সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইলে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ডিভাইডারের ওপর দিয়ে এখনো সড়ক পারাপার হচ্ছেন পথচারীরা। দুই মাস ধরেই তাঁরা এভাবে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছেন।
এই সুযোগে এক পরিবহন শ্রমিক ডিভাইডারের দুই পাশে মই টানিয়ে ৫ টাকার বিনিময়ে পথচারীদের ডিভাইডার পার করে দিচ্ছেন।
এ ঘটনার একটি ভিডিও গতকাল রোববার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। তার পর থেকে হাইওয়ে পুলিশ অভিযান চালিয়ে রাতে সেই মই দিয়ে পারাপার করে টাকা উত্তোলনকারীদের মূলহোতা রবিউলকে (২৬) গ্রেপ্তার করে চাঁদাবাজি মামলায় আদালতের মাধ্যমে সোমবার কারাগারে পাঠান।
এদিকে সোমবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মহাসড়কে সক্রিয় ছিল হাইওয়ে পুলিশ। মহাসড়কের মাঝে যাত্রী নামানোর দায়ে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত প্রায় ৫৯টি দূরপাল্লার যানবাহনকে মামলা দিয়েছে হাইওয়ে পুলিশ।
অন্যদিকে দুপুরের পর থেকে হাইওয়ে পুলিশে চলে গেলে দূরপাল্লার বাসগুলো আবার সেই আগের মতো সড়কের মাঝে যাত্রী নামাচ্ছেন। এতে যাত্রীরাও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেই আগের মতো করে ডিভাইডারের ওপর দিয়ে সড়ক পারাপার হচ্ছেন।
সোমবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের শিমরাইল মোড়ের সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর অফিসের সামনে এমন চিত্র দেখা মেলে।
ঝুঁকি নিয়ে সড়ক পার হচ্ছিলেন শাহানাজ বেগম। তিনি বলেন, বাস ড্রাইভারে আমারে রাস্তার মাঝখানে নামায় দিছে, এখন আমি এইটার ওপর দিয়া ছাড়া পার হমু কেমনে। আমার তো পার হওয়া লাগবোঁ। তাই এই ঝুঁকি নিয়ে এখন রাস্তা পার হইতাছি।
আব্দুল রশিদ নামে আরেক ব্যক্তি বলেন, আজকে অনেক দিন ধরে আমাকে এইভাবে সড়ক পারাপার করতে হয়, বাস ড্রাইভাররা পাশের লেনে যেতেই চায় না। তারা জোরপূর্বক আমাদের এখানে নামায় দেয়। তাই অসহায় হয়ে এখানে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আমাদের এখন মহাসড়ক পার হই। আমাদের এই দুঃখ দেখার মতো কেউ নাই।
কাঁচপুর হাইওয়ে থানার শিমরাইল ক্যাম্পের টিআই এ কে এম শরফুদ্দিন বলেন, ‘মহাসড়কের মাঝে যাত্রী নামার অভিযোগে আজ সকাল থেকে প্রায় ৫৯টি গাড়িকে মামলা দিয়েছি আমরা। আমাদের টিম সড়কে অবস্থান করছে। আশা করি ভবিষ্যতে কোনো যানবহন আর এখানে যাত্রী নামাবে না।
নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের (সওজ) নির্বাহী প্রকৌশলী শাহানা ফেরদৌস বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমরা হাইওয়ে পুলিশের সঙ্গে একাধিকবার কথা বলেছি। আমরা ও পুলিশের পক্ষ থেকে একাধিকবার পরিবহনগুলোকে সার্ভিস লেন দিয়ে চলাচলে বাধ্য করা হলেও তারা তা শুনছে না।
জানা গেছে, গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে দূরপাল্লার যানবাহনগুলো সরাসরি যেন ঢাকায় যেতে পারে সে জন্য চার লেনের ঢাকামুখী সড়কের সিদ্ধিরগঞ্জের কাঁচপুর ব্রিজ থেকে কুয়েতপ্লাজা এলাকা পর্যন্ত উঁচু ডিভাইডার দিয়ে দুই লেন বিভক্ত করে দেওয়া হয়। সে সঙ্গে আঞ্চলিক যানবাহন চলাচলের জন্য আরও দুই লেন রাখা হয়।
এত দিন দূরপাল্লার লেন থেকে আঞ্চলিক লেনে যাত্রীদের চলাচলের জন্য সওজ কার্যালয়ের সামনে একটি গেট খোলা রাখা হতো। ওই খানে দূরপাল্লার যানবাহনগুলো শিমরাইল মোড়ের যাত্রীদের নামিয়ে দিত। কিন্তু গত দুই মাস ধরে তা বন্ধ করে রেখেছে সওজ কর্তৃপক্ষ। দূরপাল্লার যানবাহনগুলো এখনো সেই স্থানেই যাত্রী নামিয়ে দিচ্ছে।