সিদ্ধিরগঞ্জে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে ময়লা-আবর্জনার বিশাল স্তূপ। সেখান থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। কাপড়ে নাক ঢেকে চলছে পথচারীরা। যেখানে ময়লা ফেলা হচ্ছে তার এক পাশে রয়েছে একটি বিশেষায়িত হাসপাতাল অপর দিকে রয়েছে তৈরী পোশাক সহ অন্যান্য কাপড়ের তৈরী বিভিন্ন পণ্যের বিশাল বানিজ্যিক কেন্দ্র।
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ৩ নং ওয়ার্ড এলাকার সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ডের সামনে পারিজাত এলাকার চিত্র এটা। ময়লা আবর্জনা ফেলার কারনে হাসপাতাল ও বিশাল বানিজ্যিক কেন্দ্রের শত শত মানুষর দুর্ভোগ বেড়ে গেছে।
সরেজমিনে দেখা দেখা গেছে, ঢাকা চট্রগাম মহাড়কের সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ড পারিজাত এলাকায় সওজের পরিত্যক্ত জমিতে প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধা পর্যন্ত মহাসড়ক ঘেষে ফেলা হচ্ছে ময়লা আবর্জনা।
নারায়ণগঞ্জ সিটি কপোরের্শনের ৩ নং ওয়ার্ডে ময়লা ফেলার নির্দিষ্ট ডাম্পিং থাকার পরও দুর দুরান্তের বাসা বাড়ি ও মার্কেট থেকে প্রতিদিন ময়লা আবর্জনা এনে পারিজাত বানিজ্যিক কেন্দ্রে ও প্রো-এ্যাক্টিভ হাসপাতালের সামনে ফেলা হচ্ছে।
এতে করে একদিকে মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে চরমে অন্যদিকে মহাসড়কে ময়লা ফেলার কারনে বেড়েছে দূর্ঘটনার ঝুঁকি।
সূত্র জানায়, সাইনবোর্ড পারিজাত বানিজ্যিক কেন্দ্রের সামনে বর্ষাকালে পানি নিস্কাসনের জন্য রয়েছে সওজের খাল এর পাশ দিয়েই চলে গেছে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়ক। সওজের পরিত্যাক্ত এ জমি দখল করার জন্য অভিনব কায়দায় ময়লা-আবর্জনা ফেলে ভরাট করে ফেলছে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল।
সওজের জমি মাটি দিয়ে ভরা করতে গেলে বাধার মূখে পড়তে পারে এমন ধারনা থেকে অভিনব কৌশল নিচ্ছে দখলদারচক্র। এই চক্রটি সরকারি জমি দখলের জন্য নতুন কৌশলে ময়লা আবজর্না ফেলে তা ভরাট করে ফেলে। সাইনবোর্ড থেকে শিমরাইল মোড় পর্যন্ত একধিক স্থানে একই কায়দায় ময়লা ফেলে দখল করে নিচ্ছে সওজের জমি।
এদিকে রাস্তার পাশে ময়লা ফেলার কারনে দূর্ভোগ বেড়েছে পথচারি থেকে শুরু করে এখানে হাসপাতালে আসা রোগী, রোগদের স্বজন এবং পারিজাত বানিজ্যিক কেন্দ্রের কয়েশ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ির। দুর্গন্ধের কারনে এখান দিয়ে পথচারি নাক চেপে চলাচল করতে হচ্ছে।
অপরদিকে পারিজাতের ব্যবসায়িরা ময়লার দুগন্ধের কারনে টিকেকা দায় হয়ে দাড়িয়েছে। পাশাপাশি ময়লা আবর্জনা ফেলার কারনে বেড়েছে মশার চরম উৎপাত। সন্ধ্যার পর এখানে বসবাস করাই খুব কঠিন।
অটোরিক্সা চালক নূরে আলম বলেন, এখান থেকে প্রতিদিন অসংখ্যবার যাত্রী নিয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ ও ডেমরা এলাকার বিভিন্ন স্থানে চলাচল করতে হচ্ছে। সড়কের পাশের ময়লা-আবর্জনার দুর্গন্ধে যাত্রীরাও অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন। বৃষ্টির সময় কিংবা ময়লা-আবর্জনা অন্যত্র সরানোর সময় প্রচন্ড-দুর্গন্ধ বেরিয়ে আসে।
পারিজাত এলাকার বাসিন্দা এমদাদ হোসেন বলেন, শিমরাইল মোড়ে ফলের দোকানসহ প্রায় এক হাজার অবৈধ দোকানপাটের ময়লা-আবর্জনা উক্ত স্থানেই ফেলা হয়েছে। দূর-দূরান্ত থেকেও ময়লা-আবর্জনা ফেলে এখানে স্তূপ আকারে রেখে পরিবেশ নোংরা করা হয়েছে।
পারিজাত এলাকার আরেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ি আসলাম হোসেন জানান, ব্যবসা কেন্দ্রের সামনে এভাবে ময়লা ফেলার কারনে দুগন্ধে বসে থাকা কষ্ট হয়ে যায়। এছাড়া মশার যন্ত্রনা বেড়ে গেছে কয়েকগুন। ময়লা ভাড়টি অন্য কোন স্থানে সরিয়ে নেয়া দাবী জানান তিনি।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে স্থানীয় একজন বাসিন্দা জানান, ময়লা ফেলে কৌশল সরকারি জমি দখলের পায়তার করছে একটি দখলদার চক্র। এতো জায়গা থাকতে এখানে কেন ময়লা ফেলা হচ্ছে তা কারোর বুজতে বাকী নেই। ময়লা ফেলার কারনে শুধু মানুষের দূর্ভোগ বেড়েছে তাই নয় ডিএনডির পানি নিস্কাসনের পথও বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
গার্মেন্টস কর্মী জাহানারা বেগমের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, প্রতিদিন অফিসে আসা যাওয়া করি এই রাস্তা দিয়ে। সকাল বেলা গাড়ির জন্য অপেক্ষা করতে হয় কিন্তু ময়লার দুর্গন্ধের কারণে দাঁড়িয়ে থাকাটা অনেক কষ্টকর হয়ে যায়। এ থেকে কবে যে আমরা মুক্তি পাবো তা জানা নেই।
প্রো-এ্যাক্টিভ হাসপাতালে আসা রোগী তাবাচ্ছুম আক্তার জানান, হাসপাতালের সামনে এভাবে ময়লা ফেলা হচ্ছে তাকে করে রোগী ও স্বজনদের দূর্ভোগ আরো বেড়েছে। দুগন্ধে টিকে থাকা কষ্ট হয়ে দাঁড়িয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. মোবারক হোসেন জানান, এখানের ময়লা ফেলার বিষয়টি নারায়ণগঞ্জ সিটি কপোরেশন দেখছে। এবিষয়ে তারাই ভালো বলতে পারবেন। ময়লা ফেলার কারনে পরিবেশ দুষনের বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করা হতে তিনি বলেন, এবিষয়ে তাদের কিছু করার নেই।
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা শ্যামল চন্দ্র পাল বলেন, ওই এলাকায় আমাদের সুপারভাইজার আছেন। তাদের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে বিস্তারিত বলতে পারব।