ফতুল্লায় দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায়ে অপহরণের ২১ ঘন্টা পর অপহরণকারীদের কবল থেকে অপহৃত সিএনজি চালক মোঃ সাইফুল ইসলাম(৪৫) কে উদ্ধার সহ তিন অপহরণকারীকে গ্রেপ্তার করেছে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো ফতুল্লা মডেল থানার নয়ামাটি লামাপাড়ার মৃত ইস্রাফিলের পুত্র সাব্বির(২৬), একই এলাকার মৃত শারজাহান দেওয়ানের পুত্র মনির(৩৪) ও লোকমান(২৮)।
বৃহস্পতিবার রাতে তাদেরকে ফতুল্লা মডেল থানার নয়ামাটি লামাপাড়া এলাকা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ একই সাথে উদ্ধার করা হয় অপহৃত সিএনজি চালক কে।
এ ঘটনায় অপহৃত সিএনজি চালকের স্ত্রী আক্তারা বেগম(৩৫) বাদী হয়ে গ্রেফতারকৃত তিন জনের নাম উল্লেখ্য সহ অজ্ঞাতনামা আরো ৩-৪ জন কে আসামী করে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলায় উল্লেখ্য করা হয়,বাদীর স্বামী সাইফুল ইসলাম একজন সিএনজি চালক।বুধবার(৫ এপ্রিল) বিকেল চারটার দিকে বাদীর স্বামী শাসনগাওস্থ বাসা থেকে সিএনজি চালানোর জন্য বের হয়। রাত দশটার দিকে বাদীর স্বামী সিএনজি চালানো শেষে খানপুর বউ বাজারস্থ গ্যারেজে সিএনজি রেখে শাসনগাওস্থ নিজ বাসায় আসছিলো।
রাত ১০টার দিকে ফতুল্লা থানার চাষাড়া রেল লাইনের নিকট পৌছামাত্র অভিযুক্ত আসামীরা একটি অজ্ঞাতনামা সিএনজিতে তুলে অপহরন করে গ্রেফতারকৃত আসামীর বাড়ীতে নিয়ে আটকে রাখে।
পরবর্তীতে বাদীর স্বামী বাসায় ফিরে না আসায় রাত ২ টার দিকে মোবাইল ফোনে ফোন করলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। রাত তিনটার দিকে বাদী কে তার স্বামীর মোবাইল ফোন থেকে বাদী কে অপহরনকারীরা ফোন করে জানায় তার স্বামী কে তার আটকে রেখেছে।
দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ হিসেবে দাবী করে অন্যথায় তার স্বামী কে হত্যা করা হবে বলে জানানো হয় একই সাথে মোবাইল ফোনে তার স্বামীকে মারধর করার শব্দ ও চিৎকার শোনানো হয়।
বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) সকাল ৮ টার দিকে অপহরণকারীদের মোবাইল ব্যাংকিংয়ের (নগদ) মাধ্যমে ৫ হাজার টাকা পাঠানো হয়। একই সাথে বিষয়টি ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ কে অবগত করা হয়। পরে পুলিশ কৌশল অবলম্বন করে।
রাত আটটার দিকে মুক্তিপনের টাকা নিতে এলে প্রথমে সাব্বির কে গ্রেফতার করে। পরে সাব্বিরের স্বীকারক্তি মোতাবেক তার নিজ বাড়ী থেকে অপহৃত সিএনজি চালক সহ গ্রেফতার করা হয় সহোদর দুই ভাই মনির ও লোকমান কে। এ সময় পালিয়ে যেতে সক্ষম হয় আরো ৩-৪ জন।
গ্রেফতার অভিযানে নেতৃত্বদানকারী ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ফতুল্লা মডেল থানার উপপরিদর্শক সৈয়দ আজিজুল হক জানান, বাদীর অভিযোগ পেয়ে প্রথমেই বিকাশ দোকানটি আমরা খুজে বের করি। পরে সেই দোকানে অপহরনকারীদের কথা মতো টাকা পাঠানো হয়।
একই সাথে সাদা দোকানটি ঘিরে রাখা হয় সাদা পোষাকে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য। রাত আটটার দিকে সাব্বির মোবাইল দোকানে টাকা নিতে এলে তাকে আটক করা হয়।
পরবর্তীতে সাব্বিরের স্বীকারোক্তি মোতাবেক তার নিজ বাড়ীর একটি কক্ষ থেকে অপহৃত সিএনজি চালক কে উদ্ধার সহ গ্রেফতার করা হয় আরো দুই অপহরনকারীকে। এ বিষয়ে অপহৃত সিএনজি চালকের স্ত্রী বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছে বলে তিনি জানান।