নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

রোববার,

২৪ নভেম্বর ২০২৪

সিদ্ধিরগঞ্জে ধর্ষণ চেষ্টার মামলার স্বাক্ষীদের হুমকি, মারধর ও অপহরণের চেষ্টা

নারায়ণগঞ্জ টাইমস

প্রকাশিত:২০:০০, ২৭ মে ২০২৩

সিদ্ধিরগঞ্জে ধর্ষণ চেষ্টার মামলার স্বাক্ষীদের হুমকি, মারধর ও অপহরণের চেষ্টা

সিদ্ধিরগঞ্জে পোশাক কারখানার নারী শ্রমিককে ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে মারধর ও চাকরিচ্যুৎ করার অভিযোগে দায়ের করা মামলার স্বাক্ষীদের হুমকি ধমকি ও একজনকে অপহরণের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে আসামিদের বিরুদ্ধে।  

 

আদালত থেকে মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য থানায় আসার পর থেকেই অপরাধ আড়াল করতে তারা মারমুখী হয়ে উঠেছেন। এসব ঘটনায় শ্রমিক হৃদয় খান ও সাগরী বাদী হয়ে থানায় পৃথক দুইটি লিখিত অভিযোগ ও লাইন চিফ মুকুল হোসেন জিডি করেছেন।  

 

জানা গেছে, অবৈধ দৈহিক মিলনে রাজি না হওয়ায় মারধর লাঞ্ছিত করার অভিযোগে মাদানীনগর এলাকার আল-আমিন অ্যাটেয়ার্স লিমিটেড কারখানার এজিএম আসাদুজ্জামান আসাদ (৪৫) ও  এডমিন অফিসার নোমান রশিদ লাবুকে (৪০) আসামি করে ৯ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনাল আদালতে মামলা করেন প্রতিষ্ঠানের এক নারী শ্রমিক।

 

আদালত থেকে মামলাটি তদন্তের জন্য থানা পুলিশের কাছে আসার পর থেকেই ঘটনা ধামাচাপা দিতে অসামিরা দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। মামলা প্রত্যাহার ও পুলিশের কাছে স্বাক্ষী না দেওয়ার জন্য বাদী ও স্বাক্ষীদের দিচ্ছেন হুমকি ধমকি। মুখ বন্ধ রাখতে কর্মরত শ্রমিকদের উপর দিয়েছেন চাকরিচ্যুতের হুলিয়া। 

 

সত্যগোপন করতে রাজি না হওয়ায় মারধর করে কারখানা থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগে মামলার দুই নম্বর আসামি নোমান রশিদ লাবুর বিরুদ্ধে গত ২৫ মে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় জিডি করেছেন লাইন চিফ মুকুল হোসেন।

 

তার আগে একই কারণে শ্রমিক হৃদয় খানকে মারধর ও অপহরণ চেষ্টা করা হয় বলে আসাদুজ্জামান ও নোমান রশিদের বিরুদ্ধে ১৭ এপ্রিল থানায় লিখিত অভিযোগ করেন হৃদয় খান। মামলার অন্যমত স্বাক্ষী সাগরী অভিযোগে উল্লেখ করেন, তার দুই মেয়ে হীরা মনি(১৮), দোলা আক্তার (১৬), জা হালিমা (৪২), ভাসর ফজলুল হক (৫০) আল-আমিন গার্মেন্টসে কর্মরত রয়েছেন।

 

তাই তাদের অপকর্মের কথা প্রকাশ না করার জন্য প্রতিনিয়তই বিভিন্ন হুমকি দিচ্ছেন। স্বাক্ষী না দেওয়ার জন্য মালিকপক্ষের পোষা গুন্ডা বাহিনী লেলিয়ে দেওয়া হয়েছে। স্বাক্ষীরা কে কোথায় কার বাড়ীতে থাকেন এসব খোঁজখবর নিচ্ছেন। এতে স্বাক্ষীরা  নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছেন । 

 

অভিযোগের বিষয়ে জানতে কারখানায় গিয়ে এজিএম আসাদুজ্জামান আসাদকে পাওয়া যায়নি। মামলার দুই আসামির অপসারণ দাবিতে ১৫ এপ্রিল শ্রমিকরা কর্মবিরতি পালন করার পর থেকে তিনি কারখানায় আসেননা। তবে নিজেকে নিরপরাধ দাবি করে নোমান রশিদ লাবু বলেন, শ্রকিদের সঙ্গে অন্যায় করেছে এজিএম আসাদুজ্জামান। তার কারণে আমি অপমান অপদস্থ হচ্ছি।  

 

কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মামুন বলেন, মামলাটি কারখানা সংক্রান্ত বিষয় নয়। কোন কর্মকর্তার ব্যক্তিগত অপরাধের দায় মালিক পক্ষ নিবেনা।     


দুইটি অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক দেবাশিশ বলেন, অভিযোগ দুইটি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে। সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

 

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক ইয়াউর রহমান বলেন, যৌন হয়রানী ও মারধর সংক্রান্ত ঘটনায় আদালতে করা একটি মামলার তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছি। তদন্ত চলমান। শেষ হলেই আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।