আড়াইহাজারে ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের দিন ভোট কেন্দ্রে সংঘর্ষের ঘটনায় মামলায় গ্রেপ্তার সিরাজুল আরেফিন জয়কে একদিনের রিমান্ড শেষে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ।
রবিবার (১৪ জানুয়ারি) দুপুরে রিমান্ড শেষে আসামিকে আদালতে আনা হলে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। রিমান্ডকৃত সিরাজুল আরেফিন জয় আড়াইহাজার থানাধীন রামচন্দ্রদী গ্রাামের মূছা মিয়ার ছেলে।
নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান আসাদ এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
প্রসঙ্গত. গত ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের দিন ভোট কেন্দ্রে সংঘর্ষের ঘটনায় এসআই (নিঃ) মোঃ মহিববুল্লাহ বাদী হয়ে লাঙ্গল প্রতীক প্রার্থী আলমগীর শিকদার লোটনের সমর্থক মো. মাসুম সিকদারকে ১নং আসামি করে ৯জনের বিরুদ্ধে আড়াইহাজার থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলায় উল্লেখ্য করা হয়- ৬৪ (৫৬নং রামসসৌচন্দ্রদী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়) পুরুষ ভোটকেন্দ্র-১, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন-২০২৪, সংসদীয় আসন-২০৫, নারায়নগঞ্জ-২ এর কেন্দ্র ইনচার্জ হিসেবে বিধি মোতাবেক দায়িত্ব পালন করি।
নির্বাচনের দিন সকাল আটটার সময়ে ভোট গ্রহণ শুরু হয়ে সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খল ভাবে বিধি মোতাবেক ভোট গ্রহন কার্যক্রম চলছিল। ভোট চলাকালে ৭ জানুয়ারি সময় অনুমান সকাল পৌনে দশটার দিকে লাঙ্গল প্রতীক প্রার্থী জনাব আলমগীর শিকদার লোটন এর সমার্থক মো. মাসুম সিকদার (২৪). মো আমির হোসেন (২৭), সিয়াম সরকার (১৯), মো. নাঈম ইসলাম (২৫), সিরাজুল আরফিন (২৮), খলিল (১৮), সাইম সিকদার (৩০), হযরত আলী (১৫), ও জান্নাতুল ফেরদৌস জান্নান ওরফে শামীম (১৬) সহ অজ্ঞাত নামা আরো অনেকে।
৫৬নং রামচন্দ্রদী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় পুরুষ ও মহিলা ভোট কেন্দ্রে অবৈধ ভাবে প্রবেশ করিয়া উক্ত ভোট কেন্দ্রে বিশৃঙ্খলা শুরু করে। আমি তাদের শান্ত হইতে বলিলেও উক্ত আসামীরা ভোট কেন্দ্রে আকস্মিক হামলা করে ৫৬নং রাম চন্দ্রদী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় পুরুষ ও মহিলা ভোট কেন্দ্রের বিভিন্ন কক্ষে ঢুকিয়া ভাংচুর শুরু করে।
এতে ভোট কেন্দ্রে আগত ভোটরগণ ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে দিক-বিদিক দৌড় ঝাপ করতে শুরু করেন এবং ৫৬নং রাম চন্দ্রদী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় পুরুষ ভোট কেন্দ্রের দায়িত্ব প্রাপ্ত প্রিজাইডিং অফিসার শাহিন আলম সহকারী প্রকৌশলী (জনস্বাস্থ্য) আড়াইহাজার, নারায়নগঞ্জকে ভয়ভীতি উক্ত কেন্দ্রে প্রবেশ পূর্বক ১নং বুথে কর্তব্যরত সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার জনাব নুরুন নাহারকে ভয়ভীতি দেখাইয়া তাহার কাছ থেকে ১০০টি ব্যালট পেপার, ১টি মার্কিং সীল, ১টি ভোটার তালিকা, ১টি স্টীলের পাত ও ১টি অমুছনীয় কালি ছিনিয়ে নিয়ে যায় ও ১টি ব্যালট বাক্স ভেঙ্গে ফেলে ও কালো কাপড় দিয়ে তৈরী কৃত ১টি বুথ ভেঙ্গে ফেলে।
২নং বুথে কর্তব্যরত সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার জনাব শাহজালালকে ভয়ভীতি দেখাইয়া তাহার কাছ থেকে ১০০টি ব্যালট পেপার, ১টি মার্কিংসীল, ১টি ভোটার তালিকা, ১টি স্টীলের পাত ও ১টি অমুছনীয় কালি ছিনিয়ে নিয়ে যায় ও কালো কাপড় দিয়ে তৈরী কৃত ১টি বুথ ভেঙ্গে ফেলে।
৩নং বুথে কর্তব্যরত সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার জনাব লুৎফুন্নহারকে ভয়ভীতি দেখিয়ে তাহার কাছ থেকে ১০০টি ব্যালট পেপার, ১টি মার্কিংসীল, ১টি ভোটার তালিকা, ১টি স্টীলের পাত ও ১টি অমুছনীয় কালি ছিনিয়ে নিয়ে যায় ও ১টি ব্যালট বাক্স ভেঙ্গে ফেলে ও কালো কাপড় দিয়ে তৈরীকৃত ১টি বুথ ভেঙ্গে ফেলে।
৪নং বুথে কর্তব্যরত সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার জনাব পুলিন চন্দ্র রায়কে ভয়ভীতি দেখিয়ে তাহার কাছ থেকে ১০০টি ব্যালট পেপার, ১টি মার্কিংসীল, ১টি ভোটার তালিকা, ১টি স্টীলের পাত ও ১টি অমুছনীয় কালি ছিনিয়ে নিয়ে যায় ও কালো কাপড় দিয়ে তৈরী কৃত ১টি বুথ ভেঙ্গে ফেলে।
৫নং বুথে কর্তব্যরত সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার জনাব শফিকুল ইসলামকে ভয়ভীতি দেখিয়ে তার কাছ থেকে ১০০টি ব্যালট পেপার, ১টি মার্কিং সীল, ১টি ভোটার তালিকা, ১টি স্টীলের পাত ও ১টি অমুছনীয় কালি ছিনিয়ে নিয়ে যায় ও কালো কাপড় দিয়ে তৈরী কৃত ১টি বুথ ভেঙ্গে ফেলে।
৫৬নং রাম চন্দ্রদী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়) মহিলা ভোট কেন্দ্রে ৬৫নং ভোট কেন্দ্রের দায়িত্ব প্রাপ্ত প্রিজাইডিং অফিসার সুকান্ত দেব নাথ, উপ-সহকারী প্রকৌশলী (ক্ষুদ্রসেচ) বিএডিএস আড়াইহাজার নারায়নগঞ্জকে ভয়ভীতি দেখাইয়া উক্ত কেন্দ্রে প্রবেশ পূর্বক ভাংচুর করিয়া ১০০টি ব্যালট পেপার, ১টি মার্কিং সীল, ১টি ভোটার তালিকা, ১টি স্টীলের পাত ও ১টি অমুছনীয় কালি ছিনিয়ে নিয়ে যায় ও ১টি ব্যালট বাক্স ভেঙ্গে ফেলে ও কালো কাপড় দিয়ে তৈরী কৃত ১টি বুথ ভেঙ্গে ফেলে।
আমি তাৎক্ষনিক আমার ভোট কেন্দ্রের দায়িত্বরত মোবাইল-২০ এর ইনচার্জ পুলিশ পরির্দশক (নিঃ) জনাব আতাউর রহমান বিপি-৭৬৯৩০৭৭৪১৬ সহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে অবহিত করিলে তিনিসহ পার্শ্ববর্তী মোবাইল ও স্ট্রাইকিং টিমসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সদস্যরা দ্রুত ঘটনাস্থলে আসে।
সরকারী মালামাল, অস্ত্র গুলি ও জানমাল রক্ষার্থে অত্র ৬৪ ও ৬৫নং ভোট কেন্দ্রের দায়িত্বরত প্রিজাইডিং অফিসারদের নির্দেশ ক্রমে ৭২ রাউন্ড ফাঁকা গুলি করে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনা হয়।
পলাতক আসামীদের উল্লেখিত কর্মকান্ডের জন্য ৬৪ এবং ৬৫নং ভোট কেন্দ্রের কর্তব্যরত প্রিজাডিং অফিসারগণ কর্তৃক উক্ত কেন্দ্র দুইটি ভোট গ্রহণ বন্ধ করিয়া দিয়া গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২ (সংশোধিত ২০২৩) এর ৭৮(২) /৮০/৮১ (১) ধারার অপরাধ।