নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে অভিযান চালিয়ে মানবপাচার চক্রের মূলহোতাসহ ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১১। গ্রেপ্তাররা হলো- মানবপাচার চক্রের মূলহোতা মিলন ফকির (৪২), তার দুই সহযোগী রিজাউল ফকির (৬৫) ও তাসলিমা বেগম (৫৫)।
তাদের বিরুদ্ধে ২০১২ সালের মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনের ৬/৭/৮ ও ১০ ধারায় মামলা রয়েছে। র্যাব ওই মামলার সূত্রধরে আড়াইহাজার থানা এলাকায় তাদের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে রবিবার (৫ মে) অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে।
র্যাব জানায়, এ চক্রের মূলহোতা মিলন ফকির দীর্ঘদিন ধরে লিবিয়া থেকে মানব পাচারের কাজ করে আসছে। বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে বেকারত্ব ও দারিদ্রের সুযোগ নিয়ে তার চক্রের অন্যান্য সদস্যদের মাধ্যমে বিদেশে ভালো চাকরী দেওয়ার লোভ দেখিয়ে মানব পাচার করে আসছে।
এরই ধারাবাহিকতায় ফরিদপুরের ভাংগা থানার গোয়ালদী গ্রামের সহিদুল শেখ (৪৮) এর ছেলে জুবায়েদকে ১২ লাখ টাকার বিনিময়ে ইতালিতে মোটা টাকার বেতনের চাকরীর প্রলোভন দেখিয়ে আসে। বেকারত্বের অভিশাপ থেকে বাঁচার জন্য জুবায়েদের হত দরিদ্র বাবা-মা জায়গা-জমি বন্ধক রেখে অনেক কষ্ট করে টাকা জোগার করে উপরোক্ত মানব পাচার চক্রের সদস্য রিজাউল ফকির ও তাসলিমা বেগমকে দেয়।
২০২২ সালের ২৯ আগষ্ট গ্রেপ্তারকৃতরা পরস্পর যোগসাজসে জুবায়েদকে পাচারের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে নিয়ে লিবিয়া পাঠিয়ে দেয় । এরপর থেকে জুবায়েদের আর খোঁজ না পেয়ে তার বাবা-মা মূলহোতা মিলনের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে সে আরো ১০ লাখ টাকা দাবী করে তার ছেলেকে ফিরিয়ে দেবার কথা বলে।
এরই মধ্যে হঠাৎ করে জুবায়েদ একদিন ফোন করে জানায় তাকে প্রচুর অত্যাচার করেছে এবং ট্রলারে করে তাকে সাগরে নিয়ে যাচ্ছে। তার বাবা-মা এতে আতঙ্কিত হয়ে মূলহোতা মিলনকে আরো ৬ লাখ টাকা দিলেও তার ছেলেকে অদ্যাবধি খুঁজে না পেয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে ২০১২ সালের মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনের ৬/৭/৮ ও ১০ ধারায় মামলা দায়ের করেন। এ মামলার সূত্রধরেই তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাব আরও জানায়, গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ কার্যক্রমের জন্য ফরিদপুর জেলার ভাংগা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।