নৌকায় ভোট না দিলে গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানি থাকবে না এমন হুমকি ভোটারদের দিয়েছেন রূপগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ফরিদ ভূঁইয়া ওরফে মাসুম।
গত শনিবার রাতে রূপগঞ্জ উপজেলার মুড়াপাড়া ইউনিয়নের ঋষিপাড়া এলাকায় নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর পক্ষে নির্বাচনী উঠান বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন। ইতোমধ্যে তার বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার সৃষ্টি হয়।
রবিবার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে নারায়ণগঞ্জের ৫টি আসনে অংশ গ্রহনকারী সকল প্রার্থীদের নিয়ে মতবিনিময় সভায় ছাত্রলীগ নেতার এ বক্তব্য নিয়ে আলোচনা হলে জেলা রিটার্নিং অফিসার মাহমুদুল হক অভিযুক্ত ওই ছাত্রলীগ নেতাকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও রূপগঞ্জের ইউএনও আহসান মাহমুদ রাসেল বলেন, অভিযুক্ত ওই ছাত্রলীগ নেতাকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।
জেলা পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল জানান, ওই ছাত্রলীগ নেতাকে ধরতে পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যিনি বলেছিলেন নৌকায় ভোট না দিলে এলাকায় পানি-বিদ্যুৎ-গ্যাস সংযোগ থাকবে না। পুলিশ তাকে খুঁজছে, শীঘ্রই তাকে গ্রেপ্তার করা হবে। তবে তার বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি।
গোলাম মোস্তফা আরও বলেন, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও প্রতিদ্বন্দ্বীতামূলক নির্বাচন আয়োজনের জন্য নির্বাচন কমিশন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তারা সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে। এমন সময় ছাত্রলীগ নেতার বক্তব্যে নির্বাচন নিয়ে সাধারণ মানুষের মনে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাছাড়া তার বক্তব্যের মধ্যে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনও রয়েছে।
এনিয়ে তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব তৈমুর আলম খন্দকার বলেন, সরকারি দলের প্রচারনায় বলা হচ্ছে নৌকায় ভোট না দিলে গ্যাস-পানি-বিদ্যুৎ এর সংযোগ বন্ধ করে দেয়া হবে। এভাবে প্রতিনিয়ত আমাদের ভয় ভীতি দেখানো হচ্ছে।
প্রকাশিত ভিডিওতে মাসুমকে বলতে শোনা যায়, শেখ হাসিনা নৌকার দায়িত্ব রূপগঞ্জে গাজী সাহেবকে দিয়েছে। আপনাদের ভোট গাজী সাহেবকেই নৌকা মার্কায় দিতে হবে। এটা মনে রাইখেন। নয়তো আপনাদের যে পানি আছে, গ্যাস আছে, বিদ্যুৎ আছে এগুলা কিন্তু কিছু থাকবো না। এগুলা কিচ্ছু থাকবো না।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা শেখ ফরিদ ভূঁইয়া মাসুম বলেন, অতীতে অনেকেই রূপগঞ্জের ক্ষমতায় ছিলেন। কিন্তু কেউ এই ঋষিপাড়ার মানুষকে মূল্যায়ন করেননি। গোলাম দস্তগীর গাজী তাঁদের গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানির ব্যবস্থা করেছেন।
তাঁদের মন্দির করে দিয়েছেন। তিনি নির্বাচিত না হলে আবারও ঋষিপাড়ার মানুষ অবহেলিত হবেন। তাঁদের গ্যাসের সমস্যা, পানির সমস্যা সৃষ্টি হবে। বক্তব্যে আমি সে কথাই বলেছি। বিপক্ষের প্রার্থীরা এটাকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করছেন।