকা লেনদেন সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে ভিকটিমের সাথে বিরোধের জের ধরে পরিকল্পিতভাবে আসামী নুরুল আমিন ও রুহুল আমিন অজ্ঞাতনামা অন্যান্য আসামিদের সহযোগীতায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথারি আঘাত করে ভিকটিমকে হত্যা করে।

পরে লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে নারায়ণগঞ্জ জেলার সদর থানাধীন আলআমিন নগর সাকিনস্থ এস এস ডক ইয়ার্ড সংলগ্ন শীতলক্ষ্যা নদীতে ফেলে দেয়।

এদিকে এ হত্যার ঘটনায় মামলা রুজুর বিষয়টি জানতে পেরে হত্যাকান্ডে জড়িত সকল আসামিরা আত্মগোপনে চলে যায়। ঘটনাটি জানতে পেরে র‌্যাব-১০ ও র‌্যাব-১৪ এর একটি যৌথ আভিযানিক দল পিয়ার আলী স্বপন হত্যাকান্ডে জড়িত সকল আসামিদের গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে।

পরে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় এবং র‌্যাব-১৪ এর সহযোগিতায় ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানাধীন কদমতলী এলাকায় একটি যৌথ অভিযান চালানো হয়। এ সময় নৃশংস হত্যাকান্ডে জড়িত ও হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী আসামি নুরুল আমিন গ্রেফতার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত নুরুল আমিন এ হত্যাকান্ডে তার সরাসরি জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। সে মামলা রুজুর পর হতে নিজেকে আইনের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য রাজধানী ঢাকা, আশুলিয়া ও সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় আত্মগোপন করে।

গ্রেফতারকৃত নুরুল আমিনের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।