নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

বৃহস্পতিবার,

২১ নভেম্বর ২০২৪

মাকসুদ প্রমাণ করেছেন উনি রাজাকার : সেলিম ওসমান

নারায়ণগঞ্জ টাইমস

প্রকাশিত:২২:৪৮, ৩০ মার্চ ২০২৪

মাকসুদ প্রমাণ করেছেন  উনি রাজাকার : সেলিম ওসমান

নারায়ণগঞ্জ ৫ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ সেলিম ওসমান বলেছেন,  আমি আজকের এই রোজার দিনে আপনাদের কষ্ট দিয়ে পরম করুনাময় মহান আল্লাহতালার কাছে আমি ক্ষমা চাই। আল্লাহ তালা আমাদেরকে ক্ষমা করে দিবেন। আপনারা আমাকে ক্ষমা করে দিবেন। যদি আপনাদের কোন কষ্ট হয় আল্লাহর অস্তে দেশের স্বার্থে এলাকার স্বার্থে আপনার নিজেদেরকে একটু মননিবেশ দিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় একটু প্রস্তুত হবেন। তার জন্যই আজ এত কষ্ট করা।

আমার শরীর চলে না তারপরও আমি আজ আমি এখানে এসেছি। আমার বিছানায়  শুয়ে থাকার কথা। আসাটাই আমার দায়িত্ব আসাটাই আমার কর্তব্য। অনেকেই এখান থেকে বলবেন সেই যে নির্বাচন করে গেলেন আর তো এখানে আইলেন না। এটি একটি স্বাভাবিক কথা।

কারন এবার দেখেছেন সরকার গঠন করার জন্য খুব সংক্ষিপ্ত টাইমে হয়েছিল এবং সরকার গঠনের পরেই সংসদ শুরু হয়ে যায়। মাত্র ১৮ দিন সময় পেয়ে ছিলাম আমি নির্বাচন করার জন্য। এই ১৮ দিনে বন্দরের মানুষ আমাকে  কতখানি ভালবাসে তার পরিচয় উনারা দিয়েছেন। সুতরাং  আমার কিছু করার  নাই। ভালোবাসার মানুষের জন্য আসতে হবে।

শনিবার (৩০ মার্চ) বিকেল ৪টায় বন্দর উপজেলার ধামগড় ইউনিয়ন পরিষদের মাঠে বন্দর উপজেলা জনপ্রতিনিধি, আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি নেতৃবৃন্দ সাথে উন্নয়ন মূলক মত বিনিময় সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে  প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি আরো বলেন, আমি যদি আসি আমার সাথে সঙ্গী লাগবে। আমি একা কিছু করতে পারবো না। কোন দিন সেটা তা সম্ভব না। আমার নির্বাচনের পরে  আমার জনপ্রতিনিধিদের সকলকে আমার অফিসে ডাকলাম। যখন আমি জানতে পারলাম উপজেলা নির্বাচন হবে। সবাই উৎসাহিত  উপজেলা নির্বাচন করবে। শুধু একটা মানুষ কথা বলে না। সে হলো রশিদ ভাই।

আমার সব চেয়ারম্যানরাই নির্বাচন করবেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজিম উদ্দিন প্রধানও নির্বাচন করবেন। সবার ইচ্ছা থাকে আমি একটু এগিয়ে যাই। কিন্তু আমার অভিজ্ঞতা অনুযায়ী  আমি সেদিন বলেছিলাম আমাকে যদি সমর্থন দিতে বল আমি পুরনো ২ জনকেই সমর্থন দিব সেইটা রশীদ ভাই আর সানু।

ওই দিন আমার কথাটা অনেকে তা বুঝতে পারেনি। আমি কিন্তু চেয়েছি কিন্তু নির্দেশ দেইনি। এতক্ষণ ভদ্র ভাষায়  আমি চেয়েছি তোমরা আমাকে দাও আমাকে কাজ করতে সুবিধা হবে। এই কদিন আমি কোন কাজ করতে পারছি না। মানডান আসলেও সেগুলো আমরা যোগাড় করতে পারছি না। কারন একটি সংসার যদি ভেঙ্গে যায় সেটা কাজ করাতে অনেক কঠিন হবে।

আমার পাঁচটি সন্তানের মত আমার ৫টি চেয়ারম্যান আমার সাথে কাজ করেছে।   ৪ জন আমার কাছে ফিরে এসেছে আমার অন্তরে চলে এসেছে। চারজনের মধ্যে সত্যিই একজন যদি উপজেলার দায়িত্ব নিতে পারত তাহলে  আমাদের সংগ্রামী সালাম সবার আগে নিতে পারত। তাকেই দেওয়া উচিত ছিল একজন ইয়াং মানুষ হিসেবে সে একজন সুন্দর বক্তা তাকে দেওয়া উচিত ছিল। সে বঙ্গবন্ধুর একজন আর্দশ সৈনিক।

আমি যখন তার কাছে আহ্বান করলাম। আমরা কদিন বাঁচে থাকব তোমরা তো বাঁচবা। আমার সকল চেয়ারম্যানের কাছে আহ্বান করলাম তোমাদের কাছে তো আরো আড়াই বছরের সময় থাকবে। চেয়ারম্যান করতে পারবা। আর যদি তোমরা চাও রিজাইন দিয়ে তারপরে উপজেলা নির্বাচন করবা তাহলে আমাকে এখন থেকেই চেয়ারম্যান খুঁজতে হবে।

মুসাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাকসুদ এর উদ্দেশ্য করে এমপি আরো বলেন, ইতিমধ্যে আমি একটি এলাকায় চেয়ারম্যান খোঁজা শুরু করেছি। তাকে নিয়ে কাজ করব।এখন দুইজন আমার অমতে নির্বাচন করার চিন্তা ভাবনা করছে । আমি বলিনা একজন তো  নিজেই বলেন রাজাকার সন্তান। মাকসুদ প্রমাণ করেছে করে দিয়েছেন উনি রাজাকার। আমি কখনো এটাকে ধরি নাই।

মানুষের জন্য কাজ কর। আগের পাপ বাপ দাদার পাপ ভুলে যাও। পাপে বাপেকেও ছাড়ে না। মাকসুদ সাহেব আমি আজকে এতগুলো মানুষের সামনে আবারো বললাম আল্লাহর কাছে মাফ চান। এবং আবার ফিরে আসেন আমি আপনাকে কিছু বলব না। তবে মনে রাখবেন আমরা মুক্তিযোদ্ধা। যদি ভালোই ভালোই কথা শুনেন তো শুনবেন। না হলে মুগুর কিভাবে বানাতে হয় দেখবেন। মুগুরের মাধ্যমে কিন্তু আপনাকে ক্ষতিগ্রস্ত করা হবে।

আমি বললাম কথা দিলাম আপনি আগামী কালকের মধ্যে উর্ধ্ব করেন।  আপনার সঙ্গে ৪ জন চেয়ারম্যন যেভাবে আমার কথা শুনেছেন আমার সামনে বসেছে আপনি মাসুদ সাহেব আপনিও আসেন। আপনার এত টাকা কোথায় থেকে হল মাসুদ সাহেব। আপনি বাড়ি বাড়ি টাকা দেওয়া শুরু করেছেন। আমার কাছে আমার হিসাব পরে। প্রায়  ৩ কোটি টাকা ইতিমধ্যে আপনি খরচ করে ফেলেছেন।

ঐদিন নাইরে নাতি খাবলাইয়া হাবলাইয়া খাতি। আপনি ভুলে যাবেন না বাংলার মানুষ আপনাদের ক্ষমা করবে না। যদি আপনি আপনার রাজাকার পরিচয়টা দেন। আপনি আমার সন্তান হিসেবে জানেন। মাথায় টুপিও দাড়ি লাগিয়ে বইলেন না আমি মানুষের উপকার করি। কেন এই রমজান মাসে মানুষকে আপনি বিভ্রান্ত করছেন। আপনি মহিলাদের বলছেন আমাকে ভোট দিলে ৩০০ করে টাকা দিবেন। মহিলাদের ৩০০ টাকা অত্যন্ত প্রয়োজন।

আপনি কেন একটি মানুষকে খারাপ বানানোর চেষ্টা করছেন। আমি আপনাকে নিষেধ করলাম। আমার ভবিষ্যত প্রজন্ম আমার মৃত্যু হলো কিন্তু আপনাকে ছাড়বে না। আপনি কেন বসলেন না আপনি কেন আলোচনা করলেন না। আপনি মনে করলেন আমার জন্য একটি গরম চাদর ও দুই প্যাকেট মিষ্টি ও আমার বউয়ের জন্য একটি শাড়ি  দিয়ে আপনি উপজেলা চেয়ারম্যান হয়ে যাবেন। ঐদিন ভুলে যান।

আরেক জন মানুষ আমার অত্যন্ত প্রিয় মানুষ। যিনি রশিদ ভাইয়ের  আগে উপজেলার চেয়ারম্যান ছিলেন। সব কিছুর একটা সময় আছে।  উনাকে একটা দল বহিস্কার করেছে। উনি আমার কাছে গিয়ে ছিলেন। আমার কাছে শুনতে চেয়েছেন। আমি তাকে বলেছি আপনি এখ কোন দলের সদস্য না।আপনাকে মানুষে ভালোবাসে। তার মধ্যে কোন ভুল নাই। আপনি একজন মুরুব্বী হিসাবে থাকেন। আপনাকে বিভিন্ন স্কুলের সভাপতি বানিয়ে দিয়েছি। আপনি আপনার মান সম্মান নিয়ে বেচে থাকেন। আপনি আর রাজনীতির পথে যেয়েন না।

আজকে আপনারা হতবাক হবেন আমার মত একজন বৃদ্ধ আমি আগামী পাঁচ বছর বাঁচবো কিনা জানি না। রশিদ ভাইয়ের মত একজন বৃদ্ধ। আজকের  আমার বড় ভাই সভাপতি  ওসমান গনী ভাই আমরা যখন একসাথে কথা বলি তখন অতীতের কথা মনে পড়ে। আমাদেরকে দেখতে বুড়া দেখবেন কিন্তু মনে রাখবেন বাঘের থাবা এটা কোন মুক্তিযোদ্ধার যায় না। মাসুদ সাহেব আপনি ঘরের ছেলে ঘরে ফিরে আসেন। আজ আমি বিরোধী দলের রয়েছি এর মধ্যে কোন ভুল নাই।

আজ  কে আমাকে বিরোধী দলে রেখেছে। এ আমার সিটে আরেক জনকে নমিনেশন  দেয়নি। কেন আওয়ামীগ থেকে নৌকা মার্কা দেওয়া হলো না। কারন আওয়ামী লীগের মানুষ সেলিম ওসমানকে ভালোবাসে। হুট করে আওয়ামীলীগের একজনকে মেনে নেওয়া যায় না। ভবিষ্যৎ যদি থাকে দেখা যাবে। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে স্বাধীনতার ৫৩ বছর পার করে দিয়েছে আর কি চাই আল্লাহর দরবারে। আজ আমার বন্দরে হাজার হাজার নাতি-নাতনি। যে স্কুলের সামনে যাই সেই স্কুল থেকে দাদা দাদু করে ছুটে আসে। এ জীবনে আর কি চাইতে থাকতে পারে।

বন্দর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মুকুলকে উদ্দেশ্য করে এম পি আর  বলেন, আমি সরাসরি নাম বলছি মুকুল আমার ছোট ভাই। আপনি এ পদ থেকে সরে দাঁড়ান। এটা কোন ভাবে কোন ধরনের হুমকি না। মুকুলে মা একজন পবিত্র মানুষ ছিলেন। পরহেজগার মানুষ ছিলেন। তিনি কয়েকবার আমাকে ওনার বাসায় নিয়ে আমাকে দোয়া পড়ে ফু দিয়ে ছিলেন। আমরা পারিবারিক সম্পর্কের মতোই ছিলাম।

আর রশিদ ভাইয়ের সাথে যে সম্পর্কটা দেখেছেন আপনারা দেখেছেন আমি মঞ্চে উঠার সাথে  রশিদ ভাইয়ের পায়ের সালাম করি আমি মঞ্চে উঠেছি। কারন রশিদ ভাই এ কে এম শামসুজ্জোহা বীর মুক্তিযোদ্ধা বঙ্গবন্ধু সহচর  বিশ্বস্ত কর্মী ছিলেন এই এম এ রশিদ ভাই। এই স্বাধীনতা যুদ্ধ থেকে আরম্ভ করে ৭৫ ওয়ান ইলেভেন সমস্ত কিছু মোকাবেলা করেছেন উনি। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আমাদেরকে বুড়া মনে করবেন না। আমরা বলতে জানি আমরা করতে পারি। আর না হলে বলেন আজকে ৪ জন চেয়ারম্যান তারা কেন সবাি আসলো।

সালামের বিপ্লবী আওয়াজ শুনে আমার বয়স ৫০ বছর কমে গেছে। আমার ভাই নাসিম ওসমানের বিশ্বস্ত কর্মী ছিল সানাউল্লা সানু। সানুকে দিয়ে অনেক কিছু করিয়েছি। সানুর শারীরিকভাবে অনেক অসুস্থ।  মানুষের দোয়া আছে বলেই সানু আমার সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছে । চান ওমরা করে আমার সাথে দেখা করতে আসছিল আমি বলেছি সানু আমার সাথে দেখা করার দরকার নাই তুমি আল্লাহর কাছে চাও আল্লাহকে বল আল্লাহ তোমার ইজ্জত সম্মান দেয়।

রশিদ ভাই নির্বাচন করতে চাইনি। আমাকে এক পর্যায়ে বলতা হয়েছে আপনি নির্বাচন না করলে আমি জাতীয় সংসদ সদস্য পদ ছেড়ে দেব।আমি কোন রাজাকারের সাথে কাজ করতে পারবো না।  আপনাদের মাধ্যমে মাকসুদ সাহেবের কাছে দাওয়াত পাঠালাম। গত উপজেলা নির্বাচনে আপনারা কেউ কি ভোট দিয়ে ছিলেন। আপনারা ভোট দেননি শুধু আমি একমাত্র ভোট দিয়েছি।

আমি আমার আপাকে বলেছিলাম আপা আপনি আমার উপজেলা কে সাজিয়ে দেন। মহিলা চেয়ারম্যানদের বিষয়ে আসামী কিছুই বলবো না। ১৫ তারিখের পর বন্ধুর আসা যাবেনা যেহেতু উপজেলা ইলেকশন।

ধামগড় ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান   আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ওসমান গনি ভূঁইয়া সভাপতিত্বে উন্নয়ন মূলক মত বিনিময় সভা ও দোয়া মাহফিল উপস্থিত ছিলেন বন্দর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এম,এ রশিদ, সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব কাজিম উদ্দিন প্রধান, বন্দর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সানাউল্লাহ সানু,বন্দর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এহসান উদ্দিন, কলাগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলাহাজ্ব দেলোয়ার প্রধান, মদনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব এম এ সালাম, ধামগড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল হোসেন, বন্দর উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী সদস্য একেএম ইব্রাহিম কাশেম, বন্দর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী সালিমা হোসেন শান্তা, বন্দর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মাসুম আহমেদসহ আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।