সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশের সোর্স একাধিক মামলার আসামি ইকবাল দিন দিন বেপরোয়া উঠছে। পুলিশের নাম ভাঙ্গিয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে পুরো থানা এলাকা। নানা অভিযোগে অভিযুক্ত পুলিশের সোর্স ইকবাল সুযোগ বুঝে থানার পাশ^বর্তী অন্য থানা এলাকাতেও নির্বিঘ্নে অপরাধ সংগঠিত করছে।
বিভিন্ন অপরাধীদের গ্রেপ্তারে ইকবালের সহযোগিতা নিয়ে থাকে পুলিশ। এ সুযোগে ইকবাল অপরাধী ছাড়াও অনেক নিরপরাধ মানুষকে গ্রেপ্তার করিয়ে স্পট থেকেই মোটা অংকের টাকা নিয়ে ছেড়ে দেয় বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
পুলিশের সঙ্গে সখ্যতার সুযোগেই অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠছে ইকবাল। চাঁদাবাজি, দেহ ব্যবসা, মাদক ব্যবসাসহ এমন কোনো অপরাধ নেই, যা সে নিয়ন্ত্রণ করছে না।
অনুসন্ধানে জানা যায়, সিদ্ধিরগঞ্জে মিজমিজি দক্ষিনপাড়া এলাকার হাফিজুল ইসলামের ছেলে একাধিক মামলার আসামী ইকবাল পুলিশের সোর্স পরিচয়ে সিদ্ধিরগঞ্জে সর্বেসর্বা হয়ে উঠেছেন।
পুলিশের সাথেই গাড়ি, মোটরসাইকেল, হ্যান্ডকাফ নিয়ে আসামি ধরতে ঘুরে বেড়ানোর কারনে অনেকে তাঁকে পুলিশই মনে করে। বিভিন্ন জায়গায় নিজেই পুলিশ পরিচয়েও গ্রেপ্তারের নামে ফিটিং বানিজ্য করে বেড়ায়।
সিদ্ধিরগঞ্জে বিভিন্ন এলাকায় রাস্তাঘাটে তল্লাশির নামে ইকবালের ‘ফিটিং’ বাণিজ্য এখন ওপেন সিক্রেট। রাতে চলাচলরত মানুষকে তল্লাশির নামে পকেটে ইয়াবা কিংবা গাঁজার পুরিয়া দিয়ে ফিটিং দেয়ারও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। আবার কখনও কখনও মিথ্যা মামলার ভয় দেখিয়েও সে নিরপরাধ মানুষের অর্থকড়ি হাতিয়ে নেয়।
এছাড়াও পুলিশের সাথে আতাত করে ইকবাল বিভিন্ন এলাকায় মাদক সাপ্লাই দিয়ে ধ্বংস করে দিচ্ছে উঠতি বয়সের যুবকদের ভবিষ্যৎ।
ইতিমধ্যে ইকবালসহ আরও দুই সোর্সের মাদক প্যাকেটজাত করার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। সম্প্রতি এদের মধ্যে একজন সোর্স আল আমিন গ্রেপ্তার হলেও অদৃশ্য শক্তির কারণে ইকবালের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় না পুলিশ।
একাধিক সূত্রমতে, সোর্স ইকবালের ভুয়া তথ্যে পুলিশ সদস্যদেরও অনেক সময় অনাকাক্ষিত পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়। আবার অপরাধীদের নির্বিঘ্নে অপরাধ সংঘঠিত করে পার পেয়ে যায়।
ইকবাল সিদ্ধিরগঞ্জের প্রতিটি এলাকায় দাবিয়ে বেড়াচ্ছে। বিশেষ করে নাসিক ৪ নং ওয়ার্ড শিমরাইল এলাকার প্রতিটি মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে প্রতিদিন ৬টা থেকে ৯ টা পর্যন্ত গড়ে ৫’শ থেকে ১’হাজার টাকা করে চাঁদা আদায় করে এবং পুলিশ আসার ভয় দেখিয়ে মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে এক কালিন ৫ থেকে ১০’হাজার টাকা আদায় করে।
পুলিশ অভিযানে আসার আগেই ইকবাল মাদক ব্যবসায়ীদের বলে দেয় পুলিশ আসতেছে এখন মাদক ব্যবসা বন্ধ কর, অন্যথায় ধরে নিয়ে গেলে আমি এ ব্যাপারে কিছু জানি না।
ইকবাল গত কয়েকদিন আগে আব্দুল আলী পুল এলাকার মাদক ব্যবসায়ী রুস্তমকে কাঁচপুর থেকে ধরে এনে ৮০ হাজার টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেয়, তার একদিন আগে রুস্তমের ভাইকে ধরে ২৫ হাজার টাকা নেয়, তার কয়েকদিন আগে সোনারগাঁয়ের গঙ্গাপুর এলাকার মাদক ব্যবসায়ী নূর হোসেনকে ধরে ২৫ হাজার টাকার বিনিময় ছেড়ে দেয়।
আব্দুল আলী পুল, মিজমিজি দক্ষিণপাড়া কান্দাপাড়া নতুন মহল্লা হিরাঝিল, বাতান পাড়া তেরা মার্কেট, শিমরাইল বউবাজার, টেক পাড়া, শিমরাইল উত্তরপাড়া ও কাচপুর ব্রিজের নিচে তার এই আধিপত্য।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, বিষয়টি আমার জানা নাই। যদি কোন সোর্স মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে পুলিশের নাম করে চাঁদা আদায় করে তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।