রূপগঞ্জে ইফতার পার্টির নামে চাঁদাবাজিতে মেতে উঠেছে সন্ত্রাসীরা। তাদের বেপরোয়া কর্মকান্ডে যাত্রামুড়া টাটকী গ্রামবাসীর মাঝে বিরাজ করছে সন্ত্রাসী আতঙ্ক। ওই গ্রামে পরিবার প্রতি দশ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করলে গ্রামবাসী ও সন্ত্রাসীরা মুখোমুখি হয়ে আছে। এতে সাধারণ গ্রামবাসী আতংকে দিনাতিপাত করছে।
এ চাঁদাবাজিকে কেন্দ্র করে গত রবিবার রাত আটটার দিকে সন্ত্রাসীরা হামলা চালায়। এ সময় প্রতিরোধ করলে সন্ত্রাসীরা ফাঁকা গুলি ছুড়ে ভয়ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করে হুমকি প্রদর্শন করে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী এক নারী সুমাইয়া আক্তার ৯ জনের নাম উল্লেখ করে রূপগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগকারী ও ভুক্তভোগী গ্রামবাসীরা জানান, তারাব হাটিপাড়া এলাকার সুনুরদীর ছেলে রনি (২৭), মতিউরের ছেলে নাহিদ (২৮), নজরুলের ছেলে আল-আমিন (২৫), মোহাম্মদ আলীর ছেলে ইমন (২৩), সুমন (১৯), সুন্দর আলীর ছেলে হোসেন (৩২), সামছুলের ছেলে মাসুম (৩৪), সুলতানবাগ এলাকার আব্দুল হকের ছেলে কাজল (৩০) ও হাটিপাড়ার জাকিরের ছেলে রোমান (২০) গত রবিবার রাত আটটার দিকে টাটকি গ্রামে বসবাসরত প্রত্যেক পরিবারের কাছে দশহাজার টাকা করে চাঁদা দাবি করে।
তখন অভিযোগকারী সুমাইয়া আক্তার স্বামী শাহিন (৩৫) জানতে চায় কিসের চাঁদা। একই প্রশ্ন করেন নূর নবি (৩১)। তখন অভিযুক্ত সন্ত্রাসীরা বলে ইফতারির আয়োজন করা হবে তাই। চাঁদা দিতে অপত্তি জানালে সন্ত্রাসীরা দেশীয় অস্ত্র রামদা, চাইনিজ কুড়াল, ছেন, ছুরি ইত্যাদি পদর্শন করে বলে চাঁদা না দিলে ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিবে। সন্ত্রাসী কাজল আগ্নেয়াস্ত্র বের করে হুমকি দেয় চাঁদা না দিলে তোদের সবাইকে গুলি করে মারব।
এরপরও শাহিন প্রতিবাদ করে বলে এ গ্রামের কেউ চাঁদা দিবেনা বললে সন্ত্রাসী রনি, নাহিদ, আল আমিন ও ইমনসহ আরো কয়েকজন দেশীয় অস্ত্র রাম দা নিয়ে শাহিন, নূর নবীসহ গ্রামবাসীর উপর হামলা চালায়। সন্ত্রাসীদের হামলায় আহত হয় তাদেরই দলের এক সদস্য মাসুম।
একপর্যায়ে গ্রামবাসী ডাক চিৎকার শুরু করলে কাজল আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে দুই রাউন্ড ফাকা গুলি করে। হৈচৈ আর গুলির শব্দ শোনে আরও গ্রামবাসী ছুটে আসতে থাকলে চাঁদাবাজরা বিভিন্ন হুমকি দিয়ে দ্রুত চলে যায়। এর কিছুক্ষণ পর সন্ত্রাসী চক্রের মূলহোতা চাঁদাবাজ মোহাম্মদ আলীর নেতৃত্বে আবারও গ্রামে হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা।
গ্রামবাসীরা জানান, হামলাকারীরা ভয়ংকর সন্ত্রাসী পকৃতির। তাদের বিরুদ্ধে রূপগঞ্জ থানায় বিভিন্ন অপরাধে মামলা রয়েছে। মোহাম্মদ আলী চিহ্নিত পরিবহন চাঁদাবাজ। এসব সন্ত্রাসী চাঁদাবাজদের ভয়ে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে গ্রামবাসী। এসময় দ্রুত এসব ভয়ংকর সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য আইনশৃংখলা বাহিনী র্যাব, পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে দাবি জানান গ্রামবাসী।
এ বিষয়ে অভিযোগ তদন্তকারী কর্মকর্তা রূপগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আতাউর রহমান বলেন, এ ঘটনায় কাউকে ছাড় দেয়া হবেনা। অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।