একদিকে বন্দরে রাজিব হত্যা মামলার ৩ এজাহারভূক্ত আসামীকে তিন দিনের রিমান্ড শেষে আদালতে প্রেরণ ও অন্যদিকে সন্ত্রাসীদের ছুরিকাঘাতে নিহত রাজিব হত্যাকান্ডের ঘটনার ২ দিন অতিবাহিত হওয়ার পর মরদেহ জানাজা শেষে স্থানীয় কবরস্থানে দাফন সম্পর্ন করেছে। রোববার (৯ জুলাই) দুপুরে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদেরকে ফের আদালতে প্রেরণ করা হয়।
অন্যদিকে বাদ জোহর বন্দরে ২৪নং ওয়ার্ডের কাইতাখালি ঈদগাহ ময়দানে জানাযা শেষে স্থানীয় কবরস্থানে রাজিবের মৃতদে দাফন্ন সম্পর্ন করে। রিমান্ডপ্রাপ্ত আসামীরা হলো বন্দর থানার নবীগঞ্জ কদমতলী এলাকার মৃত চাঁন মিয়ার ছেলে মামলার ১নং এজাহারভূক্ত আসামী কানু মিয়া (৫০) নবীগঞ্জ রুপনগর এলাকার মোস্তফা কামালের ছেলে ৬নং এজাহারভূক্ত আসামী শিমুল (৩১) ও নবীগঞ্জ রেললাইন বেলাল হোসেনের ছেলে ১১নং এজাহারভূক্ত আসামী সৌরভ (১৯)।
এর আগে গত শুক্রবার (৭ জুলাই) দুপুরে মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা গ্রেপ্তারকৃতদের ৭ দিনের পুলিশ রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে বিজ্ঞ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে প্রেরণ করলে বিজ্ঞ আদালতের বিচারক ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে গত বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) সন্ধ্যায় ৬টা ৪০ মিনিটে বন্দর থানার নবীগঞ্জস্থ কামাল উদ্দিনের মোড়স্থ ওয়ালটন শোরুমের সামনে এ হত্যাকান্ডের ঘটনাটি ঘটে।
হত্যাকান্ডের ঘটনার রাতেই বন্দর থানা পুলিশ থানার বিভিন্ন এলাকায় পৃথক অভিযান চালিয়ে উল্লেখিত আসামীদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় । নিহত রাজিব বন্দর থানার ২৪ নং ওয়ার্ডের কাইতাখালি এলাকার তারা মিয়ার ছেলে।
এ ব্যাপারে নিহত রাজিবের স্ত্রী ফাতেমা বেগম বাদী হয়ে শুক্রবার (৭ জুলাই) সকালে ১১ জনের নাম উল্লেখ্য করে আরো ৮/১০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করে বন্দর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে। যার মামলা নং- ৭(৭)২৩ ধারা- ৩০২/৩৪ পেনাল র্কোড -১৮৬০।
হত্যা মামলার আসামীরা হলো বন্দর থানার নবীগঞ্জ কদমতলী এলাকার মৃত চাঁন মিয়ার ছেলে কানু মিয়া (৫০) নবীগঞ্জ রুপনগর এলাকার মহিউদ্দিন ওরফে এমপি ছেলে রাতুল (২৫) নবীগঞ্জ রেললাইন এলাকার রাহুল (২০), নবীগঞ্জ কদমতলী এলাকার ইউসুফ আলী ছেলে সনেট (৩২) একই এলাকার নূর হোসেন মিয়ার ছেলে রানা (৩৯) রুপনগর এলাকার মোস্তফা কামালের ছেলে শিমুল (৩১) নবীগঞ্জ টি-হোসেন রোড এলাকার হাবিবুল্লাহ মিয়ার ছেলে হাসান ওরফে পাকিস্তানী হাসান (৩২) রুপনগর এলাকার আব্দুল বাতেন মিয়ার ছেলে শুভ (২৬) নবীগঞ্জ এলাকার রোমান ড্রাইভারে ছেলে সাব্বির (২০) নবীগঞ্জ উত্তর নোয়াদ্দা এলাকার জামাল মিয়ার ছেলে আমিন ওরফে রঙ্গিলা (২১) ও নবীগঞ্জ রেললাইন বেলাল হোসেনের ছেলে সৌরভ (১৯)।
জানাগেছে, নিহত রাজিবের মা প্রবাসে থাকার কারনে রাজিবের মৃতদেহ দাফন না করে ফ্রিজে রাখে তার স্বজনরা। শনিবার (৯ জুলাই) সকালে নিহত রাজিবের মা দেশে আসে।
এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, কতিপয় বিচারক মিনহাজউদ্দিনগং এর স্বেচ্ছাচারিতা ও দায়িত্ব অবহেলার কারনে রাজিবকে অকালে প্রান দিতে হয়েছে। অটো মালিক কানু মিয়া অটোচুরি নাটক সাজিয়ে কথিত বিচারক মিনহাউদ্দিন গংদের দিয়ে রাজিবকে চোর সাবস্ত করে রায় প্রদান করে।
রায় মানামানির জের ধরে রাজিব সন্ত্রাসীদের ছুরিকাঘাতে নিহত হয়। অথচ কথিত বিচারকরা রয়ে গেছে ধরা ছোঁয়ার বাহিরে। স্থানীয় এলাকাবাসী হত্যাকারিদের পাশাপাশি কথিত বিচারকদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানায়।
উল্লেখ্য সকল আসামীগন গত বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) সন্ধ্যা সোয়া ৬টায় মামলার বাদিনীর স্বামী রাজিবকে বন্দর থানার নবীগঞ্জ নবঙ্কুর মাঠে নিয়ে চোর সাবস্ত করে। বিচারের এক পর্যায়ে রাত পৌনে ৭টায় উল্লেখিত সকল আসামীগন বাদিনী স্বামীকে নবীগঞ্জ সিএনজি স্ট্যান্ড সংলগ্ন অবস্থিত নবঙ্কুর সাংস্কৃতিক ক্লাবের পশ্চিম পাশে নবীগঞ্জ ঘাটগামী রাস্তায় নিয়া ১নং বিবাদী হুকুমে ২নং,৩নং ও ৪নং আসামী হত্যার উদ্দেশ্যে ধারালো ছুরি দিয়ে বাদিনী স্বামী বুকের বাম পাশে, দুই হাতে, ডান দিকের পাজরে গুরুত্বর কাটা জখম করে।
বাকি অন্যান্য আসামীরা আমার স্বামীকে ধরে রাখে। পরবর্তীতে বাদিনী স্বামী গুরুত্বর জখম প্রাপ্ত হয়ে নবঙ্কুর সাংস্কৃতিক ক্লাবে গিয়ে পড়ে যায়। সেখানে উপস্থিত লোকজন বাদিনীর স্বামীকে মুমুর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করে বন্দর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রাজিবকে মৃত ঘোষনা করে।