বন্দরে পুরাতন এসি বিক্রি করার প্রলোভন দেখিয়ে রাজিব নামে এক ব্যবসায়ীকে বসত ঘরে ডেকে এনে আটক রাখার পর শারীরিক নির্যাতনের পর নগদ ৬ হাজার টাকা ও ১টি এনড্রয়েট ফোন ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় মহিলাসহ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ধামগড় ফাঁড়ি পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো বন্দর থানার ২৭নং ওয়ার্ডের মুরাদপুর এলাকার পানু মোল্লা মিয়ার মেয়ে সুমি আক্তার (২৫) মদনপুর ছোটবাগ এলাকার জাহাঙ্গীর মিয়ার ছেলে মেহেদী (১৯) একই এলাকার হালিম মিয়ার ছেলে জুবায়ের (২০) ও আক্তার মিয়ার ছেলে রাকিব (২০)।
পুলিশ গ্রেপ্তারকৃতদের রবিবার (২১ জানুয়ারি) দুপুরে উল্লেখিত মামলায় আদালতে প্রেরণ করেছে পুলিশ। এর আগে শনিবার দিবাগত রাতে বন্দর থানার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে উল্লেখিত আসামীদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।
এ ব্যাপারে ভূক্তভোগী নির্যাতিত ব্যবসায়ী রাজিব বাদী হয়ে গত শুক্রবার (১৯ জানুয়ারী) রাতে মহিলাসহ ১০ জনের নাম উল্লেখ্য করে বন্দর থানায় এ মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং- ১৩(১)২৪ ধারা- ৩৪২/ ৩০৭/৩২৩/৩২৫/৩৮৫/৩৮৬/৩৭৯/৫০৬/ ৩৪/ পেনাল কোড-১৮৬০।
এ ব্যাপারে ভূক্তভোগী ব্যবসায়ী রাজিব জানান, আমি দীর্ঘ দিন ধরে ঢাকা সূত্রাপুর থানার ধোলাইখাল এলাকায় পুরাতন এসি ক্রয়/ বিক্রয়ের ব্যবসা করে আসছি। গত মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারী) বেলা ১১টায় একটি অজ্ঞাত মোবাইল ফোন থেকে আমার ব্যবহাকৃত ০১৬৪০-৪৩৩৪৮৮ নাম্বার ফোন করে পুরাতন এসি বিক্রয় করবে বলে জানায়।
পরে তাদের কথা মত ওই দিন দুপুর সোয়া ১২টায় বন্দর থানার মদনপুর পল্লী বিদ্যুৎ এর সামনে আসলে অজ্ঞাত নামা এক ব্যাক্তি আমাকে সেখান থেকে রিসিভ করে বন্দর থানার মদনপুর ছোটবাগস্থ জৈনক বিউটি বেগমের বাড়িতে নিয়ে যায়।
পরবর্তীতে সুমী আক্তার, জুবায়ের, রাকিব ও মেহেদীসহ উল্লেখিত এজাহারভূক্ত ১০ আসামীসহ অজ্ঞাত নামা আরো ৩/৪ জন সন্ত্রাসী আমাকে উল্লেখিত ঘরে আটক রেখে শারীরিক ভাবে নির্যাতন চালিয়ে ১ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। উল্লেখিত চাঁদাবাজরা আমাকে বেদম মারধর করে আমার সাথে থাকা নগদ ৬ হাজার টাকা ও ১৭ হাজার ৫'শ টাকা মূল্যের একটি এনড্রয়েট মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেওয়াসহ সারা রাত আটক রেখে মারধর করে।
পরে এ ব্যাপারে আমার সহযোগী রাকিবকে বিষয়টি মোবাইর ফোনে জানালে রাকিব অন্য কাজে ব্যাস্ত থাকায় সে আমার সহযোগী ব্যবসায়ী সেলিমকে আমার মোবাইল ফোনে কল করার জন্য বলে। পরে আমার সহকর্মী সেলিম মিয়া বিবাদীদের কথা মতে পুরাতন এসি কেনার কথা বলে মদনপুর পল্লী বিদ্যুৎতের সামনে আসার জন্য বলি।
পরে আমার সহকর্মী সেলিম মিয়া ও কাশেম শেখ মোটর সাইকেল যোগে মদনপুর পল্লী বিদ্যুৎতের সামনে আসলে ওই সময় উল্লেখিত চাঁদাবাজরা সেখান থেকে আমার সহকর্মীদের রিসিভ করে ঘটনাস্থলে নিয়ে আসে।
ওই চাঁদাবাজরা আমার সহকর্মী সেলিমকে হত্যার উদ্দেশ্য বুকে লাঠি দিয়ে আঘাত করে গুরুত্বর জখম করে তার ব্যবহারকৃত ১ টি এনড্রয়েট ও ১ টি বাটান মোবাইল সেটসহ নগদ ২৫ হাজার টাকা, মার্কেন্টাল ব্যাংক এর একটি এটিএম কার্ড, ৪ ভরি ওজনের একটি রুপার চেইন ও ২টি রুপার আংটি ছিনিয়ে নেয়।
আমার অপর সহকর্মী কাশেম শেখের কাছ থেকে নগদ ২৭ হাজার টাকা, ১টি এনড্রয়েট মোবাইল সেট, ব্রাক ব্যাংক, মার্কেন্টাল ব্যাংক এর ১ টি ও ডাচ বাংলা ব্যাংকের ১ টি এেিটম কার্ড ও তাদের ব্যবহাকৃত মোটর সাইকেলের চাবিসহ কাগজপত্র জোর পূর্বক ছিনিয়ে নেয়।
পরে সকল বিবাদীগন জোর পূর্বক ১০০ টাকা মূল্যের ৬টি স্টাম্পে স্বাক্ষর রাখে। পরবর্তী গত ১৭ জানুয়ারী রাত পৌনে ১২ টায় উল্লেখিত ঘর থেকে বের করে দেয়।
পরে আহত সেলিমকে জখম অবস্থায় উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতালে প্রেরন করে। এ ঘটনায় আমি বন্দর থানায় মামলা দায়ের করলে পুলিশ গত শনিবার রাতে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে মহিলাসহ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।
এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা এস আই তহিদুজ্জামান জানান, ১০ জনের নাম উল্লেখ্য করে বন্দর থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ মামলায় মহিলাসহ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি। বাকি আসামীদের গ্রেপ্তারের জন্য আমাদের অভিযান অব্যহত রয়েছে।